বিটন চক্রবর্তী, পূর্ব মেদিনীপুর:নন্দীগ্রামে ভাল ফল করলেও সামগ্রিক ভাবে পূর্ব মেদিনীপুরে বিশেষ ছাপ ফেলতে পারল না বিজেপি। শেষ পর্যন্ত পূর্ব মেদিনীপুর জেলা পরিষদ নিজেদের দখলেই রাখল তৃণমূল। শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত পূর্ব মেদিনীপুর জেলা পরিষদের ৭০টি আসনের মধ্যে ৫৬ টি পেয়েছে তৃণমূল। বিজেপির দখলে গিয়েছে ১৪টি আসন। সিপিএম বা কংগ্রেস এই জেলায় এখনও পর্যন্ত কোনও জেলা পরিষদ আসন পায়নি। 


গোটা মেদিনীপুর জেলায় বিশেষ ভাল ফল না করলেও নন্দীগ্রামে বেশ ভাল ফল করেছে বিজেপি। নন্দীগ্রাম রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীর বিধানসভা এলাকা। একুশের ভোটে এই আসন থেকে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে হারিয়ে জয়ী হন তিনি। সেখানেই নন্দীগ্রামের ২ নম্বর পঞ্চায়েত সমিতি গিয়েছে বিজেপির দখলে। নন্দীগ্রাম ১ নম্বর পঞ্চায়েত সমিতির ভোটের ফল টাই হয়েছে। ১৫টি করে আসন জিতেছে তৃণমূল ও বিজেপি।


পূর্ব মেদিনীপুর জেলা তৃণমূলের খাসতালুক। রাজ্যে বাম সরকারের বিরুদ্ধে হওয়ার অন্যতম বড় আন্দোলনের পীঠস্থান ছিল এই জেলা। নন্দীগ্রাম আন্দোলন এই রাজ্যে তৃণমূলের উত্থানের অন্যতম বড় রাজনৈতিক কারণ। ২০০৮ সালে রাজ্যে বাম জমানা, সেই সময়ের পঞ্চায়েত ভোটে ২টি জেলা পরিষদ ছিনিয়ে আনতে পেরেছিল তৃণমূল। সেই দুটি ছিল দক্ষিণ ২৪ পরগনা এবং পূর্ব মেদিনীপুর। এই জেলায় তৃণমূলের সংগঠন তৈরিতে বড় ভূমিকা ছিল শুভেন্দু অধিকারীর। বিধানসভা ভোটের ঠিক আগে তৃণমূল ছেড়ে বিজেপিতে যোগ দেন তিনি। নন্দীগ্রাম থেকে জেতেনও। কিন্তু পঞ্চায়েত ভোটে নন্দীগ্রামে জয় পেলেও, জেলা পরিষদের কিছু আসন দখল করলেও জেলা পরিষদ দখল করার মতো জায়গা থেকে বহুদূরে থেমে গেল বিজেপি। 


যদিও ভোটের ফল ঘোষণার পরে এবিপি আনন্দকে দেওয়া এক্সক্লুসিভ সাক্ষাৎকারে বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী বলেছেন, 'কেন্দ্রীয় নেতারা এটা নিয়ে ভাবিত নন, কারণ এটা জনমত নয় সবাই জানেন।' তিনি আরও বলেন, 'প্রশাসনের সঙ্গে মানুষ কীভাবে লড়বে। এটা জনমতের প্রকৃত প্রতিফলন নয়। এবারের নির্বাচনে ২০ হাজারের বেশি আসন তৃণমূলের পাওযার কথা নয়। কোচবিহার, আলিপুরদুয়ার, জলপাইগুড়ি, পুরুলিয়ায় বিজেপির জয় হত। রাজ্যের পুলিশ কার্যত খোলাখুলি সমর্থন করল। আদালতে আমাদের লড়াই চলবে। বহু কাউন্টিং এজেন্ট বাড়ি ফিরতে পারছেন না ভয়ে। কেন্দ্রীয় নেতারা এটা নিয়ে ভাবিত নন, কারণ এটা জনমত নয় সবাই জানেন।'


পঞ্চায়েত নির্বাচনে সবুজ ঝড়:



  • ২,৬১০টি গ্রাম পঞ্চায়েত তৃণমূলের দখলে

  • বিজেপির দখলে ২১২টি গ্রাম পঞ্চায়েত

  • ত্রিশঙ্কু ২৬৩টি গ্রাম পঞ্চায়েত

  • ২৪২টি পঞ্চায়েত সমিতি তৃণমূলের দখলে

  • বিজেপির ঝুলিতে ৮টি পঞ্চায়েত সমিতি

  • ত্রিশঙ্কু ৪টি পঞ্চায়েত সমিতি

  • জেলা পরিষদে নিরঙ্কুশ জয় তৃণমূলের। ২০-র মধ্যে ২০টিতেই ফুটল ঘাসফুল 


আরও পড়ুন: মায়ের সঙ্গে ঝগড়া করে বেরিয়েছিলেন রাজু, ভাঙড়ে প্রাণ গেল গোলাগুলিতে !