সৌভিক মজুমদার, কলকাতা: হাইকোর্টে ফের ভর্ৎসনার মুখে রাজ্য নির্বাচন কমিশনার। 'নির্বাচন কমিশনার আছেন এখনও? কমিশনে পঞ্চায়েত ভোটের নামে জানি না কী হচ্ছে এসব। নির্বাচন প্রক্রিয়া কি এখনও চলছে?' বিস্ময় প্রকাশ করে জানতে চাইলেন বিচারপতি অমৃতা সিন্হা।


নির্বাচন কমিশন নির্ঘণ্ট মেনে ভোট চালাচ্ছে এখনও? কমিশনের কাছ থেকে জানতে চাইলেন বিচারপতি। 'ভোট হচ্ছে, নাকি হচ্ছে না? প্রশ্নের সঠিক উত্তর চাই কমিশনের থেকে',দুপুর ২টোর মধ্যে কমিশনের থেকে জবাব তলব বিচারপতি অমৃতা সিন্হার। আইএসএফ প্রার্থীদের মনোনয়ন চেয়ে করা মামলায় মন্তব্য বিচারপতি অমৃতা সিন্হার।



এর আগেই কলকাতা হাইকোর্টের মাননীয় প্রধান বিচারপতি ভর্ৎসনা করেছিলেন রাজ্য নির্বাচন কমিশনার। পদ থেকে সরার বিষয়েও কথা বলেছিলেন। এখন বারবার হাইকোর্টে নানা মামলা আসছে, মনোনয়ন নিয়ে প্রশ্ন উঠছে, মনোনয়ন জমার পড়েও সার্ভারে না আসা, এবং আরও নানা অভিযোগ নিয়ে বিরক্ত বিচারপতি। এই গোটা বিষয় নিয়েই ক্ষোভ প্রকাশ বিচারপতি অমৃতা সিনহার। রাজ্য নির্বাচন কমিশন এখনও রয়েছেন? কেন হাইকোর্টে বারবার অভিযোগ আসছে, তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন।


ভাঙড়ে আইএসএফ-এর অভিযোগ উঠেছে যে ১৯ তারিখ পর্যন্ত ওয়েবসাইটে নাম। তারপর উড়ে গিয়েছে ওয়েবসাইট থেকে তা নিয়ে হাইকোর্টের দ্বারস্থ হয়েছিল আইএসএফ। ওয়েবসাইটের ভূতুড়ে আচরণ নিয়ে  প্রশ্ন উঠেছে। হাইকোর্টের নির্দেশে মনোনয়ন জমা দিয়ে কমিশনের ওয়েবসাইটে নাম উঠেছিল। সুরক্ষা দিয়ে মনোনয়ন দমা নেওয়ার নির্দেশ দিয়েছিলেন বিচারপতি মান্থা।


আইএসএফ-এর অভিযোগ ছিল, মনোনয়ন পত্র পেশের পরে ওয়েবসাইট থেকে নাম উধাও হয়ে যায়। ১৯ তারিখ পর্যন্ত নাম থাকলেও, পরে কীভাবে নাম উধাও হল। এই নিয়ে মামলা হয়েছে। তা নিয়েই প্রশ্ন তুলেছেন বিচারপতি। তাঁর প্রশ্ন, নিয়ম মেনে মনোনয়ন জমা করা হলেও কীভাবে নাম উধাও হল।  এক্ষেত্রে কমিশনের ভূমিকা কী, কমিশনের কী বলার রয়েছে, তা জানতে চায় হাইকোর্ট। দুপুর ২টোর মধ্যে কমিশনের জবাব চেয়েছে হাইকোর্ট।


এর আগে প্রধান বিচারপতি ভর্ৎসনা করেছিলেন, যে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে, তা মেনে কাজ না করতে পারলে পদ থেকে সরে যান বলে ভর্ৎসনা করেছিলেন প্রধান বিচারপতি। কলকাতা হাইকোর্টের নির্দেশ বুঝতে, তার অর্থ বুঝতে রাজীব সিন্হা ব্যর্থ হয়েছেন, এমনটাই আদতে বলা হয়েছিল হাইকোর্টের তরফে। তারপরে রাজভবন সূত্রের খবর, রাজ্যপাল রাজ্য নির্বাচন কমিশনারের জয়েনিং রিপোর্ট গ্রহণ করেননি। এই আবহে পঞ্চায়েত ভোটের ভবিষ্যৎ নিয়ে প্রশ্ন তুলতে শুরু করেছেন বিরোধীরা। এরই মধ্যে আরও একটি মামলায় ফের হাইকোর্টের তরফে ভর্ৎসনার নিশানায় রাজ্য নির্বাচন কমিশন। ফলে রাজ্য নির্বাচন কমিশনারের ভূমিকা নিয়ে বারবার প্রশ্ন উঠছে। 


সুপ্রিম কোর্টের অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি অশোক গঙ্গোপাধ্যায় বলেন, 'রাজ্যপাল জয়েনিং রিপোর্ট গ্রহণ করেনি। ফলে তাঁর নিয়োগ প্রক্রিয়া নিয়ে প্রশ্ন উঠল। অতীতে পঞ্চায়েত নির্বাচন হয়েছে। কিন্তু এই ধরনের পরিস্থিতির উদ্ভব আগে হয়নি। নির্বাচন করতে গেলে নির্বাচন কমিশনার লাগে। তিনি রাজ্য সরকারের থেকে সম্পূর্ণ স্বাধীন ভাবে কাজ করবে এটাই কাম্য।'


 আরও পড়ুন: কর্মসূত্রে প্রচুর বাইরে যেতে হয়? নজরে থাকুক এই বিষয়গুলি