রঞ্জিত সাউ, কলকাতা: রাত পোহালেই রামনবমী। এদিকে চলতি সপ্তাহেই লোকসভা ভোট।  রামনবমী পালন নিয়ে ইতিমধ্য়েই রাজনৈতিক পারদ চড়েছে। অশান্তির আশঙ্কার বার্তা জানিয়েছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (CM Mamata Banerjee)। যদিও এসব মানতে নারাজ বর্ধমান-দুর্গাপুরের বিজেপি প্রার্থী দিলীপ ঘোষ (Dilip Ghosh)। প্রতিদিনের মতোই এদিন প্রাতঃভ্রমণে বেরিয়ে স্পষ্ট বলেছেন, '৫০ হাজারের মিছিল হবে রামনবমীতে, কেউ আটকাতে পারবে না।' তবে শুধুই রামনবমী নয়, ভোটের মুখে, কপ্টার তল্লাশি বিতর্ক-সহ আরও কী কী বিষয়ে তিনি ক্ষুরধার জবাব দিয়েছেন ? দেখুন একনজরে।


রামনবমী 


 দিলীপ ঘোষ বলেন, 'পঞ্চাশ হাজারের মিছিল হবে রামনবমীতে। কেউ আটকাতে পারবে না। এই দেশ রামের দেশ। ৫০০ বছরের চেষ্টায় রাম মন্দির হয়েছে। হিন্দুরা বিজয় উৎসব পালন করবে। আমি আবেদন রাখছি হিন্দু সমাজের কাছে। হাজার হাজার মানুষ রাস্তায় নামুন। দিলীপ ঘোষ সঙ্গে আছে। ত্রিশূল ধরেছি। প্রয়োজনে সব ধরব হিন্দু সমাজের জন্য। কোনও বাপের ব্যাটার হিম্মত নেই হিন্দুস্থানে হিন্দুদের আটকায়। আদালত এবং সংবিধান আমরা তৈরি করেছি দেশ রক্ষার জন্য। তৃণমূল এলে তাদের এই নির্বাচনে সমূলে বিনাশ করুন। সমস্ত গ্রামে শোভাযাত্রা হবে। দিলীপ ঘোষ সামনে দাঁড়াবে। মামদো বাজি নাকি? ৫০০ বছর পর রামমন্দির প্রতিষ্ঠা হয়েছে। আমরা উৎসব করব না? তোমরা রিগিং করে ভোট জিতে বিজয় উৎসব কর। আমরা কেন করব না?' দাবি দিলীপের।


চপার তল্লাশি বিতর্ক


এই প্রসঙ্গে দিলীপ ঘোষ বলেন,'কোনও অজুহাত নয়। এর আগে আমাদের নেতাদের চপার সার্চ হয়েছে। এটা কমিশনের অধিকার। মডেল কোড অফ কন্ডাক্ট অনুযায়ী টাকা অস্ত্র যাতায়াত ঠেকাতে এটা করা হয়। এক কংগ্রেসের রাজ্যপালের বিমান দুর্ঘটনার সময় প্লেন থেকে হাজার হাজার নোট নিচে ছড়িয়ে পড়েছিল। নেতাদের গাড়িতেও তো সার্চ হয়। কলকাতায় নাকা চেকিংয়ের সময় কত টাকা পাওয়া যায়। রাহুল গান্ধীর চপার সার্চ হয়েছে। যাদের নামে টাকা এদিক ওদিক করার অভিযোগ, তাদের তো সার্চ হবেই। কেউ ছাড় পাবে না। ভোট উত্তেজনা কমাতে এটা করা হয়। ওদের সবসময় মনের মধ্যে চোর আছে। দেখলেই ভয় পায়। আইনি পদক্ষেপ? কার কাছে যাবেন? কমিশনের বিরুদ্ধে যাবেন? কান মুলে দেবে। এসব না করে লোকের কাছে যান। কনফিডেন্স একেবারে লো হয়ে গেছে। হারের অজুহাত খুঁজছে।' 


ভয় পাচ্ছেন ?


সাংবাদিকের প্রশ্নের উত্তরে দিলীপ ঘোষ বলেন, 'আমি ত্রিশূল ধরলেও মেসোর বাড়ি। আমি কথা বললেও মেসোর বাড়ি। নির্বাচন কি মেসো জেতাবে? পাবলিক জেতাবে। ভোট পাবলিকের কাছে গিয়ে প্রচার করে। এরা শুধু এর তার বাড়ি যাচ্ছে। যখন আপনারা আমার ইন্টারভিউ ছাপেন তখন আপনাদের টিআরপি বাড়ে। তৃণমূলের অফিসে কেউ আসে না। দিলীপ ঘোষকে নিয়ে গিয়ে ওদের লোক জোগাড় করতে হয়।' 


ফের দুর্ঘটনা,ফের রাজ্যের প্রচুর মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত


বর্ষীয়ান বিজেপি নেতা বলেন,' মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং তার লোকেরা এসব জায়গায় গিয়ে শুধু ছবি তোলেন ও ফায়দা নেওয়ার চেষ্টা করেন। দুর্ভাগ্য আমাদের। দেশে কোথাও কোনও দুর্ঘটনা হলেও দেখা যায় বাংলার লোক মরেছে। বাংলা ছেড়ে লাখ লাখ মানুষ পেটের টানে সারা দেশে ঘুরে বেড়াচ্ছে। সব থেকে রিস্কের কাজ করছে। কাশ্মীর থেকে কন্যাকুমারী সর্বত্র বাঙালি মারা যাচ্ছে। মনিপুরে রেলের ব্রিজ ভাঙার সময় মালদার প্রচুর ছেলে মারা গেছিল। বালাসোর দুর্ঘটনায় এক জিনিস। এরা শুধু ভোট চায়। বাঙালিকে এখানে থাকলে ভোট করাতে হবে। বোমা বন্দুক নিয়ে লড়াই করতে হবে। ক্রিমিনাল হতে হবে। মারামারি করে মরতে হবে। না হলে কাটমানি নিয়ে বেঁচে থাকতে হবে। এই বাংলা কে চায়? তিনি নাকি প্রধানমন্ত্রী হবেন। মুখ্যমন্ত্রী হয়ে বাংলাকে যা করে দিয়েছেন, প্রধানমন্ত্রী হলে কী অবস্থা হবে? হে ভগবান।' 


আরও পড়ুন, তামিলনাড়ুর গ্রামগুলির নামেও রয়েছেন প্রভু রাম : প্রধানমন্ত্রী


উত্তরবঙ্গে ভোটের পরেও বাহিনী রেখে দেওয়ার সিদ্ধান্ত


দিলীপ বলেন,'বিধানসভার ফল প্রকাশের পরেও বাহিনী রেখে দেওয়া হয়েছিল। কারণ পশ্চিমবঙ্গে ভোট হলেই যেন ভূমিকম্প হয়। ক্রিমিনালরা সক্রিয় হয়ে যায়। অস্ত্র টাকা সব লাগিয়ে জেতার চেষ্টা করে। গ্রামে গ্রামে বলে বেড়াচ্ছে সেন্ট্রাল ফোর্স তো চলে যাবে তারপর আমরা থাকব। এমনকি স্টেজ থেকে হুমকি দেওয়া হচ্ছে। তাই মানুষও চায় কেন্দ্রীয় বাহিনী থাকুক। ১০ হাজার কোটি টাকার মানহানী মামলা? নিজেদের ওজন জানেন? পাবলিক এখন এদের কানাকড়ি দাম দেয়না। এটা ঠিক যে হাজার হাজার কোটি টাকা লুঠ করেছেন। কি দরকার আর মামলা করার?'