রুমা পাল, কলকাতা: মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের প্রচারে ২৪ ঘণ্টার নিষেধাজ্ঞা জারি নির্বাচন কমিশনের। আজ রাত ৮ টা থেকে আগামীকাল রাত ৮ টা পর্যন্ত বহাল থাকবে যে নিষেধাজ্ঞা। পাঁচ পাতার বিবৃতি জারি করে যেমনটা জানিয়েছে কমিশন। তাঁকে সতর্ক করে দিয়ে বলা হয়েছে, তিনি যাতে এমন কোনও মন্তব্য না করেন, যাতে নির্বাচনী প্রক্রিয়ায় কোনও প্রভাব পড়ে বা আইন-শৃঙ্খলার সমস্যা হয়। আদর্শ আচরণবিধি চলাকালীন তাঁর বিভিন্ন মন্তব্য রাজ্যের আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি ঘটাতে পারে বলে জানিয়েছে কমিশন।


সংখ্যালঘু ভোট ভাগ ও কেন্দ্রীয় বাহিনীকে নিয়ে তার মন্তব্য নিয়ে নির্বাচন কমিশন আগে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে নোটিশ দিয়েছিল। কিন্তু তার যে উত্তর মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় দিয়েছেন, তা সন্তোষজনক নয় বলেই জানানো হচ্ছে কমিশনের তরফে। কমিশন বলেছে, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের মন্তব্য নিন্দাজনক। সাত তারিখের সভায় সিআরপিএফ-কে ঘেরাও করা নিয়ে যে মন্তব্য মমতা করেছিলেন, তার নিন্দা করেছে কমিশন। এ ব্যাপারে যে নোটিশের যে জবাব মমতা দিয়েছেন, তাতে কমিশন সন্তুষ্ট নয়।


আদর্শ নির্বাচন আচরণবিধি লঙ্ঘন সংক্রান্ত অভিযোগের নোটিশের যে জবাব মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় দিয়েছেন সে ব্যাপারে কমিশন বলেছে, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় আদর্শ নির্বাচন আচরণবিধি, সেইসঙ্গে ১৯৫১-র জনপ্রতিনিধিত্ব আইনের ১২৩ (৩) ও ৩ এ ধারা এবং ভারতীয় দণ্ডবিধির ১৮৬,১৮৯ ও ৫০৫ ধারা লঙ্ঘন করেছেন। তিনি উস্কানিমূলক মন্তব্য করেছেন, যা আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতির পক্ষে ক্ষতিকারক এবং তা নির্বাচনী প্রক্রিয়া ব্যহত করার সামিল।


আর কমিশনের যে নির্দেশ পেয়েই তীব্র প্রতিক্রিয়া তৃণমূল কংগ্রেসের তরফে, কমিশন বিজেপির শাখা সংগঠন হয়ে গিয়েছে বলে আক্রমণ কুণাল ঘোষের। তৃণমূল কংগ্রেসের অপর নেতা ডেরেক ও ব্রায়েন বলেন, গণতন্ত্রের পক্ষে কালো দিন। উল্টোদিকে, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নির্বাচন কমিশন ও কেন্দ্রীয় বাহিনীকে নিয়ে একাধিক মন্তব্য উস্কানিমূলক, এমনই দাবি তুলে বারবার নির্বাচন কমিশনের দ্বারস্থ হয়েছিল বিজেপি। এদিন কমিশন যে নির্দেশ দিল, তাতে কার্যত তাদের অভিযোগেই সিলমোহর পড়ল।


কিছুদিন আগেই সংখ্যালঘু ভোট-ভাগ নিয়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের মন্তব্যের ভিত্তিতে তাঁকে প্রথম নোটিশ দেয় নির্বাচন কমিশন। যার উত্তরে অবশ্য গর্জে উঠে পাল্টা কমিশনেপর নিরপেক্ষতা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছিলেন তৃণমূল সুপ্রিমো। তিনি সভামঞ্চ থেকে বলেছিলেন, দশটা নোটিশ দিলেও জবাব একই থাকবে। পাল্টা আক্রমণ শানিয়েছিলেন বিজেপির বিরুদ্ধে। অভিযোগ করেছিলেন 'রোজ হিন্দু-মুসলমান করলেও কটা কমপ্লে জমা পড়ে নরেন্দ্র মোদির বিরুদ্ধে।'