ময়ূখ ঠাকুর চক্রবর্তী, কলকাতা: পঞ্চায়েত নির্বাচনে বাকি আর মাত্র ৪৮ ঘণ্টা। আর এমন সময়ে, ভোট না দেওয়ার আহ্বান জানিয়ে প্ল্যাকার্ডের ছয়লাপ দেখা গেল নিউটাউনের অ্যাকশন এরিয়া ওয়ান এলাকায় (New Town News)। এই নিয়ে সরগরম। জ্যাংড়া-হাতিয়াড়া ২ নম্বর পঞ্চায়েত এলাকা। শুরু হয়েছে রাজনৈতিক আকচা-আকচি (Panchayat Elections 2023)।
বিরাট বিরাট আবাসন, ঝাঁ চকচকে রাস্তা, নামী হোটেল, শপিং মল, আইটি সেক্টর, সঙ্গে লাইফলাইন মেট্রোও। সবকিছুই রয়েছে এই পঞ্চায়েতে।
কিন্তু তাতেও নাকি অখুশি এই পঞ্চায়েতের বাসিন্দারা! নিউটাউন-কলকাতা ডেভেলপমেন্ট অথরিটির অন্তর্গত এই এলাকাটি, জ্যাংড়া-হাতিয়াড়া ২ নম্বর গ্রাম পঞ্চায়েতের অন্তর্গত।
ভোটার আছেন আনুমানিক ১৪ হাজার। আর পঞ্চায়েত ভোট যখন দুয়ারে, ঠিক তখন নিউটাউনের অ্যাকশন এরিয়া ওয়ান এবং সংলগ্ন এলাকায় বিভিন্ন আবাসনের নীচে। রাস্তার মোড়ে মোড়ে নজরে পড়ছে এই সমস্ত প্ল্যাকার্ড, তাতে পঞ্চায়েত নির্বাচনে ভোট না দেওয়ার আহ্বান জানানো হয়েছে। নীচে লেখা - রেসিডেন্টস অফ নিউটাউন।
কিন্তু, কারা এই প্ল্যাকার্ড লাগালেন? কখন লাগালেন? এসব নিয়ে কিন্তু নিউটাউনের এই এলাকার বাসিন্দারা কেউই মুখ খুলতে রাজি নন। জ্যাংড়া-হাতিয়াড়া ২ নম্বর গ্রাম পঞ্চায়েতের মোট আসন সংখ্যা ৩৬। এর মধ্যে ৮টি আসন NKDA-র অন্তর্ভূক্ত এলাকার মধ্যেই পড়ছে। ভোটার থাকেন আনুমানিক প্রায় ১৪ হাজার।
তাই নিউটাউনের অ্যাকশন এরিয়া ওয়ান এলাকাটি যে কোনও রাজনৈতিক দলের কাছেই অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। আর ভোটের মুখে সেই এলাকাতেই এই ধরনের প্ল্যাকার্ড লাগানোর পিছনে রাজনৈতিক অভিসন্ধি দেখছে বিভিন্ন দল। সিপিএম নেতা সপ্তর্ষি দেব বলেন, "এর পিছনে শাসকদল আছে। গত পুর নির্বাচনে বিধাননগর দ্বিজেন মুখোপাধ্যায় মারা গিয়েছিলেন, তার ভোট পড়ে গিয়েছিল। এই ধরনের প্ল্যাকার্ড দিয়ে বিভ্রান্তি ছডানোর চেষ্টা। তাই কোনও সংগঠনের নাম লেখা নেই। সেই বাসিন্দারা বসে থাকলে, তৃণমূল প্রক্সি দিতে পারবে।" বিজেপি-র মুখপাত্র শমীক ভট্টাচার্যেরও দাবি, এর পিছনে তৃণমূলের চক্রান্ত রয়েছে বলে।
বিজেপি থেকে সিপিএম, প্রত্যেকেই এই প্ল্যাকার্ড-কাণ্ডের পিছনে অন্য সমীকরণ খুঁজে পেলেও, তৃণমূল তা মানতে নারাজ। রাজারহাট-নিউটাউনের তৃণমূল বিধায়ক তাপস চট্টোপাধ্যায় বলেন, "নিউটাউনের এই আরবান এলাকাটা মৌজার মধ্যে ঢুকে গিয়েছে। এটা নিয়ে ববি হাকিমের সঙ্গে একমত। আমরা বিষয়টি খতিয়ে দেখছি।"
নিউটাউনের অ্যাকশন এরিয়া ওয়ান এলাকার ভোটারদের মনের কথা জানা সম্ভব হয়নি। তবে আড়ালে আবডালে কান পাতলে শোনা যায় এই এলাকার পুরসভার তকমা পাওয়ার চাহিদার কথা। তা কি অদূর ভবিষ্যতে সম্ভব হবে? ঘড়ির কাঁটা ছুটছে।