আলিপুরদুয়ার : লোকসভা ভোটের (Lok Sabha Election 2024) আগে ফের চর্চায় রামনবমী (Ram Navami 2024)। এবার বিস্ফোরক অভিযোগ তুললেন তৃণমূলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee)। আলিপুরদুয়ারের সভা থেকে আশঙ্কা প্রকাশ করে বললেন, ভোটের আগে দাঙ্গা বাঁধানোর চেষ্টা করা হতে পারে। এনিয়ে কড়া সতর্কবার্তাও দিলেন তিনি। যাঁরা দাঙ্গা সৃষ্টি করবেন তাঁদের বিরুদ্ধে কড়া পদক্ষেপের হুঁশিয়ারি দিয়েছেন মমতা।


তৃণমূলনেত্রী বলেন, "আপনাদের কাছে একটা অনুরোধ দাঙ্গা করতে দেবেন না। ১৯ তারিখে প্রথম ভোট কেন রেখেছেন জানেন ? অন্নপূর্ণা পুজো আছে ১৫ তারিখে। আমরা সবাই করি। অন্নপূর্ণা মা তো দাঙ্গা করতে বলেননি। ১৬ তারিখে অষ্টমী। আর রামনবমী আছে ১৭ তারিখে। ভোটের আগে দাঙ্গা বাঁধানোর খেলা। তারপরে রাম রাম করে...আমার রামের প্রতি অশ্রদ্ধা নেই। কিন্তু দাঙ্গা করবেন না। দাঙ্গা করে ভোট করার চেষ্টা করবেন না। দাঙ্গা হলে মনে রাখবেন দাঙ্গাকারীদের বিরুদ্ধে আমরা কঠোরতম ব্যবস্থা নেব। দাঙ্গাকারীদের ছাড়ব না।"


প্রথম দফায় উত্তরবঙ্গের তিনটি আসনে ভোট রয়েছে। ভোট হবে- আলিপুরদুয়ার, কোচবিহার ও জলপাইগুড়িতে। তার আগে উত্তরে চলছে জোরদার প্রচার। তৃণমূল, বিজেপি কেউ কাউকে এক ইঞ্চি জমি ছাড়তে রাজি নয়। একের পর এক সভা করে চলেছেন তৃণমূলনেত্রী। এদিনও আলিপুরদুয়ার, জলপাইগুড়িতে সভা করেন তিনি। আর এদিন তাঁর বক্তব্যে উঠে আসে রামনবমী প্রসঙ্গ। তা নিয়ে তিনি আশঙ্কা প্রকাশ করেন। দাঙ্গা সৃষ্টির চেষ্টা হতে পারে বলে তাঁর আশঙ্কা।


এর আগে ২০২৩ সালের ৩০ মার্চ রামনবমীর ( Ram Navami )  মিছিল ঘিরে অগ্নিগর্ভ হয়ে উঠেছিল হাওড়ার শিবপুর, হুগলির রিষড়া, উত্তর দিনাজপুরের ( North Dinajpur, Dalkhola ) বেশ কিছু এলাকা। এই ঘটনাকে ঘিরে উত্তপ্ত হয়ে উঠেছিল বঙ্গ রাজনীতি। উত্তর দিনাজপুরের ডালখোলা-সহ কয়েকটি এলাকায় হিংসার ঘটনা নিয়ে ওই বছরেরই ২৭ এপ্রিল এনআইএ তদন্তের নির্দেশ দিয়েছিল কলকাতা হাই কোর্ট। রামনবমীর সেই অশান্তির মামলায় ১৬ জনকে গ্রেফতার করেছিল এনআইএ।


হাওড়ার শিবপুর, হুগলির রিষড়া, উত্তর দিনাজপুরের ডালখোলা। রাজ্য়ের তিন জেলার তিনটি পৃথক জায়গায় রামনবমীর মিছিলকে কেন্দ্র করে অশান্তি বাঁধে। এই তিনটি ঘটনারই তদন্তভার জাতীয় তদন্তকারী সংস্থা NIA-র হাতে তুলে দেয় কলকাতা হাইকোর্ট। ঘটনাটি ঘটে ৩০ মার্চ। রামনবমীর দিনই। রামনবমীর মিছিল ঘিরে রণক্ষেত্রের চেহারা নেয় হাওড়ার শিবপুর থানা এলাকার জিটি রোড চত্বর। পুলিশের গাড়ি থেকে বাস, টোটো, অটো, দাঁড়িয়ে থাকা মোটরবাইকে আগুন লাগিয়ে দেওয়া হয়। ওইদিনই  উত্তর দিনাজপুরের ডালখোলাতেও রামনবমীর মিছিল ঘিরে অশান্তি বাধে। থানার সামনে রাখা গাড়ি ও বাইকে ভাঙচুর চালানো হয়। কয়েকটি গাড়িতেও আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়। এর ঠিক ২ দিন পর, ২ এপ্রিল হুগলির রিষড়ায় রাম নবমী কেটে যাওয়ার পরও ফের অশান্তি বাধে। ভাঙচুর, ইটবৃষ্টি, আগুন! বাদ যায়নি কিছুই। দেখা যায়, একদিন নয়, প্রতিটা জায়গাতেই কার্যত ২-৩ দিন ধরে দফায় দফায় অশান্তি হয়। এই ঘটনায় হাইকোর্টের দ্বারস্থ হন শুভেন্দু অধিকারী। ওঠে NIA তদন্তের দাবি। একমাসের মধ্য়েই,  শিবপুর, রিষড়া ও ডালখোলায় অশান্তির ঘটনায়, NIA তদন্তের নির্দেশ দেয়  কলকাতা হাইকোর্ট


আপনার পছন্দের খবর আর আপডেট এখন পাবেন আপনার পছন্দের চ্যাটিং প্ল্যাটফর্ম হোয়াটস অ্যাপেও। যুক্ত হোন ABP Ananda হোয়াটস অ্যাপ চ্যানেলে।