কমলকৃষ্ণ দে, দুর্গাপুর:  দিলীপ ঘোষ যে দিন বর্ধমান-দুর্গাপুর কেন্দ্রে পা রেখেছেন, রয়েছেন খবরে। কখনও প্রচারের অভিনবত্বে, কখনও তাঁরা মন্তব্য নিয়ে, কখনও বিতর্কে - দিলীপ ঘোষ সবসময় শিরোনামে। খোশ মেজাজে জল সংযোগ করছেন প্রত্যহ। এরই মধ্যে সোমবার তিনি মেজাজ হারালেন এক ব্যক্তির প্রশ্নে। উঠে এল নির্বাচনী বন্ডের প্রসঙ্গ। নির্বাচনী বন্ডে প্রাপ্ত চাঁদার অঙ্কে গোটা দেশের প্রথম স্থানে রয়েছে বিজেপি। তাদের ভাঁড়ারে ঢুকেছে ৬ হাজার ৬০ কোটি টাকা। বন্ড থেকে টাকা পাওয়ার নিরিখে দেশের মধ্য়ে দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে পশ্চিমবঙ্গের ক্ষমতাসীন দল তৃণমূল। ইলেক্টোরাল বন্ডের জন্য ওষুধের দাম বাড়ছে, এই নিয়ে স্থানীয় এক ব্যক্তির প্রশ্নের মুখ পড়তে হল মেদিনীপুরের বিদায়ী সাংসদকে। প্রচারে মোলাকাত হওয়া ওই ব্যক্তি সরাসরি দিলীপকে বলেন,' আপনারা ইলেকট্ররাল বন্ড নিচ্ছেন, তাই দাম বাড়ছে ওষুধের।' চা-চক্রের মাঝে পেনশনভোগী এক প্রবীন ওষুধের মুল্যবৃদ্ধি ও কর্মস্থান নিয়ে প্রশ্ন তোলেন। রীতিমতো কথা-কাটাকাটি বেঁধে যায়। সোমবার বর্ধমান শহরের কালীবাজার এলাকায় চা-চক্রে যোগ দেন দিলীপ ঘোষ। সেখানেই রাস্তা দিয়ে যাওয়ার সময় বর্ধমান শহরেরই শাঁখারীপুকুর এলাকার বাসিন্দা, এক অবসরপ্রাপ্ত সরকারি কর্মচারী বিষ্টু সরকার ক্রমাগত ওষুধের মূল্যবৃদ্ধি নিয়ে প্রশ্ন করতে থাকেন দিলীপ ঘোষকে। প্রশ্ন শুনতেই মেজাজ হারান তিনি। 


বিষ্টু সরকার নামে এক ব্যক্তি বলেন, 'আমার তিন হাজার টাকার মতো ওষুধ লাগে, খবরের কাগজে দেখাচ্ছে আপনারা ইলেক্টোরাল বন্ড  নিচ্ছেন, তার জন্য ওষুধের দাম বাড়ছে,আমার তিন হাজার টাকার জায়গায় ৩৫০০ টাকা লাগছে । দিলীপ ঘোষ তখন বোঝানোর চেষ্টা করেন, ওরা বলছে আর আপনি বিশ্বাস করেন, ওরাও নিয়েছে বন্ড, যারা বলছে। তখন ওই ব্যক্তির জবাব,  সিপিএম-ই তো মামলা করল, ওরা তো টাকা নেয়নি। দিলীপ ঘোষ তখন বলেন, 'ওরাও তো টাকা নিয়েছে। তাহলে মামলা করল কেন? তাহলে কী ফেক দেখাচ্ছে'। বিষ্টু সরকার বলেন, ওরা তো ব্যতিক্রম ! দিলীপ মেজাজ হারিয়ে বলেন,  'ব্যতিক্রম বলবেন না, আপনি কি বলছেন আমি বুঝে গেছি,যারা টাকা খেয়ে হজম করেছে তারাই কমপ্লেন করছে।' বিষ্টুও থামার পাত্র নন, তিনি আবারও বলেন,   ' কমপ্লেন করা নয়, এটা আমার জীবনের অভিজ্ঞতা । দিলীপ ঘোষ  পাল্টা প্রশ্ন করেন, ' ওর সাথে ওষুধের কি সম্পর্ক, মোদিজী জন-ঔষুধী দোকান দিয়েছে, সেখানে ৯০% ডিসকাউন্ট ,সেখান থেকে ওষুধ কিনুন। আপনি খোঁজ রাখুন।' পাল্টা বিষ্টু বাবু বলেন, ' কোথায় ডিসকাউন্ট? আমরা তো কিনতে যাই আমাদের তো ১৫ পার্সেন্ট ডিসকাউন্ট দেয়। ' এইভাবে তর্ক গড়াতেই থাকে। একে একে তর্ক গড়াতে থাকে ওষুধের দাম, ফ্রি রেশন, থেকে কর্মহীনতা পর্যন্ত। শেষ পর্যন্ত তিক্ত ভাবেই শেষ হয় কথোপকথন !


বিষ্টু সরকার বলেন,'আমার মেয়েটা মাস্টার ডিগ্রি করে বসে আছে। এম আর হিসাবে কিছু বেতন পেতো সেটাও বন্ধ হয়ে গেছে', দিলীপের জবাব, 'সব হবে। না খেয়ে কেউ মরছে না দাদা।' বিষ্টু সরকার বলেন, 'ওই ফালতু যুক্তি'  ! এভাবেই বিজেপি প্রার্থীকে নানা প্রশ্নের মুখোমুখি হতে হল সাধারণ ভোটারের। এখন তাঁর যুক্তিতে সকলে কতটা সন্তুষ্ট হন, সেটা জানা যাবে ৪ জুন। 


আরও পড়ুন :


 হু হু করে ঢুকবে জলীয় বাষ্প, বৃষ্টি অনিবার্য, দিনক্ষণ জানিয়ে দিল আবহাওয়া দফতর