নয়াদিল্লি: তারকা সাংসদদের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে বার বার। তৃণমূলের নব নির্বাচিত সাংসদদের এবার আগেবাগেই সতর্ক করে দিলেন তৃণমূলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। জানিয়ে দিলেন, দিল্লি গিয়ে লোকসভায় চুপচাপ বসে থাকলে চলবে না। রাজ্যের প্রাপ্য বকেয়া থেকে সংশোধিত নাগরিকত্ব আইন, জাতীয় নাগরিক পঞ্জি এবং অভিন্ন দেওয়ানি বিধি নিয়ে সরকারের উপর চাপ বাড়াতে হবে বলে বার্তা দিলেন মমতা। (Mamata Banerjee)


শনিবার কালীঘাটে নব নির্বাচিত সাংসদ, নেতা, জেলা সভাপতিদের নিয়ে বৈঠক করেন মমতা। সেই বৈঠক শেষ সংবাদমাধ্যমের মুখোমুখি হন তিনি। সেখানে মমতা বলেন "সাংসদদের বলেছি, আমাদের এই পারফরম্যান্স কিন্তু বসে থাকার জন্য নয়। মোদিকে আর কেউ চাইছেন না, পরিবর্তন চাইছেন সকলে। এত বড় হারের পর অন্য়কে আসন ছেড়ে দেওয়া উচিত ছিল ওঁর। কিন্তু এখন আর ধমকে চমকে, সংখ্য়াগরিষ্ঠতা দেখিয়ে, ১৪৭ জন সাংসদকে তাড়িয়ে যা ইচ্ছে বিল পাস করিয়ে নেওয়া যাবে না। আমাদের সাংসদরা সক্রিয় ভূমিকা পালন করবেন। সংশোধিত নাগরিকত্ব আইন, জাতীয় নাগরিক পঞ্জি, অভিন্ন দেওয়ানি বিধি নিয়ে আলোচনা চাইতে হবে, চাপ সৃষ্টি করতে হবে আইন বাতিল করতে।" (Lok Sabha Elections 2024 Result)


মমতার এই মন্তব্য অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ বলে মনে করা হচ্ছে। কারণ এর আগে, তৃণমূলের টিকিটে জয়ী হয়ে লোকসভায় গেলেও, মিমি চক্রবর্তী, নুসরত জাহানদের বিরুদ্ধে সংসদে নিষ্ক্রিয় থাকার অভিযোগ উঠেছে। দলের কোনও ইস্যুই সংসদে তাঁরা সেভাবে তুলে ধরতে পারেননি বলে অসন্তোষ শোনা গিয়েছে দলের অন্দরেও। এবারে আর নুসরতকে টিকিট দেয়নি জোড়াফুল শিবির। প্রার্থিতালিকা ঘোষণা হওয়ার আগেই সাংসদ মমতার সঙ্গে দেখা করে ইস্তফাপত্র জমা দেন মিমি। 


আরও পড়ুন: Mamata Banerjee: সাংসদ ভাঙানোর চেষ্টায় BJP? শরিকদের সতর্ক করলেন মমতা


মিমি এবং নুসরত পর্ব কাটিয়ে এবারও যদিও লোকসভা নির্বাচনে তারকা প্রার্থীদের তুরুপের তাস করেছে তৃণমূল, তবে এবারে প্রার্থীচয়নের ক্ষেত্রে একটু ভিন্নতা লক্ষ্য করা গিয়েছে। শুধুমাত্র জনপ্রিয়তার দৌলতে নয়, রাজনৈতিক ভাবে সচেতন, রাজনীতিতে থাকতে ইচ্ছুকদের প্রাধান্য দিয়েছেন তৃণমূলনেত্রী, যাঁরা মাঠেঘাটে যথেষ্ট সময়ও দিয়েছেন এখনও পর্যন্ত। তাই লোকসভা দলের রণকৌশল মেনে তাঁদের কেন্দ্রীয় সরকারের বিরুদ্ধে আক্রমণাত্মক হতে হবে বলে বার্তা দিয়েছেন মমতা। এ নিয়ে বিজেপি-র বিমলশঙ্কর নন্দ বলেন, "এনআরসি চালুই হয়নি। সিএএ পাস হয়েছে। দাবি করুন সংসদে। গতবার তৃণমূলের ৬-৭ শতাংশই সংসদে যেতেন, টিকটকে ভিডিও- করতেই ব্যস্থ থাকতেন।"


লোকসভা নির্বাচনে ২৪০ আসন পাওয়া বিজেপি চন্দ্রবাবু নায়ডু এবং নীতীশ কুমারের দলের আসনে ভর করে তৃতীয় বার কেন্দ্রে সরকার গড়তে চলেছে। রবিবার তৃতীয় বার প্রধানমন্ত্রী হিসেবে শপথ নিতে চলেছেন নরেন্দ্র মোদি। বিজেপি তথা NDA বিরোধী I.N.D.I.A জোট, যাতে শামিল রয়েছে তৃণমূলও, তারা যদিও সরকার গঠনের দাবি জানায়নি। বরং বিরোধীর আসনে থেকেই সরকারের বিরোধিতার কথা জানিয়েছে তারা। সঠিক সময়ে সঠিক সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে বলে জানায় কারা। এদিন মমতার মুখেও একই কথা শোনা যায়। তাঁর দাবি, আজ I.N.D.I.A জোট সরকার গঠনের দাবি জানায়নি বলে, আগামী দিনে যে জানাবে না, তেমনটা ভাবা ভুল। সঠিক সময়ের জন্য় অপেক্ষা করা হচ্ছে।