আইজল : প্রথম পদক্ষেপে ৬। আর দ্বিতীয় পদক্ষেপেই ছক্কা ! পালাবদলের পথে মিজোরাম। ক্ষমতাসীন মিজো ন্যাশনাল ফ্রন্টকে (MNF)- ক্ষমতাচ্যুত করে উত্তর-পূর্বের রাজ্যের ক্ষমতা দখল করতে চলেছে জোরাম পিপলস পার্টি (ZPM)। আর যাঁর হাত ধরে বদল, চেনেন সেই লালডুহোমাকে (Lalduhoma) ?


মিজোরামের প্রাক্তন সাংসদ, তথা প্রাক্তন আইপিএস লালডুহোমা নিজে জিতেছেন সেরচিপ আসনে (Serchhip Constituency)। আর মিজোদের স্থানীয় বিভিন্ন ইস্যুকে সামনে তুলে এনে কংগ্রেস, বিজেপি ও ক্ষমতাসীন এমএনএফের (Mizo National Front) বিরুদ্ধে লড়াইয়ে নেমে প্রবলভাবে সফল। তাঁর দলের ক্ষমতায় আসা ও লালডুহোমার মিজোরামের মুখ্যমন্ত্রীর তখ্তে বসা কার্যত সময়ের অপেক্ষা বলেই মনে করছে রাজনৈতিক মহল।


২০১৮ সালে মিজোরামে প্রথমবার নির্বাচনে লড়ে ৬ টি আসনে জিতেছিল জেডপিএম (Zoram People's Movement)। আর এবারে ৪০ আসনের মিজোরাম বিধানসভায় ২৭ আসন গিয়েছে তাঁদের পার্টির ঝুলিতে। ক্ষমতাসীন এমএনএফ নেমে এসেছে ১০ আসনে। কংগ্রেস ১ টি ও বিজেপি ২ টি আসন জিতেছে মিজোরামে। ধর্মনিরপেক্ষতার পক্ষে সওয়াল করা, পিছিয়ে পড়া বিভিন্ন জনজাতির হয়ে কথা বলার, রাজ্যে মদ নিষিদ্ধ করার মতো একাধিক ইস্যুকে সামনে রেখে ভোটের লড়াইয়ে নেমেছিল লালডুহোমার নেতৃত্বাধীন জোরাম পিপলস পার্টি। 


রাজনৈতিকভাবে অভিজ্ঞ ৭৪ বছরের লালডুহোমা জীবন শুরু করেছিলেন আইপিএস অফিসার ( IPS officer) হিসেবে। গোয়ায় ছিল তাঁর শুরুর দিকে পোস্টিং। সেখানে দাপটের সঙ্গে কাজ করার সুবাদেই দেশের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গাঁধীর নয়াদিল্লির অফিসে নিরাপত্তার দায়িত্ব সামলানোর গুরুভার পেয়েছিলেন লালডুহোমা। দক্ষতার সঙ্গে নিজের কাজ করার পাশাপাশি ইন্দিরা গাঁধীর আস্থাভাজন হয়ে ওঠা লালডুহোমা ১৯৮০ সালে কংগ্রেসে যোগ দিয়ে তাঁর রাজনৈতিক জীবনের হাতেখড়ি করেছিলেন।


১৯৮৪ সালে ইতিহাস গড়ে মিজোরাম থেকে কংগ্রেস সাংসদ হিসেবে লোকসভায় গিয়েছিলেন লালডুহোমা। যদিও সাংসদ হওয়ার পরের বছরই কংগ্রেসের সঙ্গে তিক্ততা তৈরি হওয়ায় দল ছেড়ে বেরিয়ে গিয়েছিলেন। যার দু'বছর বাদে ১৯৮৭ সালে জোরাম ন্যাশনালিস্ট পার্টি (Zoram Nationalist Party) তৈরি করেছিলেন লালডুহোমা। ২০১৭ সালে মিজোরামের মোট ছ'টি স্থানীয় দল মিলে গড়ে ওঠে জোরাম পিপলস মুভমেন্ট। যার নেতৃত্বের ভার নেন লালডুহোমা। ২০১৯ সালে যা জাতীয় নির্বাচন কমিশনে নথিভুক্ত হয়। 


সাংসদ হিসেবে সময়কালেও একাধিক বাধার সম্মুখীন হয়েছিলেন লালডুহোমা। দলবিরোধী আইনে (anti-defection law) ভারতের প্রথম সাংসদ হিসেবে নিজের পদ খুইয়েছিলেন তিনি। শুধু সাংসদ থেকেই নয়, মিজোরাম বিধানসভা থেকেও বহিষ্কৃত হয়েছিলেন তিনি। ২০২০ সালে তাঁকে মিজোরাম বিধানসভা থেকে বের করে দিলেও সেরচিপ থেকে উপ-নির্বাচনেও জিতেছিলেন তিনি। এবার ফের একবার বিধানসভা ভোটে জিতলেন। সঙ্গে তাঁর দলের জয়জয়কারে এগিয়ে গেলেন মিজোরামের মুখ্যমন্ত্রী তখ্তের দিকে।


আরও পড়ুন- লোকসভার আগে হিন্দি বলয় থেকে কংগ্রেসকে মুছে দিল বিজেপি ! আরও ৫ বছর মোদি-জমানা কি সময়ের অপেক্ষা ?


আপনার পছন্দের খবর আর আপডেট এখন পাবেন আপনার পছন্দের চ্যাটিং প্ল্যাটফর্ম হোয়াটস অ্যাপেও। যুক্ত হোন ABP Ananda হোয়াটস অ্যাপ চ্যানেলে।