মউ (উত্তরপ্রদেশ): উত্তরপ্রদেশের নির্বাচনী প্রচারেও বিদ্যাসাগরের মূর্তি ভাঙার জন্য তৃণমূলকে দুষলেন নরেন্দ্র মোদি। গত মঙ্গলবার বিজেপি সভাপতি অমিত শাহের রোড শো-কে কেন্দ্র করে অশান্তির মধ্যে কলকাতার যে বিদ্যাসাগর কলেজে উনবিংশ শতকের এই মণীষীর মূর্তি ভাঙা হয়েছে, সেখানেই তাঁর একটি বিরাট মূর্তি বসানোর প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। তাঁর সরকার বিদ্যাসাগরের দর্শনের প্রতি দায়বদ্ধ বলেও জানান তিনি। বলেন, ওনার মূর্তি ভেঙেছে ‘তৃণমূলি গুন্ডারা’।
তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কেও তীব্র আক্রমণ করেন মোদি। দমদমে এদিন পরে জনসভায় ভাষণ দিতে যাচ্ছেন বটে, কিন্তু পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী তাঁর হেলিকপ্টার নামতে দেবেন কিনা, সে ব্যাপারে তিনি সন্দিহান বলেও জানান। বলেন, পশ্চিম মেদিনীপুর, ঠাকুরনগরের আগের সভার সময়ও তৃণমূলিরা নৈরাজ্য চালিয়েছিল। দমদমে আমার সভা আছে। দেখি দিদি অনুমতি দেন কিনা। ওঁর মনোভাব দেখে মনে হচ্ছে, আমার হেলিকপ্টার নামতে দেবেন না!
মউয়ের জনসভায় তিনি বলেন, বিজেপি সভাপতি অমিত শাহের রোড শোয়ের সময় ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগরের মূর্তি ভেঙেছে তৃণমূলের গুন্ডারা। যারা দোষী, তাদের অবশ্যই কঠোর শাস্তি পাওয়া উচিত। তৃণমূল কর্মীদের যোগ্য জবাব দিতে ওই একই জায়গায় বিদ্যাসাগরের পঞ্চধাতুর একটি মূর্তি বসানো হবে।
পশ্চিমবঙ্গের নির্বাচনী প্রচারপর্বে লাগাতার হিংসার জন্য বহুজন সমাজ পার্টি (বসপা) নেত্রী মায়াবতীর আক্রমণের জবাবেও মোদি জানান, যেভাবে পশ্চিমবঙ্গ সরকার উত্তরপ্রদেশবাসী, বিহারী ও পূর্বাঞ্চলের লোকজনকে নিশানা করছে, বহেনজি তার কড়া দেবেন বলে তিনি ভেবেছিলেন, কিন্তু মায়াবতী বেশি চিন্তিত ক্ষমতা নিয়ে।
সমাজবাদী পার্টি-বহুজন সমাজ পার্টি জোটকেও আক্রমণ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, মোদি-হঠাও স্লোগানে হতাশা তৈরি হয়েছে। উত্তরপ্রদেশে ওদের অঙ্ক ওলটপালট হয়ে গিয়েছে, তাই কুত্সার মাত্রাও বেড়েছে। মহামিলাবটরা চাইছে, কোনওভাবে কেন্দ্রে একটা জগাখিচুড়ি সরকার হোক, যাকে নিজেদের প্রয়োজনমতো ব্ল্যাকমেল করা যাবে।


তবে মন্দিরবাজারের জনসভায় পাল্টা মুখ্যমন্ত্রী জানিয়ে দেন, রাজ্যের বিদ্যাসাগরের মূর্তি তৈরির জন্য বিজেপির অর্থ লাগবে না, অমিত শাহের রোড শোয়ের সময় ভাঙচুর হওয়া ওই মণীষীর প্রতিকৃতি ফের বসানোর যথেষ্ট টাকা আছে। মোদির প্রতিশ্রুতির উল্লেখ করে তিনি বলেন, কেন আমরা বিজেপির টাকা নেব, বাংলার কাছে সম্পদ আছে। মূর্তি ধ্বংস করা বিজেপির স্বভাব বলে অভিযোগ করে ত্রিপুরায়ও তারা এটা করেছে বলে দাবি করেন তিনি। বলেন, বিজেপি পশ্চিমবঙ্গের ২০০ বছরের ঐতিহ্য ধ্বংস করেছে। যারা ওদের সমর্থন করে, সমাজ তাদের মানবে না।