কলকাতা: ভালবাসার ঘর ভেঙেছে অনেকদিন। এবার ভোটের ময়দানে, প্রতিপক্ষ হিসেবে মুখোমুখি সৌমিত্র খাঁ এবং সুজাতা মণ্ডল। প্রচারপর্বেই একদা দম্পতির বাগ্‍যুদ্ধে তেতে উঠেছে বিষ্ণুপুর (Bishnupur)।


বাগ্‍যুদ্ধে তেতে উঠেছে বিষ্ণুপুর: ২০১৬ সালের ১ জুলাই, ছাঁদনাতলায় যাঁদের শুভদৃষ্টি হয়েছিল, এখন তাঁদের মুখেই চোখ উপড়ে নেওয়ার কথা। ভালবাসা অতীত, সাত পাকের সাড়ে সাত বছর পর, এবার রাজনীতির ময়দানে মুখোমুখি সৌমিত্র খাঁ ও সুজাতা মণ্ডল। একসময় যাঁরা একসঙ্গে সংসদে আসতেন। এবার তাঁদের সামনে পরস্পরকে হারিয়ে সংসদে পা রাখার চ্য়ালেঞ্জ।

২০২১ সালের বিধানসভা ভোটের আগে যখন দল ভাঙার খেলা চলছে। তখন সেই ভাঙনের আঁচ এসে লাগে সৌমিত্র-সুজাতার সংসারে। স্ত্রী তৃণমূলে যোগ দিয়ে ঘাসফুলের পতাকা হাতে নিতেই, লাইভ সাংবাদিক বৈঠকে, চোখের জল মুছতে মুছতে বিবাহ বিচ্ছেদের কথা ঘোষণা করেছিলেন সৌমিত্র। তারপর কেটে গেছে আরও তিনটে বছর। আরও বেড়েছে দূরত্ব। এবার তাঁরা সম্মুখ সমরে। বিষ্ণুপুরের তৃণমূল প্রার্থী বলেন, “যে পরিমাণ যন্ত্রণা আর অত্যাচারে এবং বেইমানির শিকার হয়েছিলাম, সেই স্বামীর কাছ থেকে আমি তাঁর সম্পর্কে বেশি কথা বলে আমি নিজের মুখকে আর রুচিহীন করতে চাই না। তাই এই ঘরের মেয়েটাকে বিষ্ণুপুরের মানুষ ফেরাবে না। এটা বিশ্বাস। আমার উল্টোদিকের প্রতিপক্ষ কে সেটা আমার কাছে কখনই ম্য়াটার করে না।’’ সৌমিত্র খাঁর কথায়, “লড়াই বলে আমি কিছু মনে করছি না। আমার দুঃখ হচ্ছে একটাই তৃণমূল কংগ্রেস কর্মীদের জন্য। যারা খুব লড়াই করে রাজনীতিটা করে। মানুষ যাতে ভোট দিতে পারে, তার ব্যবস্থা করে দিন। বাদবাকি মানুষ বুঝে নেবে। কে, কোথায়, কোন জায়গায় দাঁড়িয়ে।’’


২০১৯ সালের লোকসভা ভোটের আগে তৃণমূল ছেড়ে বিজেপিতে যোগ দেন সৌমিত্র। আদালতের নিষেধাজ্ঞায় সৌমিত্র নিজের নির্বাচনী কেন্দ্রে ঢুকতে না পারায়, স্বামীর হয়ে তাঁর কেন্দ্রে প্রচার করেছিলেন সুজাতা। ২০১৯ সালে মূলত সুজাতার কাঁধে ভর করেই নির্বাচনী বৈতরণী পেরোন সৌমিত্র। সুজাতার কথায় “২০১৯-এর প্রেক্ষিত একরকম ছিল, আমি তখন ন্যায় নিষ্ঠ স্ত্রীর কর্তৃব্য করেছিলাম। তখন আমার কাছে একটাই ব্য়াপার ছিল যে আমি তখন কোন প্রেক্ষিত কোন দল কিচ্ছু দেখিনি। আমার কাছে মনে হয়েছিল, সিঁথির সিঁদুরের জন্য লড়াই করতে হবে। আর স্বামীকে সম্মানের সঙ্গে বাঁচিয়ে নিজের ঘরে ঢোকাতে হবে। জেতাতে হবে।’’ সৌমিত্র খাঁ বলেন, “নরেন্দ্র মোদিজির সভা, অমিত শাহজির সভা, অমরনাথ শাখা, দিবাকর ঘরামি, নির্মল ধাড়া এবং পার্টির অনেক নেতৃত্বের লড়াই এগুলো কি সব বৃথা? একজনকে নিয়ে জেতা যায়? নাম কখনই রাজনীতিতে ফ্য়াক্টর নয়। আমার সহধর্মিনী ছিল তো সেই হিসেবে প্রচার করেছিল, তার নতুন মাত্রা কী আছে? একজনকে দাঁড় করানো হয়েছিল সামনে।’’


আপনার পছন্দের খবর আর আপডেট এখন পাবেন আপনার পছন্দের চ্যাটিং প্ল্যাটফর্ম হোয়াটস অ্যাপেও। যুক্ত হোন ABP Ananda হোয়াটস অ্যাপ চ্যানেলে।  

আরও পড়ুন: Job Seekers: কবে কাটবে নিয়োগ জট? চতুর্থ বৈঠকেও মিলল না আশার আলো