কলকাতা: বাংলায় ভোট ঘিরে হামলায় (Violence) একের পর এক মৃত্যুর ঘটনা উঠে এসেছে। প্রাণ হারিয়েছেন শুধু রাজনৈতিক ব্যক্তিত্বই নন, সাধারণ ভোটারও। শুধুমাত্র, 'যাকে ইচ্ছে তাকে ভোট দেব' বলাতেও নৃশংসভাবে খুন হতে হয়েছে বাংলার এক ভোটারকে, এমন অভিযোগও উঠে এসেছে। ৩৩ দিনে বাংলায় ভোট-হিংসার বলি হয়েছেন ৪০ জন। যদিও এই পরিসংখ্যানে আমল দিতে রাজি নন রাজ্য নির্বাচন কমিশনার রাজীব সিন্হা। তাই রাজ্যে পঞ্চায়েত ভোটের দিনে হিংসাকাণ্ডে ঠিক কতজন নিহত হয়েছিলেন, এনিয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে এদিন মুখ খুললেন তিনি।


রাজ্য নির্বাচন কমিশনার বলেন, 'ভোটের দিনে ১০ জনের মৃত্যু হয়েছে, পুলিশও সেই তথ্য দিয়েছে। কমিশনের কাছে এই তথ্য আছে, ভোট হিংসায় ৪০ জনের মৃত্যুর কোনও খবর নেই।' প্রসঙ্গত, ভোটের দিনের সন্ত্রাসের বলি হয়েছিলেন কেতুগ্রামের ভোটার। 'তৃণমূলকে ভোট দিতে না চাওয়ায় পিটিয়ে, বোল্ডার দিয়ে থেঁতলে খুন'-র অভিযোগ উঠে আসে।'যাকে ইচ্ছে তাকে ভোট দেব' বলার মাশুল গুণতে হয় প্রাণ দিয়ে। বোল্ডার দিয়ে থেঁতলে খুনের ভয়াবহ অভিযোগ ওঠে। কেতুগ্রামের ওই ভোটারকে এরপর গুরুতর জখম অবস্থায় এনআরএসে ভর্তি করলেও শেষ রক্ষা হয়নি। হাসপাতালেই মৃত্যু ঘটে তাঁর। ওই ঘটনায় ইতিমধ্যেই তৃণমূলের বিরুদ্ধে বিস্ফোরক অভিযোগ তুলেছে নিহতের পরিবার।


কোচবিহারের দিনহাটা থেকে দক্ষিণ ২৪ পরগনার বাসন্তী। সন্ত্রাসের পঞ্চায়েত ভোট, সন্তান কেড়েছে মায়ের। শনিবার, কোচবিহারের দিনহাটায় ভোট দিতে গিয়ে খুন হন চিরঞ্জিৎ কারজি। নিহত ভোটারের মা বলেছেন, 'আমি আর ভোট দিতে কোনওদিন যাব না। আমার বাড়ির আর কেউই যাবে না। একজন যখন বললেন, আর কখনও দাঁড়াবেন না ভোটের লাইনে। আরেকজন সন্তান হারানোর ব্য়থা নিয়েই দাঁড়ালেন পুনর্নির্বাচনের লাইনে।'


আরও পড়ুন, 'বাঙালি হিসেবে আমিও লজ্জিত', ভোট হিংসা নিয়ে এবার সরব চিরঞ্জিৎ


 অপরদিকে, ভোটের দিন, বুথের মধ্যেই বোমা মেরে খুন করা হয়েছিল কোচবিহার ১ নম্বর ব্লকের ফলিমারির বিজেপি প্রার্থীর পোলিং এজেন্ট মাধব বিশ্বাসকেও। চোখের জলে, পুননির্বাচনে ভোট দেন নিহত বিজেপির পোলিং এজেন্টের পরিবারের সদস্যরা। বুথের ভিতরেই কান্নায় ভেঙে পড়েন তাঁরা। এদিকে পরিজন হারানোর শোক মিলিয়ে দিয়েছে, দিনহাটা থেকে প্রায় ৭০০ কিলোমিটার দূরের বাসন্তীকে।  বাসন্তীর ফুলমালঞ্চ গ্রামে শনিবার বোমার আঘাতে মৃত্যু হয় তৃণমূল প্রার্থী রফিয়া ওস্তাগরের দেওর তৃণমূল কর্মী আনিসুরের। পুননির্বাচনে ভোট দিতে আসেন তাঁর মা।