রানাঘাট: পঞ্চায়েত নির্বাচনের আগে ফের ডিসেম্বরে কথা উঠে এল বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের (Mamata Banerjee)মুখে। নাম না করে বিজেপি-র (BJP) হুঁশিয়ারির কথা বললেন তিনি। ডিসেম্বরে (December Deadline) বাংলায় সাম্প্রদায়িক অশান্তি বাঁধানোর চক্রান্ত চলছে বলে মন্তব্য করলেন। তাই এখন থেকে সাম্প্রদায়িক অশান্তি বাঁধতে পারে, এমন স্পর্শকাতর জায়গাগুলিতে এখন থেকেই কাজ শুরু করতে হবে বলে নির্দেশ দেন তিনি।
রানাঘাটে মমতার মুখে বিজেপি-র ডিসেম্বর ডেডলাইন
নদিয়া (Nadia News) সফরে গিয়ে বৃহস্পতিবার রানাঘাটে (Ranaghat News)প্রশাসনিক সভা করেন মমতা। সেখানেই ডিসেম্বরের কথা বলতে শোনা যায় তাঁকে। এ দিন মমতা বলেন, "এখন থেকে সাম্প্রদায়িক এলাকাগুলিকে দেখে রাখুন। কেউ কেউ ষড়যন্ত্র করছে যে, ডিসেম্বর থেকে ধামাকা, মানে সাম্প্রদায়িক যুদ্ধ লাগাবে। কর্নাটকে ইতিমধ্যেই লাগিয়েছে। এটা বাঁচার পথ নয়। চৈতন্য়দেবের জায়গায় দাঁড়িয়ে বলছি, জীবনটা শান্তির পথ। এটা মাথায় রাখতে হবে।"
এর আগেও নভেম্বর-ডিসেম্বর মাসে বিজেপি রাজ্যে অশান্তি পাকাতে পারে আশঙ্কা প্রকাশ করেন মমতাকে। নবান্নে মন্ত্রিসভার বৈঠকে আশঙ্কার কথা তুলে ধরেন তিনি। মন্ত্রীদের সতর্ক থাকার পরামর্শও দেন। এ দিন রানাঘাটের প্রশাসনিক সভাতেও একই সুর শোনা গেল তাঁর গলায়।
উল্লেখ্য, আসন্ন পঞ্চায়েত নির্বাচনের আগে বঙ্গ বিজেপি-র নেতাদের মুখে একাধিক বার শোনা গিয়েছে ডিসেম্বরের ডেডলাইন। শুভেন্দু অধিকারী, দিলীপ ঘোষ, সুকান্ত মজুমদার, ঘুরিয়ে ফিরিয়ে সকলের গলাতেই শোনা গিয়েছে ডিসেম্বরের হুঁশিয়ারি। তৃণমূল সরকারের পতনের ভবিষ্যদ্বাণী করে দিয়েছেন তাঁরা।
বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীকে বলতে শোনা যায়, "ছ'মাস তৃণমূল কংগ্রেস থাকবে না৷ তার আগেই ডিসেম্বরের মধ্যে ঝাঁপ গুটিয়ে যাবে তৃণমূলের।" সুকান্ত বলেছিলেন, "মুখ্যমন্ত্রীর চিন্তার একটাই কারণ, সেটা হচ্ছে বিজেপি। আমরা মুখ্যমন্ত্রীকে চিন্তাতেই রাখব। চিন্তার কিছু নেই। ডিসেম্বর হোক, জানুয়ারি হোক, ফেব্রুয়ারি হোক, ঠান্ডাও পড়বে, সরকার কাঁপবে।" দিলীর আবার বলেন, ‘‘ভোট হয়ত নেই এখন। তবে ডিসেম্বরের পরে হতেও পারে। বিধানসভার ভোটটা হতে পারে আবার। এই সরকারের কোনও ভরসা নেই। পদ্মপাতায় জলের মতো। এই আছে, এই নেই।"
পঞ্চায়েত নির্বাচনের আগে সাম্প্রদায়িক অশান্তি নিয়ে সতর্ক করলেন মমতা
একের পর এক বিজেপি নেতাদের এমন মন্তব্যেই ডিসেম্বর মাসে অশান্তি বাধতে পারে বলে আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। সেই আশঙ্কার কথা শোনা গেল মমতার গলাতেও।
অন্য দিকে, রানাঘাটে মমতার প্রশাসনিক সভায় ডাক না পাওয়ার অভিযোগে বিজেপি সাংসদ-বিধায়কদের বিক্ষোভ। মমতার সভাস্থলের এক কিলোমিটার দূরে রামনগরে ৩৪ নম্বর জাতীয় সড়কের ওপরেই রানাঘাটের সাংসদ জগন্নাথ সরকার, রানাঘাট উত্তর-পশ্চিমের বিধায়ক পার্থসারথি চট্টোপাধ্যায়-সহ বিজেপির জেলা নেতৃত্বকে আটকে দেয় পুলিশ। সেখানে বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করেন বিজেপির সাংসদ-বিধায়করা। বিজেপির দাবি, সরকারি টাকায় প্রশাসনিক সভা হচ্ছে, রানাঘাট দক্ষিণ সাংগঠনিক জেলার তাদের ৭ জন বিধায়ক ও সাংসদ থাকলেও, তাঁরা ডাক পাননি। তৃণমূলের প্রতিক্রিয়া এখনও মেলেনি।