সুদীপ চক্রবর্তী, উত্তর দিনাজপুর: বাড়ি থেকে ভোট দিতে বেরিয়ে শেষ অবধি আর ফেরেননি। পরে বাড়ি থেকে কিছু দূরে তৃণমূল কর্মীর দেহ উদ্ধার হয়েছিল। উত্তর দিনাজপুরের 'হেমতাবাদকাণ্ডে পুলিশ কোনও সদর্থক ভূমিকা গ্রহণ করেনি' বলে অভিযোগ তুলে আন্দোলনে নামলেন পরিবারের সদস্য ও গ্রামবাসীরা। রবিবার দুপুরে হেমতাবাদের বাঙ্গালবাড়ি মোড়ে রাজ্য সড়ক অবরোধ করা হয়। চলে তুমুল বিক্ষোভ।


এই আন্দোলনে অধিকাংশ মহিলা সামিল হন। তাঁদের একটাই দাবি, নারায়ণ সরকারের মৃত্যুকাণ্ডে বিচার চাই। আন্দোলনকারীদের অভিযোগ, 'গিয়াশীলের বাসিন্দা নারায়ন সরকারকে হত্যা করা হয়েছে।' এই ঘটনার পর ২৪ ঘণ্টা কেটে গেলেও পুলিশ এখনও কোনও ব্যবস্থাই নেয়নি। উল্টে আত্মহত্যার তত্ত্ব খাঁড়া করা হচ্ছে বলে অভিযোগ। যা মানতে রাজি নন এলাকার মানুষ। অবিলম্বে দোষীকে খুঁজে বের করে তার শাস্তির দাবি জানিয়েছেন আন্দোলনকারীরা।


পঞ্চায়েত ভোটে সন্ত্রাস নিয়ে বিস্ফোরক ডেবরার তৃণমূল বিধায়ক ও প্রাক্তন মন্ত্রী হুমায়ুন কবীর (Humayun Kabir)। প্রাক্তন পুলিশকর্তা হুমায়ুন কবীর জানিয়েছেন,  'বাঙালি হিসেবে লজ্জিত, মর্মাহত, মাথা হেঁট হয়ে যাচ্ছে লজ্জায়। আর কতদিন এসব চলবে, যুগের পর যুগ চলে যাচ্ছে, কিন্তু আমরা পাল্টাতে পারছি না। আমি অত্যন্ত ক্ষুব্ধ। ২০০৮ সালে বাম আমলে মুর্শিদাবাদে ভয়াবহ ঘটনা ঘটেছিল, ভয়ঙ্কর নাড়া দিয়েছিল।এই সন্ত্রাসের জন্য দায়ী সব রাজনৈতিক দলগুলি।


তিনি আরও বলেন, '২০০৮ সালে দায়িত্বে থাকার সময় বর্ধমানে ব্যাপক তল্লাশি চালিয়েছিলাম। প্রচুর অস্ত্র, বোমা উদ্ধার করেছিলাম। অভিষেক বলেছিলেন বিরোধী প্রার্থীরা যেন মনোনয়ন দিতে পারে। আমি নিজে থেকেই বিরোধীদের মনোনয়ন দিয়েছিলাম। এত খুনোখুনি, মারামারি, কেন জিরো করতে পারছি না ? মৃত্যু কাম্য নয়, মৃতের পরিবারই জানেন এটা কতখানি কষ্টকর। পরিস্থিতি সামাল দিতে না পারা কমিশন, প্রশাসন, রাজনৈতিক দলগুলির ব্যর্থতা। ভয়মুক্ত, রক্তহীন নির্বাচন করতে পারলাম না।'


আরও পড়ুন, আগামীকাল প্রায় ৭০০ বুথে পুনর্নির্বাচন, আপনার বুথে হবে কি ফের ভোট ? 


প্রসঙ্গত, ভোটের দিনক্ষণ ঘোষণার পর থেকেই রাজ্যে একাধিক হিংসা-খুনের ঘটনা ঘটেছে। এমনকি ভোটের পরেও অশান্তি অব্যহত। এমনকি রণক্ষেত্র মুর্শিদাবাদ। সালার থেকে সামশেরগঞ্জ, মুহুর্মুহু বোমাবাজি। তৃণমূল ও নির্দলদের মধ্যে এলাকা দখল ঘিরে সংঘর্ষ। বন্দুক হাতে দাপাদাপি। একের পর এক বুথে ব্যালট লুঠ। পাশাপাশি মুর্শিদাবাদের হরিহরপাড়ায় তুলকালাম হয়। এসইউসিআই কর্মীর ওপর আগ্নেয়াস্ত্র নিয়ে হামলার ঘটনা ঘটে। দোকান থেকে বের করে বেধড়ক মারধরের অভিযোগ উঠেছে। তৃণমূল প্রার্থীর স্বামীর বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠেছে।