সুনীত হালদার, আমতা : ভোট শেষ, তাও শেষ নেই অশান্তির। রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে ভোট পরবর্তী একের পর এক হিংসার খবর সামনে আসছে। সেই হিংসা থেকে রেহাই পেল না আমতার মৃত ছাত্রনেতা আনিস খানের পরিবারও। তাদের অভিযোগ, আজ সকালে তৃণমূল আশ্রিত দুষ্কৃতীরা তাদের আত্মীয়দের বাড়িতে ভাঙচুর চালায়। কমপক্ষে আট থেকে দশটা বাড়িতে ভাঙচুর চালানো হয়েছে। ঘটনার জেরে আনিসের আত্মীয় এবং এলাকার বেশ কয়েকজন আতঙ্কে ঘর ছাড়া।


আনিস খানের দাদা শামসুদ্দিন খান এবারের পঞ্চায়েত নির্বাচনে সিপিএমের টিকিটে লড়েছেন। তিনি কুশবেড়িয়া গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকার আমতা ২ নম্বর ব্লকের পঞ্চায়েত সমিতির ৪১ নম্বর আসনে প্রার্থী হন।


শামসুদ্দিনের অভিযোগ, গতকাল দুপুর ৩টের পর তৃণমূল কংগ্রেস কর্মীরা ছাপ্পা ভোট দেন। তাঁরা প্রতিবাদ করলে এ নিয়ে উত্তেজনা ছড়ায়। এই ঘটনায় এক তৃণমূল কর্মী আহত হন। পরে পুলিশ এলাকায় এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। এরপর আজ সকালে ৫০ জনের বেশি তৃণমূল কংগ্রেস কর্মী শামসুদ্দিন খানের আত্মীয়র বাড়িতে হামলা চালায় বলে অভিযোগ। এর পাশাপাশি তাঁদের বাড়ির সামনে ক্লাবে সিসিটিভি ভাঙচুর করা হয় এবং বৈদ্যুতিক তারের সংযোগ ছিঁড়ে দেওয়া হয়। ঘটনাস্থলে পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।


তৃণমূল কংগ্রেসের পক্ষ থেকে অবশ্য যাবতীয় অভিযোগ অস্বীকার করা হয়েছে। তৃণমূল কংগ্রেসের হাওড়া গ্রামীণের সভাপতি ও বাগনানের বিধায়ক অরুণাভ সেন বলেন, আনিসের পরিবার মিথ্যে অভিযোগ করছে। ওই ধরনের ভাঙচুরের কোনও ঘটনা ঘটেনি। নির্বাচনে হেরে যাবে, তাই আগে থেকে সাফাই গাইছেন। ঘটনাস্থলে উত্তেজনা থাকায় আমতা থানার পুলিশ টহল দিচ্ছে।


অন্যদিকে, উলুবেড়িয়ার কাশমুলি গ্রাম পঞ্চায়েতের কংগ্রেস প্রার্থী ও তাঁর নাবালিকা মেয়েকে বেধড়ক মারধরের অভিযোগ উঠল তৃণমূলের বিরুদ্ধে। লোহার রড দিয়ে মাথায় আঘাত করা হয় বলে অভিযোগ। উলুবেড়িয়া হাসপাতালে ভর্তি কংগ্রেস প্রার্থী মর্জিনা খাতুন ও তাঁর মেয়ে। যদিও হামলার অভিযোগ অস্বীকার করেছে শাসকদল। 


হাওড়ার জগৎবল্লভপুরে ভোট-পরবর্তী হিংসার ঘটনা ঘটে। আজ ভোরে বড়গাছিয়া ১ নম্বর গ্রাম পঞ্চায়েতের ৪১ নম্বর বুথের নির্দল প্রার্থী শেখ সফিকুল ইসলামের ভাইয়ের বাড়িতে আগুন লাগানো হয়। পুড়ে ছাই ২টি বাইক এবং বাড়ির আসবাবপত্র। অভিযোগের তির তৃণমূলের দিকে। সফিকুল আগে তৃণমূল করলেও, বিধানসভা ভোটের আগে আইএসএফে যোগ দেন। এবার নির্দল হিসেবে ভোটে দাঁড়ান। সফিকুলের দাবি, গতকাল ব্যালট বাক্স ডিসিআরসি সেন্টারে নিয়ে যাওয়ার পরিবর্তে অন্যত্র নিয়ে যাওয়ার প্রতিবাদ করেন। তার জেরেই তৃণমূল তাঁর ভাইয়ের বাড়িতে আগুন লাগিয়ে দেয়। অভিযোগ অস্বীকার শাসকদলের। 


আপনার পছন্দের খবর আর আপডেট এখন পাবেন আপনার পছন্দের চ্যাটিং প্ল্যাটফর্ম টেলিগ্রামেও। যুক্ত হোন


https://t.me/abpanandaofficial