বাদুড়িয়া : বাদুড়িয়ায় সিপিএমের পার্টি অফিস ভাঙচুর। অভিযোগ, দলীয় কর্মীদের নিয়ে সিপিএম প্রার্থীর বৈঠকের সময় হামলা চালানো হয়। রড-লাঠি নিয়ে মারধর করা হয়। অভিযোগের তির তৃণমূলের বিরুদ্ধে। ঘটনায় আহত চার সিপিএম কর্মী হাসপাতালে ভর্তি। তাঁদের মধ্যে দু'জনের অবস্থা আশঙ্কাজনক । এনিয়ে অবশ্য তৃণমূল কংগ্রেসের প্রতিক্রিয়া এখনও মেলেনি।


দিনকয়েক আগে হুগলির গোঘাটের কামারপুকুরে সিপিএম নেতার বাড়িতে ব্যাপক বোমাবাজি করে দুষ্কৃতীরা। ভেঙে যায় জানালার কাচ। উদ্ধার করা হয় একটি বোমাও। সিপিএমের অভিযোগ, মনোনয়ন তুলতে তাদের প্রার্থীদের চাপ দেওয়া হচ্ছিল। বাধা দেওয়ায় হামলা চালায় তৃণমূল। সিটুর রাজ্য কমিটির সদস্য তিলক ঘোষ বলেন, “প্রার্থীদের ভয় দেখাচ্ছে। রাতে বোমাবাজি করে তৃণমূল।’’


অন্যদিকে, পূর্ব বর্ধমানের কাটোয়ার গিধগ্রাম গ্রাম পঞ্চায়েতে এবার সিপিএম প্রার্থী হয়েছেন সাইফুল শেখ। অভিযোগ, মনোনয়ন তুলতে চাপ দিতে তাঁর বাড়িতে চড়াও হয় তৃণমূল আশ্রিত দুষ্কৃতীরা। সিপিএম প্রার্থীকে না পেয়ে তাঁর দাদাকে মারধর করে মাথা ফাটিয়ে দেওয়া হয়। এর পরের ঘটনা আরও ভয়াবহ! অভিযোগ, রক্তাক্ত অবস্থায় পুলিশ ফাঁড়িতে ছুটে গেলেও কোনও সাহায্য মেলেনি। এই অবস্থায় আতঙ্কে গ্রাম ছাড়েন গিধগ্রাম পঞ্চায়েতের ৫ জন সিপিএম প্রার্থী। তাঁদের ঠাঁই হয় কাটোয়ার সিপিএম পার্টি অফিসে। তাঁদের সঙ্গে ছিলেন কংগ্রেসের দুই প্রার্থীও।


ঘোষিত নির্ঘণ্ট অনুযায়ী, পঞ্চায়েত ভোটের বাকি আর ১৫ দিন। এই পরিস্থিতিতে ভোট ঘিরে নিরাপত্তার দাবিতে বারবার সরব হয়েছে বিরোধীরা। রাজ্য নির্বাচন কমিশনের সুপারিশ মতো ২২ কোম্পানি কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েনের বিজ্ঞপ্তি আগেই জারি করেছিল কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রক। অন্যদিকে পঞ্চায়েত নির্বাচন সংক্রান্ত মামলায় কলকাতা হাইকোর্টের বাহিনী-নির্দেশের পর, আরও ৮০০ কোম্পানি কেন্দ্রীয় বাহিনীর রিকুইজিশন দেয় রাজ্য নির্বাচন কমিশন। তার মধ্যে গতকাল আরও ৩১৫ কোম্পানি বাংলায় পাঠানোর নির্দেশিকা জারি করল অমিত শাহের মন্ত্রক। এর মধ্যে প্যারামিলিটারি ফোর্স আসছে ২০০ কোম্পানি। তার মধ্যে ৫০ কোম্পানি CRPF, ৬০ কোম্পানি BSF, CISF থাকছে ২৫ কোম্পানি, ২০ কোম্পানি ITBP, ২৫ কোম্পানি SSB এবং ২০ কোম্পানি RPF থাকছে। এছাড়াও বিভিন্ন রাজ্যের স্পেশাল আর্মড পুলিশের ১১৫ কোম্পানি বাহিনী পাঠানোর নির্দেশিকা জারি করা হয়েছে। তার মধ্যে অসম, বিহার, ঝাড়খণ্ড, ওড়িশা, উত্তরপ্রদেশ, মধ্যপ্রদেশ, ত্রিপুরা, মিজোরাম, সিকিম, অরুণাচল প্রদেশ, মেঘালয় ও মহারাষ্ট্র, মোট ১২টি রাজ্য থেকে সশস্ত্র পুলিশ ফোর্স পাঠানো হচ্ছে।                                   


৮ জুলাই একদফায় পঞ্চায়েত নির্বাচন হবে রাজ্যে। তাই প্রশ্ন উঠছে, এই ৩৩৭ কোম্পানি বাহিনী দিয়ে সাড়ে ৬১ হাজারেরও বেশি বুথে নির্বিঘ্নে ভোট করানো সম্ভব হবে? না, প্রয়োজন হবে আরও সংখ্যক কেন্দ্রীয় বাহিনীর? সূত্রের খবর, এই প্রেক্ষাপটে  আরও ৪৮৫ কোম্পানি কেন্দ্রীয় বাহিনী চেয়ে ফের কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকে চিঠি দিয়েছেন রাজ্য নির্বাচন কমিশনার রাজীব সিনহা। আর প্রতিটি ভোটকেন্দ্রে এদিন কেন্দ্রীয় বাহিনীর দাবিতে পথে নামে ভোট কর্মীরা।