বিটন চক্রবর্তী, পূর্ব মেদিনীপুর: পঞ্চায়েত ভোটে কার্যত ব্রাত্য নন্দীগ্রাম আন্দোলনের দুই মুখ আবু তাহের ও শেখ সুফিয়ান। সুফিয়ানকে জেলা পরিষদের প্রার্থীপদ দিয়েও প্রত্যাহার করেছে দল। অন্যদিকে, টাকা দিতে পারেনি বলে স্ত্রীকে টিকিট দেওয়া হয়নি বলে গুরুতর অভিযোগ এনেছেন আবু তাহের। সব অভিযোগই অস্বীকার করেছে তৃনমুল নেতৃত্ব। কটাক্ষ করতে ছাড়েনি বিজেপি।
রাজ্যে পালাবদলের অন্যতম আঁতুড়ঘর নন্দীগ্রাম। ২০০৭ সালে নন্দীগ্রাম আন্দোলনের প্রথম সারির নেতা ছিলেন শেখ সুফিয়ান ও আবু তাহের। গত বিধানসভা ভোটে এখান থেকেই লড়াই করেছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্য়ায়। শেখ সুফিয়ান ছিলেন তাঁর নির্বাচনী এজেন্ট।
পূর্ব মেদিনীপুরের সেই নন্দীগ্রামেই দলের অন্দরে প্রার্থী-অসন্তোষ চূড়ান্ত! চাপের মুখে প্রার্থী বদল করতে বাধ্য হয়েছে তৃণমূল! জেলা পরিষদের বিদায়ী সহ সভাধিপতি শেখ সুফিয়ানকে জেলা পরিষদের প্রার্থীপদ দিয়েও প্রত্যাহার করেছে দল।
পূর্ব মেদিনীপুর জেলা পরিষদের বিদায়ী সহ-সভাধিপতি শেখ সুফিয়ানের কথায়, পরবর্তী কালে তাকে উচ্চ কোনও পদে নিয়ে যাওয়া হবে বলে দলের তরফে তাকে আশ্বাস দেওয়া হয়েছে। মন থেকে মেনে না নিলেও মানতে হচ্ছে।
নন্দীগ্রামে ভোট পরবর্তী হিংসা মামলায় অভিযুক্ত ও ফেরার আসামি হিসেবে সিবিআইয়ের খাতায় থাকায় এবার প্রার্থী হতে পারেননি আবু তাহের। সূত্রের খবর, চেষ্টা করেছিলেন স্ত্রীকে গ্রাম পঞ্চায়েতে প্রার্থী করাতে। কিন্তু টিকিট মেলেনি। যা নিয়ে চাঞ্চল্যকর অভিযোগ তুলেছেন তিনি।
নন্দীগ্রাম ১ পঞ্চায়েতের বিদায়ী সহ সভাপতি সমিতি আবু তাহেরের কথায়, দল বলেছিল বলে স্ত্রী নমিনেশনও করেছিল, কিন্তু দুর্ভাগ্যের বিষয় দল শেষ পর্যন্ত টিকিট দিল না। ব্লক সভাপতি টাকার বিনিময়ে যাকে টিকিট দিল তার কোনও গ্রহণযোগ্যতা নেই। টাকা দিতে পারিনি বলে আমার স্ত্রী প্রার্থী হয়নি। দলের অন্দরের বিবাদ নিয়ে তৃণমূলকে খোঁচা দিতে ছাড়েনি বিজেপি।
২০০৮ সালের পঞ্চায়েত নির্বাচনে জিতে নন্দীগ্রাম ১ পঞ্চায়েত সমিতির সহ-সভাপতি হন আবু তাহের। অন্যদিকে জেলা পরিষদের আসনে জিতে পূর্ত কর্মাধ্যক্ষ হন শেখ সুফিয়ান। এরপর ২০১৩ সালে জয় লাভের পর তাহের হন পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি এবং সুফিয়ান জেলা পরিষদের সহ সভাধিপতি। ২০১৮ সালেও জেতেন দু'জনে। আবু তাহের হন পঞ্চায়েত সমিতির সহ সভাপতি, সুফিয়ান থাকেন সহ সভাধিপতি পদেই। এবারের পঞ্চায়েত নির্বাচনে কার্যত ব্রাত্যই রইলেন সেই আবু তাহের ও শেখ সুফিয়ান।