মুম্বই: তাঁকে ভোপাল লোকসভা কেন্দ্রে প্রার্থী হতে না দেওয়ার জন্য পেশ হওয়া পিটিশনকে ‘ছেলেমানুষি’ বললেন প্রজ্ঞা সিংহ ঠাকুর। এর পিছনে ‘রাজনৈতিক এজেন্ডা’ আছে বলে দাবি করেছেন তিনি। ২০০৮ এর মালেগাঁও বিস্ফোরণ মামলায় অভিযুক্ত বিজেপি নেত্রী প্রজ্ঞার ভোপাল থেকে ভোটে লড়া ঠেকাতে আদালতে পিটিশন দিয়েছেন ওই বিস্ফোরণ নিহতের বাবা, জনৈক নিসার সঈদ।
বিজেপি ভোপালে কংগ্রেসের দিগ্বিজয় সিংহের বিরুদ্ধে প্রজ্ঞাকে প্রার্থী ঘোষণা করতেই তিনি আদালতে যান। পিটিশনে তিনি বলেন, মালেগাঁও বিস্ফোরণ মামলার বিচার চলছে, তাই জামিনে মুক্ত প্রজ্ঞাকে ভোটে লড়া থেকে বিরত রেখে মুম্বইয়ে আদালতের বিচার প্রক্রিয়ায় হাজির থাকতে নির্দেশ দেওয়া হোক। প্রজ্ঞা স্বাস্থ্যের কারণে জামিন পেয়েছেন বলে পিটিশনে উল্লেখ করেও বলা হয়, তীব্র গরমের মধ্যে ওনার ভোটে লড়ার মতো শরীরের জোর থাকলে বলতে হয়, আদালতকে বিভ্রান্ত করেছেন উনি। তাছাড়া সুপ্রিম কোর্টে প্রজ্ঞার জামিন বাতিলের দাবিতে একটি পিটিশন বিচারাধীন বলেও জানানো হয়েছে পিটিশনে।
প্রজ্ঞা অবশ্য তাঁর কৌঁসুলির মাধ্যমে ন্যাশনাল ইনভেস্টিগেশন এজেন্সি (এনআইএ) সংক্রান্ত মামলার বিশেষ বিচারককে জানিয়েছেন, আবেদনকারী প্রচারের লোভে এবং রাজনৈতিক এজেন্ডাবাহী অন্য কারণে ভ্রান্ত, ছেলেমানুষি আব্দার জানাতে এই আদালতকে বেছে নিয়েছেন। তিনি শুধুমাত্র আদালতের অমূল্য সময় নষ্ট করতেই চাননি, তার মর্যাদা, সুনামও নষ্ট করতে চেয়েছেন। দৃষ্টান্তমূলক জরিমানার নির্দেশ সহ আবেদনকারীর প্রতি কঠোরতা দেখাতে আদালতকে আবেদন করেছেন স্বাধ্বী।
এদিকে এনআইএ অবশ্য বলেছে, তাদের এ ব্যাপারে কিছু বলার এক্তিয়ার নেই। নির্বাচনে লড়ার বিষয়টি এই আদালতের দেখার আওতায় পড়ে না। এটা স্থির করতে পারে কেবলমাত্র নির্বাচন কমিশন। প্রজ্ঞার জামিন বাতিলের আবেদন সম্পর্কে এনআইএ বলেছে, সুপ্রিম কোর্টে জামিনের বিরুদ্ধে পিটিশন পড়ে রয়েছে।
প্রসঙ্গত, ২০০৮ এর ২৯ সেপ্টেম্বর মহারাষ্ট্রের নাসিকের মালেগাঁওয়ে বোমা বিস্ফোরণে ৬ জন নিহত, শতাধিক মানুষ জখম হন। হিন্দুত্ববাদী একটি গোষ্ঠী ওই নাশকতা ঘটিয়েছে, প্রজ্ঞা ও আরও কয়েকজন তার সদস্য বলে জানিয়ে তাদের গ্রেফতার করে মহারাষ্ট্র সন্ত্রাস দমন স্কোয়াড। পরে এনআইএ প্রজ্ঞাকে ক্লিনচিট দিলেও পুরোপুরি রেহাই পাননি প্রজ্ঞা। মহারাষ্ট্র সংগঠিত অপরাধ দমন আইনে (মকোকো) দায়ের হওয়া অভিযোগ খারিজ হলেও সন্ত্রাস দমনমূলক ইউএপিএ ও ভারতীয় দণ্ডবিধির আওতায় প্রজ্ঞার বিচার বহাল রয়েছে।