শুভেন্দু ভট্টাচার্য, পূর্ণেন্দু সিংহ, সমীরণ পাল, কোচবিহার : জেলায় জেলায় অশান্তি, খুনোখুনির মধ্যে শেষ হয়েছে পঞ্চায়েত ভোটের (Panchayat Election) মনোনয়ন পর্ব (Nomination Filing)। তার মধ্যেই বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জয়ের দাবি তুলে, অনেক জায়গায় তৃণমূলের উল্লাস নজরে এসেছে। দক্ষিণ চব্বিশ পরগনার বজবজ, হাওড়ার জগৎবল্লভপুরের পর এবার কোচবিহারের দিনহাটা, উত্তর দিনাজপুরের চোপড়া। বাঁকুড়ার পাত্রসায়র থেকে মালদার কালিয়াচক, বিভিন্ন জায়গায় বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জয়ের পর উল্লাসে মাতেন ঘাসফুল শিবিরের কর্মী-সমর্থকরা। এদিকে, তৃণমূলের বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতার জয় নিয়ে রাজ্যের শাসকদলকে নিশানা করেছে বিরোধীরা।
উত্তরবঙ্গ উন্নয়নমন্ত্রী উদয়ন গুহর বিধানসভা কেন্দ্র দিনহাটার ২ নম্বর ব্লকে সুকারুর কুঠি ও চৌধুরীর হাট গ্রাম পঞ্চায়েত বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জিতে গেছে তৃণমূল। তাৎপর্যপূর্ণ বিষয় হল, বিজেপির দখলে থাকা কোচবিহার দক্ষিণ বিধানসভার অন্তর্গত শুকটাবাড়ি পঞ্চায়েতেও বিনা প্রতিদ্বন্দ্বীতায় জয়ী হয়েছে তৃণমূল। ২০১৮-র পঞ্চায়েত নির্বাচনে কোচবিহারে পঞ্চায়েতের তিনটি স্তরে ৩৬ শতাংশ আসনেই বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জয়ী হয় শাসকদল। যদিও, এক বছর পর লোকসভা নির্বাচনে কোচবিহার হাতছাড়া হয় তৃণমূলের। একুশের বিধানসভা ভোটেও এই জেলার অধিকাংশ আসনে হারের মুখ দেখতে হয় রাজ্যের শাসক দলকে। এবারের পঞ্চায়েত ভোটে কি জমি পুনরুদ্ধার করতে পারবে তৃণমূল ? সেটাই দেখার।
উত্তরবঙ্গের অপর জেলা উত্তর দিনাজপুরে ভোটের আগেই চোপড়ায় জেলা পরিষদের ২টি আসনে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জয় তৃণমূলের। চোপড়ায় পঞ্চায়েত সমিতির ২৪টি আসনেই বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জয়ী তৃণমূল। চোপড়ায় গ্রাম পঞ্চায়েতে ২১৭টি আসনের মধ্যে ২১৬টিতেই বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জয়ী তৃণমূল। শুধুমাত্র একটি আসনে নির্দল প্রার্থীর মনোনয়নপত্র জমা পড়েছে। তৃণমূলের সন্ত্রাসের জেরে মনোনয়নই জমা দেওয়া যায়নি, অভিযোগ বিরোধীদের।
দক্ষিণবঙ্গেও বিভিন্ন জেলাতে দেখা গিয়েছে একই চিত্র। বাঁকুড়ায় ভোটের আগেই বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জয় তৃণমূল কংগ্রেস প্রার্থীদের। বাঁকুড়ার পাত্রসায়র পঞ্চায়েত সমিতি, ইন্দাস পঞ্চায়েত সমিতি, কোতুলপুর পঞ্চায়েত সমিতিকে জয় শাসক দলের। বাঁকুড়ার জয়পুর পঞ্চায়েত সমিতিতেও জয় তৃণমূল কংগ্রেস প্রার্থীদের। ৪টি ব্লকের ৩৭টি গ্রাম পঞ্চায়েত বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জয় তৃণমূল কংগ্রেস প্রার্থীদের।
এদিকে, মালদার কালিয়াচকে মোজমপুর পঞ্চায়েতে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জয়ী তৃণমূল। মোজমপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের ২০টি আসনেই প্রার্থী দিতে পারেনি বিরোধীরা। কালিয়াচকে ৩টি পঞ্চায়েত সমিতিতেও বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জয় রাজ্যের শাসক দলের।