সৌমেন চক্রবর্তী, কেশপুর : ঘাটাল লোকসভা কেন্দ্রের কেশপুরের খেতুয়া বুথে সিপিএম পার্টি অফিসে রাতে ছিলেন ৪ জন সিপিএম এজেন্ট। অভিযোগ, রাতভর তাণ্ডব চালিয়ে পার্টি অফিসে তালা লাগিয়ে দেয় তৃণমূল। কেশপুরে তৃণমূলের বিরুদ্ধে রাতভর সন্ত্রাস চালানোর অভিযোগ সিপিএমের। ভোট শুরুর পরেও পার্টি অফিসে আটকে ছিলেন সিপিএমের ৪ পোলিং এজেন্ট। বারবার নির্বাচন কমিশনে জানিয়েও কিছু সুরাহা হয়নি বলে অভিযোগ। সিপিএমের তরফে জানানো হয়েছে, পুলিশকে বারবার জানানোর পর ও থানায় যাওয়ার পর, কিছুক্ষণ আগে তালা খোলা হয়। পরে চার বুথ এজেন্ট রওনা দেন বুথের দিকে। Lok Sabha Election 2024 


এদিন ভোটের শুরু থেকেই কেশপুর থেকে একের পর এক অশান্তির খবর সামনে আসে। কেশপুরে এজেন্টদের ভয় দেখানো হচ্ছে বলে অভিযোগ তোলেন ঘাটালের বিজেপি প্রার্থী হিরণ চট্টোপাধ্যায়। গ্রামে এজেন্টদের বাড়ি থেকে নিয়ে এসে বুথে বসান তিনি। 'তৃণমূলের লোক এজেন্টকে মেরে তাড়িয়ে দিয়েছিল, আপনারা কোথায় ছিলেন', কেশপুর বিধানসভা কেন্দ্রের আনন্দপুর থানা এলাকার কোরাঙ্গাপোতা প্রাথমিক স্কুলের ১১৯ নম্বর বুথে গিয়ে কেন্দ্রীয় বাহিনীকে প্রশ্ন করেন ঘাটালের বিজেপি প্রার্থী। 


পরে কেশপুরেই বিক্ষোভের মুখে পড়েন হিরণ। বাঁশ-লাঠি, ইট নিয়ে ঘাটালের বিজেপি প্রার্থীর গাড়ি আটকান তৃণমূল কর্মীরা। হিরণের গাড়ির সামনে রাস্তায় শুয়ে পড়েন তাঁরা। বুথ দখল করতে গতকাল রাতে খেড়ুয়াবালি গ্রামে ৩ জনের হাত ভেঙে দেওয়া হয়েছে বলে দাবি করেন তৃণমূল কর্মীরা। যদি বুথে তাঁদের পোলিং এজেন্টই বসাতে পারেননি, সন্ত্রাসের অভিযোগ মিথ্যা বলে পাল্টা দাবি করেন হিরণ। 


কেশপুরের রাজনৈতিক মানচিত্র-


পশ্চিম মেদিনীপুরের রাজনীতিতে বলা হয়, কেশপুর বিধানসভা যাঁর, ঘাটাল লোকসভা নির্বাচনেও জয় তাঁরই।  ২০১৪ সালে এই ঘাটাল থেকেই CPI-এর সন্তোষ রাণাকে হারিয়ে প্রথমবার সাংসদ হন দেব। প্রায় ২ লক্ষ ৬১ হাজার ভোটে জয়ের ব্যবধানের মধ্যে প্রায় পঞ্চাশ শতাংশ লিডই ছিল কেশপুর থেকে। ২০১৯ সালে বিজেপির ভারতী ঘোষকে ১ লক্ষ ৭ হাজার ভোটে হারান দেব। তার মধ্যে শুধু কেশপুরেই তাঁর লিড ছিল ৯২ হাজার ভোটের!


এ হেন কেশপুরেই এবার খুনের আশঙ্কা করেছিলেন দেব। তিনি বলেছিলেন, 'বিজেপির যিনি প্রার্থী এবং বিজেপি দল যেভাবে ঘাটাল লোকসভা কেন্দ্রে জেতার জন্য় লেগে পড়ে রেখেছে, মৃত্য়ুর রাজনীতি এখন ওরা শুরু করতে চলেছে ১০ থেকে ২০ তারিখের মধ্য়ে। আমাদের কাছে খবর আছে যে কেশপুরে তারা কোনও একটা ষড়যন্ত্র করে নিজেদের লোককে মেরে তার দোষ আমাদের লোককে দিয়ে এবং একটা অশান্তি সৃষ্টি করে সেটাকে নিয়ে ভোট করানোর চেষ্টা করবে। ওরা এখন বুঝতে পেরেই গেছে যে আর জেতার কোনও রাস্তা নেই।'


আপনার পছন্দের খবর আর আপডেট এখন পাবেন আপনার পছন্দের চ্যাটিং প্ল্যাটফর্ম হোয়াটস অ্যাপেও। যুক্ত হোন ABP Ananda হোয়াটস অ্যাপ চ্যানেলে।