নদিয়া: আসন্ন পঞ্চায়েত নির্বাচনের আগে মতুয়াগড়ে গিয়ে তুমুল ক্ষোভের মুখে পড়তে হয়েছিল তাঁকে। এবার নদিয়ায় দাঁড়িয়ে সেই মতুয়াদের নাগরিকত্বকে হাতিয়ার করেই পঞ্চায়েত নির্বাচনের সুর বাঁধলেন তৃণমূলের সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় (Abhishek Banerjee)। দীর্ঘ দিন ধরে এই ভারতের বাসিন্দা মতুয়ারা যখন সরকারি সুযোগ সুবিধা পান, ভোটাধিকার পান, তাহলে নতুন করে নাগরিকত্বের (CAA) পরিচয় দিতে হবে কেন, প্রশ্ন তুলেন অভিষেক। 


পঞ্চায়েত নির্বাচনে বাকি আর মাত্র কয়েক দিন। সেই আবহে মঙ্গলবার নদিয়া থেকে নির্বাচনী প্রচার শুরু করেলেন অভিষেক। এ দিন দুপুর ১টায় কৃষ্ণগঞ্জ বিধানসভার বাদকুল্লায় তাঁর নির্বাচনী সভা ছিল। সেখান থেকেই মতুয়াদের নাগরিকত্বের প্রশ্নে সরাসরি প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে (Narendra Modi) আক্রমণ করেন অভিষেক। বলেন, "ভাঁওতাবাজির প্রতীক হল পদ্মফুল। মতুয়াদের জন্য CAA করবে বলেছিল। চার বছর হতে চলল। ২০১৯ সালে পাস হয়েছিল CAA বিল। তার পর প্রায় ৪২ মাস অতিক্রান্ত। এখনও পর্যন্ত বিধি-নিয়ম আনা যায়নি।"


বিজেপি বাঙালি বিদ্বেষী বলেও এ দিন অভিযোগ তোলেন অভিষেক। তাঁর কথায়, "অসমে NRC তালিকা থেকে ১৯ লক্ষ মানুষের নাম বাদ গিয়েছে। এর মধ্যে ১২ লক্ষ হিন্দু বাঙালি। এদের বাঙালি বিদ্বেষের প্রমাণ বার বার মিলেছে। কিন্তু যে সমস্ত মানুষ ভোট দিয়ে মুখ্যমন্ত্রী, জেলা পরিষদ, বিধায়ক, সাংসদ এবং প্রধানমন্ত্রী নির্বাচিত করেছেন, তাঁদের যদি অবৈধ নাগরিক বলা হয়, তাহলে ওই সমস্ত মানুষের ভোটে নির্বাচিত হওয়া প্রধানমন্ত্রী, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীও অবৈধ। তাঁদের পদত্যাগ করা উচিত।"


আরও পড়ুন: Mamata Banerjee : 'ভারতকে যদি চিনে থাকি...', মমতার মতে বিজেপির 'আয়ু' আর এতদিন !


বিজেপি মানুষকে ভুল বোঝাচ্ছে বলেও এদিন দাবি করেন অভিষেক। তাঁর বক্তব্য, "আপনাদের ভুল বোঝানো হচ্ছে। এই ফাঁদে পা দেবেন না। আপনারা এই দেশের নাগরিক। প্রধানমন্ত্রীর যতটা অধিকার এই দেশের উপর, মতুয়া ভাইবোনেদেরও অধিকার ততটাই। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকার থাকতে সেই অধিকার থেকে কেউ বঞ্চিত করতে পারবে না।"


দেশের মানুষকে যদি ভারতীয় নাগরিক হওয়ার প্রমাণপত্র দিতে হয়, তাহলে মোদিও তা থেকে বাদ যেতে পারেন না বলেও মত অভিষেকের। তাঁর বক্তব্য, "বলছে,. ১৯৭২ সালের আগের কাগজ আনতে হবে। আগে প্রধানমন্ত্রী নিজে '৭২-এর আগের কাগজ দেখাবেন। তার পর দেশবাসীর কাছ থেকে চাইবেন না হয়। আমার, আপনার সবার জন্য এক নিয়ম। ক্ষমতায় রয়েছেন বলে হাতির পাঁচ পা দেখেননি। প্রধানমন্ত্রী হয়েছেন বলে, যা ইচ্ছা করবেন ভাবলে, মানুষের হাতেও কিন্তু ইভিএম-এর বোতাম থাকবে। এটা একনায়কতন্ত্র নয়, গণতন্ত্র। গণতন্ত্রে শাসক নয়., খেটে খাওয়া মানুষই শেষ কথা বলেন। তাই মানুষ মনে করলে টেনে নামাতে সময় লাগবে না। "