সমীরণ পাল, হাবরা: নির্বাচন ঘিরে যত দ্বন্দ্বই থাকুক না কেন, রাজনীতিতে সৌজন্য বজায় রাখা জরুরি (Panchayat Elections 2023)। ইদানীং কালে যদিও সেই সৌজন্য়বোধ হারিয়ে যেতে বসেছে। নির্বাচন এলেই আক্রমণ, কটাক্ষ কদর্য আকার ধারণ করে। তার মধ্যেই পারস্পরিক সহাবস্থান এবং সৌজন্যের নজির গড়লেন হাবরার দুই গৃহবধূ। একই পরিবারের সদস্য হলেও, আসন্ন পঞ্চায়েত নির্বাচনে পৃথক দলের প্রার্থী হয়েছেন দু'জনে। কিন্তু নির্বাচনী লড়াইকে সংসারের চৌহদ্দির মধ্যে ঢুকতে দেননি তাঁরা। তাঁদের এই পরিণত বোধ এলাকায় চর্চার বিষয় হয়ে উঠেছে (Habra News)। 


উত্তর ২৪ পরগনার হাবরায় এমনই রাজনৈতিক সৌজন্যবোধের পরিচয় মিলল। সেখানকার গুমা ২ নম্বর ব্লকে এবার পঞ্চায়েতের লড়াই জমে উঠেছে। ১৩২ নম্বর বুথে তৃণমূলের প্রার্থী হয়েছেন সুপর্ণা মণ্ডল। তাঁর জা গোপা মণ্ডল প্রার্থী হয়েছেন বিজেপি-র তরফে। অর্থাৎ বাংলার রাজনীতিতে এই মুহূর্তে প্রধান দুই প্রতিপক্ষ যে দুই দল, প্রার্থী হিসেবে একই পরিবারের দুই বধূকে বেছে নিয়েছে তারা। 


শাসকদল তৃণমূল এবং প্রধান বিরোধী দল বিজেপি-র মধ্যেকার দ্বন্দ্ব শুধু রাজনৈতিক নয়, আদর্শগত দ্বন্দ্বও জড়িয়ে তার সঙ্গে। তাই প্রতিপক্ষ শিবিরের প্রার্থী হওয়ার প্রভাব সংসারে কতটা পড়েছে, তা নিয়ে কৌতূহল দেখা দেওয়াই স্বাভাবিক।  তবে ভিন্ন রাজনৈতিক মতাদর্শে দীক্ষিত হলেও, সাংসারিক জীবনে দুই বধূর মধ্যে বিস্তর মিল রয়েছে বলে জানা যাচ্ছে। সংসারে রাজনীতির আঁচ পড়তে দেননি তাঁরা।


আরও পড়ুন: Magrahat News: চোর-ডাকাত-ধান্দাবাজদের টিকিট দেওয়া হয়েছে, নিজের দলের বিরুদ্ধেই ফের সরব বিধায়ক গিয়াসউদ্দিন


পঞ্চায়েত নির্বাচনে ভোটগ্রহণে বাকি মাত্র আর দু'দিন। তাই শেষ মুহূর্তে প্রচারে কোনও খামতি রাখতে নারাজ রাজনৈতিক দলগুলি। সুপর্ণা এবং গোপাও চেষ্টায় কোনও ত্রুটি রাখছেন না। সংসার সামলে প্রচার সারছেন, আবার বাড়ি ফিরেও ভাগাভাগি করে সংসারের কাজ উতরে দিচ্ছেন। দু'জনেরই সন্তান রয়েছে। দু'দিকই সামলাতে হচ্ছে তাঁদের। আবার জয় নিয়েও আত্মবিশ্বাসী দুই জা। তবে শেষ পর্যন্ত কে জেতেন, কে হারেন, তা নির্বাচনের ফল প্রকাশ হওয়ার পরই জানা যাবে। 


তবে ফলাফল যাই হোক না কেন, দুই যা যেভাবে সংসার সামলে, ব্য়ক্তিগত সম্পর্কে তিক্ততা না আসতে দিয়ে প্রচার সারছেন, পরস্পরকে আক্রমণ বা অসম্মান করার পথে হাঁটছেন না, তা স্থানীয়দের কাছে নজির হয়ে উঠেছে।  সুপর্ণা এবং গোপাও সাফ জানিয়েছেন, জয়ী হোন বা পরাজিত, সংসারে কোনও ভাবেই আঁচড় পড়তে দেবেনন না তাঁরা। মানুষ পছন্দের প্রার্থীকে বেছে নেবেন। জনতার সেই রায় মাথা পেতে নেবেন তাঁরা।  


এবারের পঞ্চায়েত নির্বাচনেও বরাবরের মতো অশান্তি, ঝামেলা লেগে রয়েছে। একই সঙ্গে পরিবারের সদস্য এবং আত্মীয়দের মধ্যে ভোটের লড়াইও এবারই বেশি করে চোখে পড়ছে। কোথাও ভাসুরের সঙ্গে প্রতিদ্বন্দ্বিতা বৌমার, কোথাও আবার দুই ভাইয়ের মধ্যেই লড়াই। দুই জায়ের মধ্যে লড়াইও এই প্রথম নয়