নয়াদিল্লি: প্রচারপর্বে ৪০০ পারের ডাক দিলেও, লক্ষ্যমাত্রা থেকে এখনও দূরে বিজেপি নেতৃত্বাধীন NDA. এমনকি একক ভাবে যে ৩৬০ আসনের লক্ষ্য়মাত্রা সামনে রেখেছিল তারা, তারও ধারেকাছে নেই গেরুয়া শিবির। দুপুর ২টো পর্যন্ত ২৩৯ আসনে এগিয়ে রয়েছে বিজেপি। কংগ্রেস এগিয়ে রয়েছে ৯৮টি আসনে। সবমিলিয়ে  NDA জোট এগিয়ে ২৯৫ আসনে, ২৩০ আসনে এগিয়ে I.N.D.I.A জোট। (Lok Sabha Elections 2024 BJP Result)


এবারের লোকসভা নির্বাচনে গোড়া থেকেই NDA জোটের হয়ে ৪০০ আসন পারের ডাক দিয়ে এসেছে বিজেপি। একক ভাবে দলের জন্য ৩৭০ আসনের লক্ষ্যমাত্রা বেঁধে দেন নরেন্দ্র মোদি, অমিত শাহ। কিন্তু নির্বাচনের ফলাফল যেদিকে এগোচ্ছে, তাতে ৩৭০-এর কাছাকাছি পৌঁছনোর কোনও সম্ভাবনা নেই বলে মনে করছেন রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞরা। কিন্তু কেন এত আগেই থেমে যেতে হচ্ছে বিজেপি-কে, তার সপক্ষে একাধিক যুক্তি উঠে এসেছে। (BJP 370 Target)


রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের একাংশের মতে, গত পাঁচ বছরে দেখানোর মতো কোনও ইস্যু ছিল না বিজেপি-র কাছে। রামমন্দির অনেক পুরনো ইস্যু, সংশোধিত নাগরিকত্ব আইনও। বিজেপি নেতারা ওই দুই ইস্যুকে সামনে রেখে প্রচার চালালেও, মুদ্রাস্ফীতি, বেকারত্ব নিয়ে কোনও জবাব মেলেনি তাঁদের কাছ থেকে। বরং নির্বাচন চলাকালীন সাম্প্রদায়িক রাজনীতির রাস্তায় ফেরেন বিজেপি নেতৃত্ব, যা মানুষ ভাল ভাবে গ্রহণ করেননি। 


আরও পড়ুন: Uttar Pradesh Loksabha Elections Result: 'রামরাজ্যে'ই ধাক্কা, অর্ধেকেরও কমে নেমে এল বিজেপি, মোদি-যোগীর শীতল সম্পর্কই কি দায়ী?


রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞ বিশ্বনাথ চক্রবর্তী বলেন, "নরেন্দ্র মোদি উপরিস্তরে কিছু বৈঠক করেছেন। কিন্তু তৃণমূলস্তরে কি ম্যানেজমেন্ট ছিল তাদের? বিজেপি উপরিস্তর যত সরগরম থেকেছে, বুথস্তরে তাদের সংগঠন ছিল না। নেতারা শুধু নিজেদের জাহির করেছেন। সর্বভারতীয় স্তরে প্রতি চারজনের মধ্যে এক জন প্রার্থী ছিল  যাঁরা ২০১৪ সালের পর তৃণমূল, কংগ্রেস বা অন্য কোনও দল থেকে বেরিয়ে আসা প্রার্থী। বিজেপি-র বিস্তার ঘটাতে গিয়ে নরেন্দ্র মোদি বিরোধী দল ভাঙানোর পন্থা নিয়েছিলেন। এবারের এক চতুর্থাংশ প্রার্থীই অন্য কোনও দল থেকে আসা। বিজেপি-র অভ্যন্তরীণ দ্বন্দ্বই অনেক ক্ষেত্রে বিপর্যয় ডেকে এনেছে।"


২০১৯ সালে বিজেপি একাই ৩০৩ আসনে জয়ী হয়, যা কেন্দ্রে সরকার গঠনের জন্য প্রয়োজনীয় ২৭২ আসনের চেয়ে অনেকটাই বেশি। সবমিলিয়ে সেবার সেবার ৩৫৩ আসনে জয়ী হয় NDA. বিজেপি একাই ৩৭.৩৬ শতাংশ ভোট পায়, NDA-র প্রাপ্তি ছিল ৪৫ শতাংশ।


এবারে উত্তরপ্রদেশ, মহারাষ্ট্রের মতো রাজ্যে আশানুরূপ ফল করতে পারেনি। নির্বাচনের ঠিক আগে ধূমধাম করে অযোধ্য়ায় রামমন্দিরের উদ্বোধন হলেও, মানুষের মন তাতে ভেজেনি বলে মনে করা হচ্ছে। যে কারণে আগের প্রাপ্ত আসনের চেয়ে উত্তরপ্রেদশে অর্ধেকেরও কমে আসনে নেমে এসেছে বিজেপি। ২০১৯ সালে উত্তরপ্রদেশে ৮০-র মধ্যে ৬২ আসনে জয়ী হয়েছিল বিজেপি, মহারাষ্ট্রে ৪৮টি আসনের মধ্যে পেয়েছিল ২৩টি আসন।এই মুহূর্তে উত্তরপ্রদেশে ৩৮টি আসনে এগিয়ে রয়েছে বিজেপি।