হিন্দোল দে, দক্ষিণ ২৪ পরগনা: এবার বিজয় মিছিল (Victory Rally) ঘিরে তৃণমূলের অন্তর্দ্বন্দ্বে (TMC Infighting) প্রাণহানির অভিযোগ। ছেলেকে বাঁচাতে গিয়ে মৃত্যু মায়ের (Mother Dies Trying To Save Son), অভিযোগ পরিবারের। দক্ষিণ ২৪ পরগনার বিষ্ণুপুরে জয়ের পর তৃণমূলের আবির ছোড়া নিয়ে বচসা। আদি ও নব্য তৃণমূলের মধ্যে সংঘর্ষের অভিযোগ। ছেলেকে বাঁচাতে গেলে ধাক্কা দেওয়া হয় মাকে, প্রাথমিক ভাবে এমনই দাবি পরিবারের। পড়ে গিয়ে মারা যান অলকা রুইদাস। ঘটনায় অভিযুক্ত তৃণমূল কর্মী পঞ্চানন রুইদাস ও তাঁর অনুগামীরা।
কবে থামবে প্রাণহানি?
পঞ্চায়েত ভোটের বিজ্ঞপ্তি জারি হওয়ার পর থেকে নাগাড়ে মারপিট, বোমাবাজি, গোলাগুলি চলার খবর সংবাদমাধ্যমে উঠে এসেছে। হিসেব বলছে, রাজ্যে গত ৩৭ দিনে ৫০ জনের মৃত্যু হয়। এমনকি ভোটগণনা শেষ হওয়ার পরও তাতে লাগাম পরানো যায়নি। কিন্তু এদিন যা ঘটল তাতে অনেকেরই প্রশ্ন, ভোটের রাজনীতির থেকে শতহস্ত দূরত্বে থাকা একজন ছাপোষা গৃহবধূর মৃত্যু কি সত্যি জরুরি ছিল? প্রাথমিক ভাবে জানা গিয়েছে, অলকার দুই ছেলে প্রশান্ত ও শ্রীকান্ত রুইদাস, দু'জনেই তৃণমূল কর্মী। বিষ্ণুপুর থানার অন্তর্গত দক্ষিণ গৌরীপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের ২৮৮ নম্বর বুথ এলাকায় গত কাল বিজয় মিছিল বেরিয়েছিল। সেই মিছিলেই ছিলেন প্রশান্ত ও শ্রীকান্ত। তাঁদের অভিযোগ, মিছিল চলাকালীন এক ব্যক্তিকে লক্ষ্য করে আবির ছোড়েন তাঁরা। তার পর থেকেই গণ্ডগোল শুরু যার জেরে একসময়ে মিছিল থেমে যায়। কিন্তু গণ্ডগোল যে এত সহজে শেষ হওয়ার নয়, সেটা বোধহয় গ্রামবাসীরা আন্দাজ করতে পারেননি। প্রশান্ত ও শ্রীকান্তর সঙ্গে ওই ব্যক্তির ফের বাদানুবাদ শুরু হয়ে যায়। সেই সময়ই পঞ্চানন রুইদাস নামে এক ব্যক্তি কয়েকজনকে নিয়ে সেখানে চলে আসেন ও দুই ভাইকে মারধর শুরু করেন বলে অভিযোগ। ছেলেদের বাঁচাতে যান অলকা। তখনই তাঁকে ধাক্কা মারা হয় বলে দাবি পরিবারের। তিনি রাস্তায় পড়ে যান। এর পরই অলকা অসুস্থ বোধ করতে শুরু করলে তাঁকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। কিন্তু ততক্ষণে যা হওয়ার হয়ে গিয়েছে। চিকিৎসকরা তাঁকে মৃত বলে ঘোষণা করেন।
দুই ভাইয়ের দাবি, ওই এলাকায় তাঁরা নতুন তৃণমূল কর্মী হিসেবেই পরিচিত। আর যাঁরা মারধর করেছেন বলে অভিযোগ, তাঁরা বহু আগে তৃণমূল করতেন বলে দাবি দুই ভাইয়ের। আপাতত অলকার দেহ ময়নাতদন্তের জন্য পাঠানো হয়েছে। তবে শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত কোনও এই ঘটনায় কোনও এফআইআর দায়ের হয়নি। যদিও দুই ভাই-ই সংবাদমাধ্যমের ক্যামেরায় খোলাখুলি অভিযোগ করেছেন। স্থানীয় বিধায়ক দিলীপ মণ্ডল অবশ্য গণ্ডগোলের কথা স্বীকার করে নিলেও আদি-নব্য বিভাজনের কথা মানছেন না। তাঁর ধারণা, পারিবারিক গণ্ডগোল থাকতে পারে। তবে ময়নাতদন্তে কোনও সন্দেহজনক কিছু বেরোলে অবশ্যই খুঁটিয়ে তদন্ত করতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে পুলিশকে, দাবি দিলীপের।
আরও পড়ুন:সপ্তাহান্তে ফের ভোগান্তির আশঙ্কা, শিয়ালদা শাখায় বাতিল একাধিক ট্রেন