নয়াদিল্লি: মনোনয়নপত্র জমা দিতে গিয়েও বিস্তর বাধা-বিপত্তির মুখে পড়তে হয়েছিল তাঁকে। শেষ পর্যন্ত যাও বা মনোনয়নপত্র জমা দিতে পেরেছিলেন, শেষ মুহূর্তে তা খারিজ করে দেওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ সামনে এল এবার। অভিযোগ তুলেছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির নকলনবিশি করে জনপ্রিয়তা পাওয়া শ্যাম রঙ্গিলা। লোকসভা নির্বাচনে বারাণসী কেন্দ্র থেকে মোদিকে টেক্কা দিতে চেয়েছিলেন তিনি। বারাণসী কেন্দ্র থেকে যে ৫৫ জন মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছিলেন, তাঁদের মধ্যে ৩৬ জনের মনোনয়নপত্রই বাতিল করে দেওয়া হয়েছে বলে দাবি করেছেন শ্যাম। (Shyam Rangeela)
একদা 'মোদিভক্ত' শ্যাম প্রধানমন্ত্রীর গলা নকল করতে পারেন হুবহু। চোখ বন্ধ করে শুধুমাত্র কথা শুনলে আলাদা করে ফারাক বোঝা যায় না। তবে মোদিস্তুতি নয়, বরং প্রধানমন্ত্রীক বিভিন্ন পদক্ষেপ এবং সরকারি সিদ্ধান্তের সমালোচনার জন্যই পরিচিত শ্যাম, তার জন্য আইনি ঝুট-ঝামেলাতেও পড়তে হয়েছে বিস্তর। এর আগে, আম আদমি পার্টিতে যোগ দিলেও, সম্প্রতি নির্দল প্রার্থী হিসেবে বারাণসী থেকে প্রার্থী হতে মনোনয়নপত্র জমা দিতে যান শ্যাম। (Lok Sabha Elections 2024)
কিন্তু বারাণসীতে মনোনয়নপত্র জমা দিতে গেলেও শ্যামকে বাধার মুখে পড়তে হয়। তিনি জানান, নির্ধারিত সময়ের মধ্যেই মনোনয়নপত্র জমা দিতে পৌঁছে যান তিনি। কিন্তু জেলাশাসকের দফতরে তাঁকে একের পর এক বাধার মুখে পড়তে হয়। বেছে বেছে তাঁর প্রতিই বিরূপ আচরণ করা হয়, মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার ক্ষেত্রে কেউ কোনও রকম ভাবে সাহায্য করতে এগিয়ে আসেননি বলে জানান শ্যাম। সেই সময়ও বিষয়টি নিয়ে সরব হয়েছিলেন তিনি, যার পর তাঁর মনোনয়নপত্র জমা নেওয়া হয়।
আরও পড়ুন: J P Nadda: 'মোদির নেতৃত্বে মজবুত সরকার, মমতা চান দুর্বল সরকার', কটাক্ষ জেপি নাড্ডার
কিন্তু এবার শ্যামের মনোনয়নপত্র খারিজ করে দেওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ সামনে এল। শ্যাম বলেন, "আজ জেলাশাসক জানালেন, আমার নথিপত্রে নাকি কিছু খুঁত রয়েছে এবং আমি শপথ নিইনি। আমার সঙ্গে আইনজীবীদের ঢুকতে দেওয়া হয়নি। একা ডেকে জানানো হল। আমার বন্ধুকে মারধর করা হয়েছে। মোদিজি অভিনয় করতে পারেন, কাঁদতে পারেন, কিন্তু আমি এখানে কাঁদতে চাই না।"
শ্যাম জানিয়েছেন, একদিন আগেই ২৭টি মনোনয়নপত্র জমা পড়ে। আর আজ ৩২টি মনোনয়নপত্র বাতিল করা হয়েছে। নির্বাচন কমিশনকে দেখে তাঁর হাসি পাচ্ছে বলেও জানান শ্যাম। কমিশনের উদ্দেশে শ্যাম বলেন, "হাসতে ইচ্ছে করছে। নির্বাচন কমিশন, আমার হাসা উচিত, না কি কাঁদা?" যদিও বারাণসীর জেলাশাসক এস রাজালিঙ্গম জানান, শ্যামের মনোনয়নপত্রের স্ক্রুটিনি করতে গিয়ে কিছু খামতি চোখে পড়েছে। তাই সেটি বাতিল করা হয়েছে।
মোদির বিরুদ্ধে বারাণসী থেকে লড়াইয়ের সিদ্ধান্ত নিয়ে এর আগে শ্যাম জানিয়েছিলেন, একসময় তিনিও মোদির 'অন্ধভক্ত' ছিলেন। ২০১৬-'১৭ সাল পর্যন্তও মোদির অনুগামী ছিলেন। কিন্তু তার পর বাস্তব পরিস্থিতি বুঝতে পারেন। তাঁর উপরই একাধিক বিধি-নিষেধ নেমে আসে। নিজের পছন্দের কাজ করতে গিয়েও বাধার মুখে পড়তে হয়। শ্যাম জানিয়েছেন, টেলিভিশন থেকে বেশ কিছু কাজের প্রস্তাব পেয়েছিলেন তিনি। ডাক পেয়ে সেখানে পৌঁছেও যান। কিন্তু গিয়ে দেখেন, কোনও উপযুক্ত কারণ ছাড়াই তাঁকে সরিয়ে দেওয়া হচ্ছে।
শ্যামের কথায়, "এমনটা বার বার ঘটার পর বুঝতে পারি, রাজনীতিতেও কমেডি রয়েছে। লোকজন যখন রাজনীতির নামে কমেডি করছেন, তাহলে আমিও কমেডির মাধ্যমে রাজনীতি করব।" এর আগেও রাজনীতিতে একবার ভাগ্য পরীক্ষা করতে গিয়েছিলেন। ২০২২ সালে আম আদমি পার্টিতে যোগ দেন। কিন্তু সেই যাত্রা সুখকর হয়নি। এবার নির্দল হিসেবে বারাণসীতে গিয়েছিলেন। সেখানে মনোনয়নপত্র খারিজ হয়ে গেল তাঁর।