নয়াদিল্লি: আম্বানি-আদানির মতো শিল্পপতিদের সঙ্গে বাড়তি সুবিধা পাইয়ে দেওয়া হয়েছে বলে লাগাতার কেন্দ্রের নরেন্দ্র মোদি সরকারকে আক্রমণ করে আসছেন বিরোধীরা। লোকসভা নির্বাচন চলাকালীন এবার সেই আদানি-আম্বানি যোগ নিয়ে কংগ্রেসকে পাল্টা আক্রমণ প্রধানমন্ত্রী মোদির। সরাসরি নাম না করলেও, রাহুল গাঁধীকে নিশানা করেছেন মোদি। হঠাৎ করে আম্বানি-আদানি নিয়ে কেন চুপ করে গেলেন রাহুল, তাহলে কি গোপন কোনও চুক্তি হয়েছে, প্রশ্ন তুললেন মোদি। যদিও তিন-চার দিন আগেই আদানিকে বাড়তি সুযোগ করে দেওয়া নিয়ে কেন্দ্রকে আক্রমণ করে ভিডিও পোস্ট করেছিলেন রাহুল। (Modi Attacks Rahul)


বুধবার তেলঙ্গানায় নির্বাচনী প্রচারে গিয়েছিলেন মোদি। সেখান থেকেই আম্বানি-আদানি প্রশ্নে রাহুলকে আক্রমণ করেন তিনি। মোদি বলেন, "গত পাঁচ বছর ধরে কংগ্রেসের শাহজাদা একটি বিষয় নিয়েই মালা জপছিলেন। যেদিন রাফাল-দাবি মুখ থুবড়ে পড়ল, সেদিন থেকে নতুন নাম জপছিলেন। পাঁচ শিল্পপতির কথা বার বার বলছিলেন গত পাঁচ বছর ধরে। এর পর আম্বানি-আদানি করে যাচ্ছিলেন। কিন্তু যেদিন নির্বাচন ঘোষণা হল, তার পর থেকে আম্বানি-আদানিকে গালি দেওয়া বন্ধ করে দিয়েছেন। তেলঙ্গানার মাটিতে দাঁড়িয়ে জিজ্ঞেস করতে চাই, আম্বানি-আদানিদের থেকে নির্বাচনে কত টাকা নিয়েছেন, কত বস্তা কালো টাকা হাতে এসেছে, জবাব দিন শাহজাদা। টেম্পোয় চাপিয়ে নোট পৌঁছেছে কি কংগ্রেসের কাছে? কোনও চুক্তি হয়েছে কি? রাতারাতি আম্বানি-আদানিকে গালি দেওয়া বন্ধ করে দিলেন যে! নিশ্চয়ই কিছু একটা ঘটেছে। পাঁচ বছর গালি দেওয়ার পর রাতারাতি বন্ধ হয়ে গেল! নিশ্চয়ই বস্তা বস্তা কালো টাকা পৌঁছে গিয়েছে। জবাব দিতে হবে।" (Ambani-Adani Jibe)



আম্বানি-আদানির মতো শিল্পপতিদের সঙ্গে মোদি সরকারের 'ঘনিষ্ঠতা' নিয়ে বার বার সওয়াল করেছেন রাহুল। সরকারি নিয়ম-কানুনের তোয়াক্কা না করে দুই শিল্পপতিকে সুবিধা পাইয়ে দেওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ তুলেছেন তিনি। তৃণমূলের মহুয়া মৈত্রও সেই নিয়ে লাগাতার কেন্দ্রের বিরুদ্ধে সরব হয়েছেন। এমনকি সংসদে মোদি-আদানি সংযোগ নিয়ে প্রশ্ন তুলেছিলেন বলেই চক্রান্ত করে তাঁর সাংসদ পদ খারিজ করা হয়েছে বলে অভিযোগ করেন মহুয়া। সেই আবহেই এবার আম্বানি-আদানি প্রশ্নে রাহুলকে বিঁধলেন মোদি। 



তবে আম্বানি-আদানিকে নিয়ে রাহুল চুপ করে গিয়েছেন বলে মোদি অভিযোগ করলেও, তিন-চার দিন আগেই একটি ভিডিও পোস্ট করেন রাহুল, যেখানে সরাসরি দেশবাসীর উদ্দেশে তিনি বলেন, "অগ্নিবীর প্রকল্পে দেশের যুবসমাজের ক্ষতি হচ্ছে, আর ফায়দা হচ্ছে আদানির মতো কোটিপতির। একজন ৭৫ বছরের ব্যক্তি নিজের বন্ধুদের সাহায্য করতে ২২ বছরের যুববকদের অবসর নেওয়াচ্ছেন। দেশে দু'ধরনের শহিদ তৈরি করা হচ্ছে, একদিকে সেনার জওয়ান, যাঁরা পেনশন পাবেন, ক্যান্টিনের খাবার পাবেন, কিছু হলে শহিদের সম্মান পাবেন। আর অন্য দিকে রয়েছেন অগ্নিবীর, যাঁদের পেনশনও দেওয়া হবে না, ক্য়ান্টিনের খাবারও পাবেন, আহত হলে বা শহিদ হলে সেই সম্মানও পাবেন না। কিছু দিন পর ছুড়ে ফেলে দেওয়া হবে। চিনের জওয়ানদের সঙ্গে লড়তে যাবেন, তাঁদের চার-পাঁচ বছরের প্রশিক্ষণ। আর আপনারা পাঁচ-ছয় মাসের প্রশিক্ষণে ভর করে লড়বেন। কী ফল হবে বুঝতেই পারছেন।"


তাই এদিন মোদির আক্রমণের জবাব দিয়েছেন কংগ্রেসের প্রিয়ঙ্কা গাঁধী বঢরা। তাঁর কথায়, "আজ উনি বলছেন, রাহুল নাকি আম্বানি-আদানির নাম নিচ্ছেন না! রোজই সত্য তুলে ধরেন রাহুল, রোজ জানাই যে বড় শিল্পপতিদের সঙ্গে ওঁদের যোগসাজশ রয়েছে। শিল্পপতিদের ১৬ লক্ষ কোটি টাকার ঋণ মাফ করেছেন, আর কৃষকরা ঋণ শোধ করতে না পেরে আত্মঘাতী হচ্ছেন। দেশের বিমানবন্দর, কয়লা, বিদ্যুৎ, দেশের সব সম্পদ নিজের পুঁজিপতি বন্ধুদের হাতে তুলে দিয়েছেন।"


উচ্চ মাধ্যমিকের ফল দেখতে রোল নম্বর দিয়ে সার্চ করুন



আরও পড়ুন: AstraZeneca COVID Vaccine: ১০ হাজার ৫০০ কোটি ক্ষতিপূরণ দাবি, বিতর্কের মধ্যেই বাজার থেকে কোভিড টিকা প্রত্যাহার AstraZeneca-র