নয়াদিল্লি: দেশের সংসদে নীতি-নির্ধারণের দায়িত্ব পেতে আগ্রহী যাঁরা, তাঁদের সম্পত্তির পরিমাণ দেখে চোখ কপালে উঠেছিল আগেই। নির্বাচনী হলফনামায় নির্বাচন কমিশনের কাছে যে তথ্য জমা দিয়েছিলেন প্রার্থীরা, সেই নিয়ে কম কাটাছেঁড়া হয়নি। মঙ্গলবার লোকসভা নির্বাচনের ফলাফল প্রকাশিত হয়েছে (Lok Sabha Elections Richest Winners)। ধনকুবের প্রার্থীদের সকলেই যদিও জয়ী হননি। যাঁরা বিজয়ী হয়েছেন, তাঁদের মধ্যে সবচেয়ে ধনী কে, কার মাথায় সবচেয়ে বেশি দেনা, অপরাধ মামলায় এগিয়ে কে, দেখে নিন একনজরে। (Lok Sabha Elections 2024 Result)




ধনকুবের সাংসদ



  • তেলুগু দেশম পার্টি এবারের লোকসভা নির্বাচনে একেবারে খবরের শিরোনামে উঠে এসেছে। ম্যাজিক সংখ্যা ছুঁতে না পারা বিজেপি, তৃতীয়বারের জন্য কেন্দ্রে সরকার গড়তে চন্দ্রবাবু নায়ডুর দলের উপরই ভরসা করছে। সেই দলের প্রার্থী চন্দ্রশেখর পেম্মাসানি গুন্টুর থেকে জয়ী হয়ে লোকসভায় প্রবেশ করছেন। তাঁর মোট সম্পত্তির পরিমাণ ৫ হাজার ৭০৫ কোটি টাকা। 

  • প্রথমে ভারত রাষ্ট্র সমিতি, পরে কংগ্রেস এবং সবশেষে ২০২১ সালে বিজেপি-তে যোগ দেন কোন্ডা বিশ্বেশ্বর রেড্ডি। তেলঙ্গনার চেভেল্লা আসন থেকে তাঁকে এবছর প্রার্থী করেছিল বিজেপি। কংগ্রেসের প্রতিদ্বন্দ্বীকে পরাজিত করে জয়ী হয়েছেন বিশ্বেশ্বর। তাঁর মোট সম্পত্তির পরিমাণ ৪ হাজার ৫৬৮ কোটি টাকা। 

  • নির্বাচনের ঠিক আগে, এ বছর মার্চ মাসেই কংগ্রেস ছেড়ে বিজেপি-তে যোগ দেন শিল্পপতি নবীন জিন্দল। আগেও কংগ্রেসের টিকিটে সাংসদ হন তিনি। এবার হরিয়ানার কুরুক্ষেত্র থেকে তাঁকে প্রার্থী করে বিজেপি। কংগ্রেসের অভয় সিংহ চৌটালাকে হারিয়ে জয়ী হয়েছেন নবীন। তাঁর মোট সম্পত্তির পরিমাণ ১ হাজার ২৪১ কোটি টাকা। 




ধারদেনায় এগিয়ে



  • ধনকুবের সাংসদ যেমন রয়েছেন, তেমনই পাহাড়প্রমাণ দেনা রয়েছে ঘাড়ে, এমন নেতাও এবার লোকসভায় প্রবেশ করতে চলেছেন। সেই তালিকায় একেবারে শীর্ষে নাম রয়েছে চন্দ্রশেখর। সবচেয়ে বেশি সম্পত্তির মালিক যেমন তিনি, তেমনই ১ হাজার ৩৮ কোটি টাকার ঋণ রয়েছে তাঁর ঘাড়ে। 

  • তামিলনাড়ুর আরাক্কোনম থেকে DMK-র টিকিটে জয়ী হয়েছেন এস জগৎরক্ষকন। তাঁরা মাথার উপর ৬৪৯ কোটি টাকার দেনা রয়েছে। 

  • একবছরে সবচেয়ে বেশি টাকা আয়ের নিরিখে এগিয়ে বিজেপি-র নবীনই। নির্বাচন কমিশনে যে হিসেব জমা দেন তিনি, সেই অনুযায়ী, ২০২২-'২৩ সালে তাঁর আয় ছিল ৭৪ কোটি ৮৩ লক্ষ ৯৯ হাজার ৭৩১ টাকা।




কম বয়সি সাংসদ



  • এবারে ২৫ অনূর্ধ্ব নেতা-নেত্রীও সংসদে প্রবেশ করছেন। LJP-র টিকিটে বিহারের সমস্তিপুরে জয়ী হয়েছেন ২৫ বছর বয়সি সম্ভবী চৌধরি। দেশের ইতিহাসে সর্বকনিষ্ঠা সাংসদ তিনিই। 

  • উত্তরপ্রদেশের কৌশম্বী থেকে সমাজবাদী পার্টির টিকিটে জয়ী হয়েছেন পুষ্পেন্দ্র সরোজ। তাঁর বয়সও ২৫ বছর পেরোয়নি। তিনিও অন্যতম কনিষ্ঠ সাংসদ। লন্ডনের কুইন মেরি ইউনিভার্সিটি থেকে অ্যাকাউন্টস এবং ম্যানেজমেন্টে স্নাতক পুষ্পেন্দ্র

  • উত্তরপ্রদেশেরই মছলিশহর থেকে এবার প্রিয়া সরোজকে প্রার্থী করে সমাজবাদী পার্টি। তাঁর বয়সও ২৫ বছর অতিক্রম করেনি। তিনি অন্যতম কনিষ্ঠ সাংসদ।




সবচেয়ে প্রবীণ সাংসদ



  • এবারে সবচেয়ে প্রবীণ সদস্য হিসেবে লোকসভায় প্রবেশ করছেন টিআর বালু। DMK-র টিকিটে তামিলনাড়ুর শ্রীপেরুম্বুদুর থেকে বিজয়ী হয়েছেন তিনি।  এই নিয়ে সপ্তম বার লোকসভায় প্রবেশ করছেন তিনি। 


 




অপরাধ মামলায় এগিয়ে



  • অত্যধিক অপরাধ মামলার নিরিখেও এবারে বেশ কয়েক জনের মধ্যে টক্কর রয়েছে। মহারাষ্ট্রের মাধায় ন্যাশনালিস্ট কংগ্রেস পার্টি-শরদ পওয়ারের টিকিটে জয়ী হয়েছেন মোহিত পাটিল ধৈর্যশীল রাজসিংহ। তাঁর বিরুদ্ধে ভারতীয় দণ্ডবিধির ১৫৭টি ধারায় মোট ৩৬টি মামলা  রয়েছে। 

  • উত্তরপ্রদেশের নাগিনায় আজাদ সমাজ পার্টি (কাঁসিরাম)-এর নেতা চন্দ্রশেখর জয়ী হয়েছেন। ভারতীয় দণ্ডবিধির ৮০টি গুরুতর ধারায় তাঁর বিরুদ্ধে ৩৬টি মামলা রয়েছে। দাঙ্গার ঘটনায় জাতীয় নিরাপত্তা আইনে গ্রেফতার হন তিনি।

  • নির্দল প্রার্থী হিসেবে বিহারের পূর্ণিয়ায় জয়ী হয়েছে পাপ্পু যাদব। ভারতীয় দণ্ডবিধির ৪২টি গুরুতর ধারায় মোট ৪০টি মামলা রয়েছে তাঁর নামে। ১৯৯৮ সালে খুনের মামলায় দোষী সাব্যস্ত হন পাপ্পু। ২০১৩ সালে খালাস পান। অপহরণ, বিমানসেবিকাকে হুমকি-সহ আরও অভিযোগ রয়েছে তাঁর বিরুদ্ধে। 


আরও পড়ুন: Leader of Opposition: একদশক পর সম্ভব হল, কংগ্রেসকে লোকসভায় বিরোধী দলনেতা বাছার অধিকার দিলেন মানুষ