নয়াদিল্লি: লোকসভা নির্বাচনের ভোটগ্রহণ শুরু হচ্ছে তিন দিনের মাথায়।  সেই নিয়ে রাজনৈতিক দলগুলি শেষ মুহূর্তের প্রচার চালাচ্ছে। চলছে আক্রমণ, প্রতি আক্রমণের পালাও। আক্রমণ থেকে রেহাই পাচ্ছে না নির্বাচন কমিশনও। কমিশন ক্ষমতাসীন বিজেপি-কে সুবিধা করে দিচ্ছে বলে অভিযোগ। সেই আবহেই এবার প্রাক নির্বাচনী সমীক্ষা সামনে এল, যেখানে কমিশনের উপর আস্থা নেই বলে জানালেন ভোটাররা। (Lok Sabha Elections 2024)


CSDS-লোকনীতি সমীক্ষায় এই মতামত উঠে এসেছে। মাথাপিছু হিসেবে সংখ্যাটা যদিও কম, কিন্তু ১৪০ কোটির দেশে তা নেহাত কম নয়। নির্বাচন কমিশনকে কতটা ভরসা করা যায়, চোখ বন্ধ করে, কিন্তু কিন্তু ভাব রয়েছে, নাকি একেবারেই আস্থা নেই, জানতে চাওয়া হয়েছিল সাধারণ মানুষের কাছে, তাতে যে পরিসংখ্যান হাতে উঠে এসেছে, তাতে কমিশনের প্রতি আস্থা টলতে দেখা গিয়েছে। (CSDS-Lokniti Survey)


গত ২৮ মার্চ থেকে ৮ এপ্রিলের মধ্যে ওই সমীক্ষা চালানো হয়। অন্ধ্রপ্রদেশ, অসম, বিহার, হরিয়ানা, কর্নাটক, কেরল, মধ্যপ্রদেশ, মহারাষ্ট্র, ওড়িশা, পঞ্জাব, রাজস্থান, তামিলনাড়ু, উত্তরপ্রদেশ, পশ্চিমবঙ্গ, দিল্লি, ঝাড়খণ্ড, ছত্তীসগঢ় এবং তেলঙ্গানা-এই ১৯টি রাজ্যের ওই সমীক্ষা চালানো হয়। সমীক্ষার ফলাফল সামনে আসতে দেখা গিয়েছে, ২০১৯ সালে যেখানে প্রতি দ্বিতীয় জন ভোটার নির্বাচন কমিশনকে চোখ বন্ধ করে বিশ্বাস করার কথা জানিয়েছিলেন, গত পাঁচ বছরে সেই বিশ্বাস টলেছে। ৫১ শতাংশ  থেকে কমে ২৮ শতাংশ হয়েছে। বর্তমানে নির্বাচন কমিশনকে চোখ বন্ধ করে ভরসা করেন মাত্র ২৮ শতাংশ ভোটার। 


আরও পড়ুন: Hiran Chatterjee: শুভেন্দুকে দলে রাখতে হাতেপায়ে ধরেন অভিষেক, সঙ্গে ছিলেন প্রশান্তও! দাবি হিরণের


বেশ কিছু ক্ষেত্রে বিশ্বাস করা যায়, কিছু ক্ষেত্রে আবার করা যায় না, কমিশনকে নিয়ে এমন কিন্তু কিন্তু ভাব রয়েছে ৩০ শতাংশ ভোটারের, আগে যা ছিল ২৭ শতাংশ। যাঁরা কমিশনকে একেবারেই বিশ্বাস করেন না, তাঁদের হার ১৪ শতাংশ এই মুহূর্তে। আগে ৭ শতাংশ ভোটারের আস্থা ছিল না কমিশনের। অর্থাৎ গত পাঁচ বছরে কমিশনে আস্থা নেই এমন ভোটারের সংখ্যায় দ্বিগুণ বৃদ্ধি হয়েছে।


শুধু কমিশনের উপর থেকেই মানুষের আস্থা টলেনি, গত পাঁচ বছরে বৈদ্যুতিন ভোটগ্রহণ যন্ত্র, EVM মেশিন নিয়েও বেশ সন্দিহান মানুষজন। লোকনীতির ডিরেক্টর সন্দীপ শাস্ত্রী জানিয়েছেন, কমিশনের উপর আস্থা হারানোর নেপথ্যে EVM-এর ভূমিকাও রয়েছে। শাসক দলের পক্ষে EVM বিকৃত করার সম্ভাবনা কতটা জানতে চাওয়া হলে, প্রবল সম্ভাবনার পক্ষেই বেশি ভোট পড়ে। প্রতি চার জন ভোটার জানান, EVM বিকৃত করার সুযোগ রয়েছে। অল্পসংখ্যক মানুষের মতে, EVM বিকৃত করা যায় না। একটি সর্বভারতীয় সংবাদমাধ্যমের তরফে এ নিয়ে কমিশনের মুখপাত্র বি নারায়ণনের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে, কোনও প্রতিক্রিয়া জানাতে রাজি হননি তিনি।


আইন বদলে নির্বাচন কমিশন নিয়োগ কমিটিতে সরকারি প্রতিনিধির সংখ্যা বাড়ার পর থেকেই কমিশনের নিরপেক্ষতা নিয়ে প্রশ্ন তুলছেন বিরোধীরা।  EVM নিয়েও বেশ কয়েক বছর ধরেই প্রশ্ন উঠছে। EVM বিকৃত করা অত্যন্ত সহজ বলে জানিয়েছেন বিশেষজ্ঞদের একাংশও।  EVM-এর পরিবর্তে ভিভিপ্যাটে ভোটগ্রহণের দাবি তুলছেন অনেকেই। সেই আবহেই এই সমীক্ষা সামনে এল।