কলকাতা: আসন্ন লোকসভা নির্বাচনের (Lok Sabha Elections 2024)  আগে বিরোধী জোটের (Opposition Alliance) প্রথম সম্মিলিত বৈঠক। তার জন্য বিহারের পটনা যাচ্ছেন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee)। পটনা সফরে মমতার সঙ্গী হচ্ছেন তৃণমূলের সর্বভারতীয় সম্পাদক অবিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় (Abhishek Banerjee)। কংগ্রেসের (Congress) তরফে বৈঠকে উপস্থিত থাকছেন রাহুল গাঁধী (Rahul Gandhi)। বিহারের মুখ্য়মন্ত্রী নীতীশ (Nitish Kumar) কুমারের পৌরহিত্যেই বিজেপি বিরোধী শিবিরের এই বৈঠক। 


বিজেপি বিরোধী শিবিরকে একজোট করতে এর আগে নবান্নে এসেছিলেন নীতীশ খোদ। লালুপ্রসাদ যাদবের ছেলে তথা বিহারের উপমুখ্যমন্ত্রী তেজস্বী যাদবও নীতীশের সঙ্গে নবান্নে এসেছিলেন। বিরোধী জোটের কৌশল নিয়ে নবান্নেই বৈঠক হয় তাঁদের মধ্যে। তার পর একসঙ্গে সাংবাদিক বৈঠকও করেন সকলে। সেই সময় মমতাই পটনায় বিরোধী শিবিরের বৈঠকের প্রস্তাব দেন।


কর্নাটক বিধানসভা নির্বাচনের পরাজিত হওয়ার পর এই মুহূর্তে দেশের ১০ রাজ্যে একক ভাবে ক্ষমতায় রয়েছে বিজেপি। জোট সরকারে ক্ষমতায় রয়েছে আরও চার রাজ্যে। তাই ২০২৪-এর লোকসভা নির্বাচনে তৃতীয় বারের জন্য বিজেপি-র ক্ষমতায় আসা আটকাতে মরিয়া চেষ্টা চালাচ্ছে বিরোধী শিবির। তার জন্য কোন কোন কৌশল অবলম্বন করা হবে, সেই নিয়েই পটনায় বিশদ আলোচনা হবে।


আরও পড়ুন: Lok Sabha Elections 2024: সংখ্যালঘু সমর্থন জোগাড়ে উদ্যোগী BJP, লোকসভা নির্বাচনের আগে উত্তরপ্রদেশ থেকে শুরু, মুসলিমরা পাবেন ‘মোদি মিত্র’ শংসাপত্র


২০২১ সালে বাংলায় তৃতীয় বার ক্ষমতায় আসার পর মমতাই প্রথম বিজেপি বিরোধী শিবিরকে একজোট করার বার্তা দেন। সেই সময় মমতার সঙ্গে দিল্লি গিয়েছিলেন অভিষেক এবং বাংলায় তৃণমূলের নির্বাচনী কৌশলের দয়িত্বে থাকা ভোটকুশলী প্রশান্ত কিশোর। সেখানে সনিয়া গাঁধী, রাহুল, লালুপ্রসাদ, শরদ পওয়ার, আনন্দ শর্মাদের সঙ্গে বৈঠক করেন। আলাদা করে বৈঠক হয় তামিলনাড়ুর এমকে স্ট্যালিন, তদানীন্তন মহারাষ্ট্রের মুখ্যমন্ত্রী উদ্ধব ঠাকরে এবং তেলঙ্গানার কেসি আর-এর সঙ্গেও। সম্প্রতি আবার নবান্ন থেকে ঘুরে যান দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরিওয়াল এবং পঞ্জাবের মুখ্যমন্ত্রী ভগবন্ত সিংহ মানও।


বিজেপি-কে রুখতে এবার একের বিরুদ্ধে এক, অর্থাৎ যে যেখানে শক্তিশালী, সেখানে সরাসরি বিজেপি-র সঙ্গে লড়াইয়ের ফর্মুলা মেনে এগোতে চান মমতা। বৃহস্পতিবার পটনায় পৌঁছে লালুপ্রসাদের সঙ্গে দেখা করবেন মমতা-অভিষেক। সেখানে এই প্রস্তাবই দেবেন তাঁরা। 


বিজেপি বিরোধী শিবিরের এই বৈঠকে এই মুহূর্তে নজর গোটা দেশের। কারণ বিরোধীদের একছাতার নীচে আনার ক্ষেত্রেও কম টানাপোড়েন চোখে পড়েনি। কংগ্রেসকে বাদ দিয়ে তৃতীয় বিজেপি বিরোধী জোটের প্রস্তাবও ওঠে একাধিক বার। মমতা, কেজরিওয়াস, কেসি আর বিজেপি বিরোধী জোটের নেতৃত্বে কংগ্রেসকে রাখা নিয়ে আপত্তি তুলেছিলেন সেই সময়। একের পর এক রাজ্যে ভরাডুবির পর কংগ্রেসের যোগ্যতা নিয়ে উঠছিল প্রশ্ন। কিন্তু কর্নাটক নির্বাচনের ফলাফল এবং রাহুলের 'ভারত জোড়ো যাত্রা' কিছুটা হলেও কংগ্রেসের ভাবমূর্তি উদ্ধারের সহায়ক হয়েছে। এর পর নীতীশের তরফে মধ্যস্থতা করা হয়। তাতেই ২০২৪-এর লোকসভা নির্বাচনের আগে প্রথম বার বিরোধীদের কৌশল বৈঠক অনুষ্ঠিত হতে চলেছে পটনায়।