ঝিলম করঞ্জাই, ভাস্কর মুখোপাধ্য়ায় ও সোমনাথ মিত্র, হুগলি : সুপ্রিম কোর্টে অনুব্রত মণ্ডলে জামিনের আর্জির শুনানি, জুলাই অবধি পিছিয়ে গিয়েছে অর্থাৎ লোকসভা ভোটের সময়টা কেষ্টকে কাটাতে হবে জেলেই। তবে ভোটের ময়দানে না থাকলেও, নেতাদের কথায় বারবার ঘুরেফিরে আসছে তাঁর নাম। শুক্রবারও বীরভূম থেকে অনুব্রত মণ্ডলের নাম করে আক্রমণ শানিয়েছেন অমিত শাহ। পাল্টা জবাব দিয়েছে তৃণমূলও।
ভোটের ময়দানে তিনি নেই। তবে মুখে মুখে তাঁর উপস্থিতি এখনও জ্বল জ্বল করছে। তিনি তিহাড়ে, কিন্তু খোদ দেশের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীকেও বীরভূমে এসে সেই তাঁরই প্রসঙ্গ তুলতে হচ্ছে। তিনি অনুব্রত মণ্ডল। নিজের দল হোক কিংবা বিরধী, বীরভূমে তাঁকে বাদ দিয়ে আজও কারও বক্তৃতা শেষ হয় না।
ইদানীং মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও এই বীরভূমের মাটিতে দাঁড়িয়েই বলে গিয়েছিলেন, 'আজকে কেষ্টকে জেলে ভরে রেখে দিয়েছে। কিন্তু মানুষের মন থেকে মুছতে পারেনি।' তারপর কখনও তাঁর নামে পুজো হয়েছে। কখনও হয়েছে বিরাট যজ্ঞ ! কিন্তু এখনও তিহাড়েই বাবা-মেয়ে। তবু বীরভূমে যে কোনও সভাতেই উঠছে তাঁর নাম।
পশ্চিমবঙ্গবাসী যখন দিল্লির শাসক ঠিক করতে ভোটের লাইনে দাঁড়াচ্ছেন। তখন অনুব্রত মণ্ডল পশ্চিমবঙ্গ থেকে প্রায় দে়ড় হাজার কিলোমিটার দূরে
দিল্লিরই তিহাড় জেলের সেলে বন্দি। শুক্রবারই তাঁর জামিনের আর্জি প্রায় আড়াই মাসের জন্য় পিছিয়ে দিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট। শুনানি হবে জুলাই মাসে।
অর্থাৎ পঞ্চায়েত ভোটের মতো, লোকসভা ভোটের সময়টাও অনুব্রত মণ্ডলকে জেলেই কাটাতে হবে। তবে ভোটে না থাকলেও, তাঁর কথা উঠে আসছে প্রায় সবারই মুখে।
শুক্রবার অমিত শাহ রাজ্যে ভোটপ্রচারে এসেও বললেন অনুব্রতর কথা। 'অনুব্রত মণ্ডলকে চেনেন তো আপনারা সকলে? চেনেন না চেনেন না? ভয় পাওয়ার কোনও কারণ নেই উনি জেলে আছেন। চেনেন না চেনেন না? উনি এখানে এই সব অবৈধ কারবার চালাতেন। গরু পাচারের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। আজকে তিহাড় জেলের হাওয়া খাচ্ছেন'
তিনি আরও বলেন, ' 'যারা কাটমানি নেন, সিন্ডিকেট চালান এখনও সময় আছে শুধরে যান, আমাদের সরকার এলে কাটমানিখোরদের উল্টো করে ঝুলিয়ে সোজা করে দেওয়া হবে। মমতাদিদি, মোদিজি এত কাজ করেছেন। আপনি বীরভূমের জন্য কী করেছেন? আপনি শুধু অনুব্রত মণ্ডলকে বীরভূম উপহার হিসেবে দেওয়ার কাজ করেছেন। এছাড়া আপনি আর কিছুই করেননি।'
একটা সময়ে ভোটের বাজারে যিনি মুখ খুললেই খবর হত, এখন তাঁকে নিয়ে, তাঁর গড়ে দাঁড়িয়ে, মুখ খুলছেন বিরোধীরা।