কলকাতা: বাংলার বিকাশ ছেড়ে খেলায় চিন্তা দিদির। পশ্চিমবঙ্গে নির্বাচনী প্রচারে এসে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে একহাত নিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। এদিন পুরুলিয়ার ভাঙড়ায় সভায় দাঁড়িয়ে একের পর এক ইস্যুতে মুখ্যমন্ত্রীকে তোপ দাগেন তিনি। ‘নির্বাচনের পর তৃণমূল শুধু হাতে গোনা থেকে যাবে। দিদি বলছে খেলা হবে, বিজেপি বলে চাকরি হবে। দিদি বলছে খেলা হবে, বিজেপি বলে বিকাশ হবে। দিদি বলছে খেলা হবে, বিজেপি বলে শিক্ষা হবে। বিজেপি বলে মহিলাদের উত্থান হবে,  বিজেপি বলে যুবশক্তির বিকাশ হবে। বিজেপি বলে প্রত্যেক ঘরে কল হবে, মিলবে পানীয় জল। বিজেপি বলে হাসপাতাল হবে। কটাক্ষের সুরে তিনি বলেন, খেলা শেষ হবে, বিকাশ আরম্ভ হবে।


মোদির কথায়, তৃণমূল সরকার নিজের খেলাতেই মত্ত। পুরুলিয়ায় জলসঙ্কট ভরা জীবন দিয়েছে তৃণমূল সরকার। শুধু ভেদাভেদের রাজনীতি তৃণমূলের। ৮ বছর পরেও পুরুলিয়ায় জল প্রকল্প হয়নি। এর জবাব কে দেবে দিদি ? পুরুলিয়ার মানুষ জবাব চায়। তিনি বলেন, কাজের হিসেব দিন দিদি। বছরের পর বছর ধরে একটি সেতুও তৈরি করতে পারেনি তৃণমূল। এখন বলছে উন্নয়নের কথা। বাংলা বিজেপি ক্ষমতায় এসে আগে এই সমস্যার সমাধান করবে। বাংলায় ডবল ইঞ্জিন সরকার। দিল্লির ইঞ্জিন ও বাংলার ইঞ্জিন সরকার এলে পুরুলিয়ায় বিকাশ হবে।


আরও পড়ুন: PM Modi Purulia Rally LIVE: ‘২ মে দিদি যাচ্ছে, আসল পরিবর্তন আসছে’, জনসভায় মোদি


মোদির অভিযোগ, পুরুলিয়ায় পর্যটনের উন্নতিতে কোনও কাজ হয়নি। যে রাজ্যে বিজেপি সরকার ক্ষমতায় সেখানে জল সঙ্কট কমেছে।বাংলার প্রতিটি প্রান্তকে রেলের সঙ্গে যুক্ত করাই লক্ষ্য। তিনি জানিয়েছেন, পূর্ব ভারতের জন্য ৫০০০০ কোটি প্রকল্পে মঞ্জুরি। ফ্রেট করিডোর সেকশনের কাজ শুরু হয়ে গেছে। ডানকুনি পর্যন্ত ফ্রেট করিডোরের কাজ শুরু হয়ে যাবে। পুরুলিয়াকেও করিডোরের সঙ্গে যুক্ত করা হবে। কেন্দ্রীয় বাজেটে বাংলার হাইওয়ের উন্নতির জন্য টাকা বরাদ্দ। বিজেপি ক্ষমতায় এলে আর মানুষকে বাংলা ছেড়ে পালাতে হবে না। কর্মসংস্থান হবে, আদিবাসী, পিছিয়ে পড়া যুবকদের চাকরি। ছৌ শিল্পী, হস্তশিল্পীদের সুবিধা প্রদান করা হবে।


পুরুলিয়া ও জঙ্গলমহলের প্রতি অন্যায় করা হয়েছে বলে অভিযোগ প্রধানমন্ত্রীর। তাঁর কথায়, দিল্লিতে থেকেও জঙ্গলমহলের সমস্যার কথা শুনতে পাই। তোষণের রাজনীতির জন্য যুবকদের অধিকার ছিনিয়ে নেওয়া হয়। মানুষের সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা করা হয়েছে। দলিত, আদিবাসী, পিছিয়ে পড়া মানুষদের প্রতি মমতা থাকলে এমন হত না। এখানে দিদির নির্মম সরকার মাওবাদীদের প্রাধান্য দেওয়া দিচ্ছে। গরিবের টাকা লুঠ করে তৃণমূল সরকার।  বাংলায় সিন্ডিকেট রাজ বন্ধ হবে, কাটমানি বন্ধ হবে। বাংলায় তোলাবাজিদের পরাজয় হবে।


মোদি বলেন, সবধরণের খেলা খেলুন, কিন্তু বাংলার মানুষ কিছু ভুলে যায় না। দেশের সেনাদের বিরুদ্ধেও কথা বলেছেন। পুলওয়ামা হামলার পর কার সঙ্গে মমতা ছিলেন, সবাই জানেন। বাটলা হাউস এনকাউন্টারে জঙ্গির গুলিতে মৃত্যু হয় জওয়ানের। তখন এনকাউন্টারের সমালোচনা করেছিলেন মমতা। তোষণের রাজনীতির এটা বড় পরিবর্তন। বাংলায় অনুপ্রবেশের পিছনে একটাই রাজনীতি তোষণ। লোকসভায় তৃণমূল হাফ, বিধানসভায় পুরো সাফ। বাংলার দলিত, আদিবাসী, পিছিয়ে পড়া মানুষকে সঙ্গে নেননি মমতা।