রাজীব চৌধুরী, মুর্শিদাবাদ: গণনার (Counting) দ্বিতীয় দিনও লাগাম পড়ল না মৃত্য়ুমিছিলে। যমে-মানুষে টানাটানির পর মারা গেলেন কংগ্রেস কর্মী (Congress Worker Death) রাজেশ শেখ। নির্বাচনের দিন আক্রান্ত হয়েছিলেন মুর্শিদাবাদের (Murshidabad) ওই কংগ্রেস কর্মী। আশঙ্কাজনক অবস্থায় তাঁকে এসএসকেএমে ভর্তি করা হয়। কিন্তু শেষরক্ষা হল না। বাড়িতে খবর পৌঁছতেই কান্নায় ভেঙে পড়লেন পরিজনরা। বুধবার এখনও পর্যন্ত যা হিসেব, তাতে গত ৩৫ দিনে ৪৭ জনের মৃত্য়ু দেখেছে বাংলা। আজ যে ক'জনের মৃত্যু হয়েছে. তাঁদের মধ্যে রয়েছেন রাজেশও।


কী ঘটেছিল?
ভোটের দিন সাগরদিঘিতে তৃণমূলের সঙ্গে সংঘর্ষ হয়েছিল কংগ্রেস কর্মীদের। তখনই জখম হন রাজেশ শেখ। দ্রুত তাঁকে সাগরদিঘি সুপার স্পেশ্য়ালিটি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। কিন্তু অবস্থার অবনতি হলে নিয়ে আসা হয় এসএসকেএমে। সেখানেই মারা যান রাজেশ। এই মৃত্যুর ঘটনায় তৃণমূলের দিকে আঙুল তুলেছে কংগ্রেস। তাদের অভিযোগ, একেবারে পরিকল্পিত ভাবে ভোটের দিন আক্রমণ করা হয়েছিল রাজেশকে। তাঁর মৃত্যুর খবর সাগরদিঘি পৌঁছতেই কান্নায় ভেঙে পড়েন আত্মীয়রা। বস্তুত, পঞ্চায়েত ভোটের বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের পর থেকেই জেলায় জেলায় বিপুল অশান্তির খবর উঠে এসেছে। ব্যতিক্রম নয় মুর্শিদাবাদও। রাজেশ শেখের আগেও রক্ত ঝরেছে সেই জেলায়। শুধু ভোট বা পুনর্নির্বাচন নয়, গণনার সময়ও জারি থাকছে এই অশান্তি। এদিনও যেমন, ভাঙ়়ড়ে তিন জনের মৃত্যু হয়। আইএসএফের দাবি, জেলা পরিষদের ৮৩ নম্বর আসনে তাদের প্রার্থী জাহানারা খাতুন জিতে যাওয়ায় পুনর্গণনার দাবি তোলে তৃণমূল। অভিযোগ, জয়ের শংসাপত্র দিতে টালবাহানা শুরু করেন বিডিও। এরপর জোর করে তৃণমূল প্রার্থী খাদিজা বিবিকে জিতিয়ে দেওয়া হয়। এই নিয়ে দুই দলের কর্মীদের মধ্যে গন্ডগোল চরমে ওঠে। সেইসময় গণনা কেন্দ্রেই ছিলেন তৃণমূল নেতা আরাবুল ইসলাম ও তাঁর ছেলে হাকিমুল। পুলিশের সঙ্গে খণ্ডযুদ্ধ বেধে যায় আইএসএফ কর্মীদের। শুরু হয় বোমাবাজি। গুলিও চলে। গুলিবিদ্ধ হয়ে প্রাণ হারান দুই আইএসএফ কর্মী হাসান মোল্লা, রেজাউল গাজি এবং গ্রামবাসী রাজু মোল্লা। আবার দক্ষিণ ২৪ পরগনার রায়দিঘিতে তৃণমূল কর্মীকে নৃশংস ভাবে কুপিয়ে খুনের অভিযোগ ওঠে। আজ ভোররাতে রায়দিঘির চাঁদপাশা এলাকার পুকুর থেকে বছর ৪০-এর তৃণমূল কর্মী বিপ্লব হালদারের ক্ষতবিক্ষত দেহ উদ্ধার হয়েছে। মথুরাপুর ২ নম্বর ব্লকের কাশীনগর গ্রাম পঞ্চায়েতের চাঁদপাশা এলাকার ১০৫ নম্বর বুথের বাসিন্দা ছিলেন বিপ্লব। এই বুথে বিজেপি প্রার্থী জয়ী হন। অভিযোগ, তারপর থেকেই তৃণমূল কর্মীকে হুমকি দিচ্ছিল বিজেপি। অন্য দিকে, মালদার রতুয়ার রামপুর গ্রামে কংগ্রেস কর্মীকে পিটিয়ে মারার অভিযোগ ওঠে তৃণমূলের বিরুদ্ধে। চাঁচলেও খুন হন এক তৃণমূলকর্মী। প্রায় একই সময়ে খবর আসে রাজেশের মৃত্যুরও। 


আরও পড়ুন:ফেসবুকে কেন, সংবাদমাধ্যমের মুখোমুখি কেন নয়, মমতাকে প্রশ্ন রবিশঙ্করের