নয়াদিল্লি ও কলকাতা: রাজ্যে পুরভোটের আগে  দিল্লিতে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহর সঙ্গে রাজ্যপাল জগদীপ ধনকড়ে বৈঠক।
রাজ্যপাল হওয়ার পর প্রথমবার অমিত শাহর সঙ্গে বৈঠক হল ধনকড়ের। বৈঠকের পর রাজ্যপাল জানিয়েছেন, ‘আধঘণ্টারও বেশি সময় কথা হয়েছে।’
ধনকড় বলেছেন, রাজ্যপাল হিসেবে নিযুক্ত হওয়ার পর প্রথা অনুযায়ী তিনি রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রী ও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠক করেছিলেন। এরপর স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে তিনি দেখা করতে চেয়েছিলেন। এরইভিত্তিতে এই বৈঠক হয়েছে।
তিনি বলেছেন, ‘বাংলার প্রশাসন নিয়ে উদ্বেগের কথা জানিয়েছি।রাজ্যের জটিল পরিস্থিতি নিয়েও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীকে জানিয়েছি।সাত মাসে রাজ্যের পরিস্থিতি সম্পর্কে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীকে জানাতে চেয়েছিলাম। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে রাজ্যের বর্তমান পরিস্থিতির কথা তুলে ধরেছি। ৭ মাস ধরে যা দেখেছি, তাই জানিয়েছি'।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে আলোচনার পর সাংবাদিক বৈঠকে তিনি বলেছেন, ‘কিছু লোকের জন্য দায়িত্ব পালন করতে পারছি না।কয়েকজনের জন্য পুলিশ দায়িত্ব পালন করতে পারছে না।যাদবপুর-কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিস্থিতি জানিয়েছি।’
তিনি বলেছেন, ‘রাজ্যবাসীর মানবাধিকারের সঙ্গে সমঝোতা করা হচ্ছে।’
রাজ্যপাল বিধানসভার বিগত বাজেট অধিবেশনের প্রসঙ্গও উল্লেখ করেন। তিনি বলেন, ‘বিধানসভায় আমার পূর্বসূরির বাজেট বক্তৃতা সরাসরি সম্প্রচার হয়েছিল।আমার ক্ষেত্রে তা হয়নি। এরপর রাজ্যের অর্থমন্ত্রীর বাজেট ভাষণ সম্প্রচার করা হয়। গণতন্ত্রের পক্ষে তা সুখকর নয়।একে দেখাব, ওকে দেখাব না, এটা হওয়া উচিত নয়’।
ধনকড় বলেছেন, ‘রাজ্যে সব নির্বাচনেই অশান্তি হয়।শান্তিপূর্ণ নির্বাচনের জন্য কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেছি।’


তিনি বলেছেন, কমিশন যাতে সরকারের রাবার স্ট্যাম্প না হয় তার পদক্ষেপ করেছি। এর জন্য কমিশনকে ডেকে কথা বলেছি।
তাঁর অভিযোগ, ‘রাজনৈতিক স্বার্থ পূরণে সরকারি টাকার অপব্যবহার হচ্ছে। জনগণের টাকার অপব্যবহার করছে শাসক দল।’

উল্লেখ্য, ধনকড় রাজ্যপাল হয়ে আসার পর বিভিন্ন ইস্যুতে নবান্ন ও রাজভবনের সংঘাত বেঁধেছে। রাজ্যপালের সঙ্গে রাজ্যের শাসক দলের সম্পর্ক প্রথম থেকেই খুব একটা সহজ নয়। আইনশৃঙ্খলা থেকে শুরু করে বিভিন্ন বিষয়ে প্রায় প্রতিনিয়তই রাজ্য সরকারের সমালোচনায় সরব হন রাজ্যপাল। পাল্টা জবাব দেয় তৃণমূলও। পুরভোটের মুখে আইনশৃঙ্খলার অবনতির কথা তুলে তিনি নিজে রাজ্যে ‘অবাধ’ ভোট করাবেন বলে যে দাবি করেছেন, নবান্ন সেটাও ভাল চোখে দেখছে না। এই পরিস্থিতিতে রাজ্যপালের সঙ্গে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর এদিনের বৈঠক অত্যন্ত তাত্পর্য্যপূর্ণ বলেই মনে করছে রাজনৈতিক মহল।

উল্লেখ্য, শাহর কলকাতা কলকাতা সফরের এক সপ্তাহের মধ্যেই এই বৈঠক হল। শাহ বিজেপির একটি সমাবেশে পশ্চিমবঙ্গের আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ে ক্ষোভ ব্যক্ত করেছিলেন।