কলকাতা: ইডি তলব করলেও তাতে সাড়া দিচ্ছেন না সায়নী ঘোষ, এমনটাই দাবি করলেন রাজ্য তৃণমূলের মুখপাত্র কুণাল ঘোষ। তিনি জানিয়েছেন, ইডির তলবে আজ সিজিও কমপ্লেক্সে যাবেন না তৃণমূল যুব কংগ্রেসের সভানেত্রী সায়নী ঘোষ।


ভোট প্রচারের জন্যই সায়নী ঘোষ এদিন যাবেন না বলে জানাচ্ছেন কুণাল। তিনি বলেছেন, 'পঞ্চায়েত ভোটের প্রচারে আজ গলসিতে যাবেন সায়নী। ইডি-কে চিঠি দিয়ে জানিয়েছেন যুব তৃণমূলের সভানেত্রী। ইডির দাবি মতো ৫৩০ পাতার নথি পাঠিয়েছেন সায়নী। ভোটের পর এজেন্সি ডাকলেই যাবেন বলে জানিয়েছেন সায়নী।' এদিন সায়নী ঘোষকে মৌখিকভাবে তলব করা হয়েছিল বলে দাবি করেছে কুণাল ঘোষ। ভোটের আগে কেন তৃণমূলের নেতানেত্রীদের ডাকছে এজেন্সি, প্রশ্ন কুণালের।


এদিনই সায়নীর বাড়ির কেয়ারটেকার জানিয়েছেন, এদিন ভোর পাঁচটায় বাড়ি থেকে বেরিয়ে গিয়েছেন সায়নী ঘোষ। কিন্তু, কোথায় গিয়েছেন তা বললেন ওই কেয়ারটেকার।

বিরোধীদের দাবি:
সিপিএম নেতা তন্ময় ভট্টাচার্য বলেন, 'সায়নী কথা দিয়েছিলেন তিনি যাবেন, তাই তাঁর ইডি তলবে সাড়া দেওয়া উচিত।' ইডির তলবে সাড়া না দিলে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা কী পদক্ষেপ নেবে সেই প্রশ্নও করেছেন তিনি। 


গত শুক্রবার টানা প্রায় ১১ ঘণ্টা সায়নী ঘোষকে জিজ্ঞাসাবাদ করেছিল ED. ইডির স্ক্যানারে রয়েছে সায়নী ঘোষের গল্ফগ্রিনের ২টো ফ্ল্যাট। ২টো ফ্ল্যাটই ২০২০-২১ সালে কেনা হয়েছে। একটি ফ্ল্যাটের দাম ৩৫ লক্ষ টাকা। এই ফ্ল্যাটটি সায়নীর মায়ের নামে কেনা। অপর ফ্ল্যাটটির দাম ৮০ লক্ষ টাকা। এই ফ্ল্যাটটি কেনা হয় সায়নীর নামে। এছাড়াও, পৈত্রিক সূত্রে একটি বাড়ি রয়েছে সায়নীর।


ED-সূত্রে দাবি, জিজ্ঞাসাবাদের সময় ফ্ল্যাট নিয়ে প্রশ্ন করা হয় সায়নী ঘোষকে। জানতে চাওয়া হয়, ফ্ল্যাট কেনার টাকার উৎস কী?সূত্রের দাবি, যুব তৃণমূলের রাজ্য় সভানেত্রী সায়নী ঘোষ বলেন, একটি রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্ক থেকে ৬০ লক্ষ টাকা ঋণ নিয়ে ফ্ল্যাট কিনেছি। ED-র তদন্তকারী জানতে চান লোন সংক্রান্ত নথি কোথায়? উত্তরে সায়নী ঘোষ বলেন, এই মুহুর্তে সঙ্গে নেই। তখন ED-র তরফে বলা হয়, ওই নথি নিয়ে আসতে হবে। কত টাকা লোন নেওয়া হয়েছে? কীভাবে নেওয়া হয়েছে? EMI কোথা থেকে কাটা হয়? সব নথি দিতে হবে। ৫ই জুলাইয়ের মধ্যে এই নথি জমা দিতে হবে।


সূত্রের দাবি, ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টের তথ্য চাওয়া হয়েছিল। কটা অ্যাকাউন্ট রয়েছে, সেই তথ্য দিয়েছেন সায়নী ঘোষ। এর পাশাপাশি, ব্যাঙ্ক স্টেটমেন্টের কপিও চাওয়া হয়েছে।


কুন্তল ঘোষের সঙ্গে যোগাযোগ?
ওই দিন সায়নী ঘোষের কাছে জানতে চাওয়া হয়, কুন্তল ঘোষকে চেনেন? উত্তরে সায়নী বলেছিলেন, হ্যাঁ, চিনি। তবে, তেমন কোনও পরিচয় ছিল না বলে দাবি করেছিলেন তিনি। সূত্রের খবর, সায়নী বলেছিলেন, 'জেলায় কাজ করত। আমি জেলায় গেলে দেখা হত। কুন্তল নিজেকে সোশাল ওয়ার্কার বলে পরিচয় দিত। আমাকে বলেছিল, একটা কলেজ আছে।'


এরপর জানতে চাওয়া হয়, কুন্তল ঘোষের সঙ্গে কোনও দিন কোনও আর্থিক লেনদেন হয়েছিল? তখন নাকি সায়নী বলেছিলেন, কোনও দিন কুন্তলের থেকে কোনও টাকা নেননি তিনি।  ফ্ল্যাটের বুকিংয়ের টাকা তাঁর সেভিংস অ্যাকাউন্ট এবং বাড়ির লোকের থেকে নিয়ে দেওয়া হয়েছিল বলে জানিয়েছিলেন তিনি। ED-সূত্রে দাবি, ব্যাঙ্ক ঋণ সংক্রান্ত নথি ও ব্যাঙ্ক স্টেটমেন্ট জমা দেওয়ার পর তা খতিয়ে দেখে পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।


আরও পড়ুন: স্কুল শেষ করে কলেজে? পাখির চোখ হোক 'পার্সোনাল ব্র্যান্ডিং'