মুর্শিদাবাদ: ভোট সন্ত্রাসে ঝরে গেল আরও একজনের প্রাণ। ভোটের দিন মুর্শিদাবাদের (Murshidabad) হরিহরপাড়ায় তৃণমূল বিধায়ক ও তাঁর দলবলের বিরুদ্ধে সিপিএম কর্মীকে (CPM Worker) মারধরের অভিযোগ ওঠে। ৮দিন হাসপাতালে ভর্তি থাকার পর গতকাল এনআরএস মেডিক্যালে মৃত্যু হয় আক্রান্ত সিপিএম কর্মীর। ঘটনায় সিবিআই তদন্ত চেয়েছে নিহতের পরিবার। তুঙ্গে উঠেছে রাজনৈতিক তরজা।
সিপিএমের দাবি, ভোটগ্রহণ কেন্দ্রে প্রার্থীর সঙ্গে দাঁড়িয়েছিলেন রিন্টু। সেখানেই প্রার্থী আক্রান্ত হন। তাঁকে বাঁচাতে গিয়ে রিন্টু শেখ এবং আরও একাধিক সিপিএম কর্মী আক্রান্ত হন। স্থানীয় তৃণমূল বিধায়ক এবং তাঁর ছেলের দিকে অভিযোগ। যদিও তৃণমূল অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। হামলার সময় বুথে কোনও পুলিশকর্মী ছিল না বলে অভিযোগ সিপিএমের। রিন্টুর দাদার দাবি, ৬০-৭০ জন হামলা করেন। ৭-৮ জন গুরুতর জখম হয়েছেন। তাঁদের মধ্যে ছিলেন রিন্টু শেখ। পুলিশ কোনও পদক্ষেপ করেনি বলে অভিযোগ।
সিপিএম জেলা কার্যালয়ে বৈঠক করেছে। ওই ঘটনায় আইনি পদক্ষেপের প্রস্তুতি নিচ্ছে সিপিএম। আইনি পথে শাস্তি দেওয়ার লড়াই করবে দল, সূত্রের খবর, এমনটাই সিদ্ধান্ত নিচ্ছে সিপিএম। হরিহরপাড়ার বিধায়ক নিয়ামত শেখ, তাঁর ছেলে (জেলা পরিষদের প্রার্থী ছিলেন, জয়ী হয়েছেন), এছাড়া তাঁদের অনুগামীদের বিরুদ্ধে অভিযোগ করা সত্ত্বেও পুলিশ কোনও পদক্ষেপ করেনি বলে অভিযোগ। বিধায়কের কোনও প্রতিক্রিয়া মেলেনি এখনও পর্যন্ত, অভিযোগ সিপিএমের। নিহতদের পরিবার সিবিআই তদন্তের দাবি করেছেন। দোষীদের শাস্তি চেয়েছেন তাঁরা। স্থানীয় সিপিএম নেতৃত্বের দাবি, দোষীরা শাস্তি না পেলে বড়সড় আন্দোলনে নামা হবে।
প্রসঙ্গত, পূর্ব মেদিনীপুরের খেজুরিতেও ভোট-হিংসা। তৃণমূল কর্মীকে পুড়িয়ে মারার চেষ্টার অভিযোগ উঠেছে। অভিযোগের তির বিজেপির দিকে। খেজুরির টিকাশি গ্রাম পঞ্চায়েত দখল করেছে তৃণমূল। অভিযোগ, সেই আক্রোশে গতকাল রাতে উত্তর কলনদান গ্রামে তৃণমূল কর্মী নরেন্দ্রনাথ মাঝির বাড়িতে আগুন লাগিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করে বিজেপি আশ্রিত দুষ্কৃতীরা বলে অভিযোগ। বাধা দেওয়ায় তৃণমূল কর্মীকে মারধর করে গায়ে পেট্রোল ঢেলে আগুন লাগিয়ে দেওয়া হয় বলে অভিযোগ। আশঙ্কাজনক অবস্থায় কাঁথি মহকুমা হাসপাতালে ভর্তি তৃণমূল কর্মী। বিজেপির দাবি, ভোটে জেতার পর থেকেই পঞ্চায়েতের ক্ষমতা দখল নিয়ে তৃণমূলে কোন্দল শুরু হয়েছে। তার জেরেই এই ঘটনা।
আরও পড়ুন, 'মানুষের ভোটে নির্বাচিত সরকার ফেলা গণতন্ত্র বিরোধী', মন্তব্য দিলীপের
অপরদিকে, মালদার বামনগোলায় বিজেপি কর্মীকে খুনের অভিযোগে গ্রেফতার ছেলে ও পুত্রবধূ। নেপথ্যে তৃণমূলের হাত রয়েছে, বাকি অভিযুক্তদেরও গ্রেফতার করতে হবে, এই দাবিতে নালাগোলা ফাঁড়ি ঘেরাও করে বিক্ষোভ দেখান বিজেপি কর্মীরা। নেতৃত্বে মালদা উত্তরের বিজেপি সাংসদ খগেন মুর্মু। গতকাল সকালে বাড়ি থেকে উদ্ধার হয় বিজেপি কর্মী বুড়ন মুর্মুর ঝুলন্ত দেহ। অভিযোগ ওঠে, পঞ্চায়েত ভোটে তৃণমূলের টিকিটে লড়েও হেরে যাওয়ায় মৃতের পুত্রবধূ ও ছেলে মারধর করে খুন করে ঝুলিয়ে দেন বিজেপি কর্মীকে। গতকালই ছেলে বিপ্লব মুর্মু ও পুত্রবধূ শর্মিলা মারডিকে গ্রেফতার করে বামনগোলা থানার পুলিশ।