শুভেন্দু ভট্টাচার্য, কোচবিহার: ভোট পরবর্তী হিংসা (Post Poll Violence in Cooch Behar) অব্যাহত কোচবিহারে। কোচবিহারের তুফানগঞ্জের দক্ষিণ বালাভূত ও চর বালাভূত এলাকায় বেশ কিছু সিপিএম কর্মীর বাড়িতে ভাঙচুর ও লুঠপাটের ঘটনা ঘটেছে অভিযোগ তৃণমূলের (TMC) বিরুদ্ধে। ঘটনাস্থলে যান পুলিশ এবং কেন্দ্রীয় বাহিনী জওয়ানরা। যদিও অভিযোগ অস্বীকার করেছে শাসকদল (TMC)। তৃণমূল পাল্টা সিপিএমের বিরুদ্ধে হামলার অভিযোগ করেছে তাঁরা।
তুফানগঞ্জে তৃণমূল কর্মীকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে আঘাতের অভিযোগ। অভিযোগের তীর বিজেপির বিরুদ্ধে। যদিও অভিযোগ অস্বীকার করেছে গেরুয়া শিবির।ঘটনাটি ঘটে তুফানগঞ্জ ১ ব্লকের অন্তর্গত বলরামপুর ১ গ্রাম পঞ্চায়েতের অন্তর্গত ছাট পানিসালা এলাকায়। জানা যায়, ওই ব্যাক্তির নাম শঙ্কর দাস। তৃণমূলের অভিযোগ, 'এদিন তিনি দোকানে তেল আনতে যান। সেসময় অতর্কিতভাবে হামলা চালায় বিজেপি আশ্রিত দুষ্কৃতীরা।'
ঘটনার গুরুতর আহত হন ওই ব্যক্তি। বর্তমানে তিনি তুফানগঞ্জ মহকুমা হাসপাতাল চিকিৎসাধীন রয়েছেন। যদিও তাঁদের বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ অস্বীকার করেছেন কোচবিহার জেলার সম্পাদক উজ্জ্বল কান্তি বসাক। তিনি দাবি করেন, নিজেরাই গন্ডগোল করে বিজেপির ঘাড়ে দোষ চাপাচ্ছে। বিজেপি এই ধরণের কোনও ঘটনার সঙ্গে যুক্ত নয়।' প্রসঙ্গত, পঞ্চায়েত ভোটের দিনক্ষণ ঘোষণার পর থেকেই রাজ্য জুড়ে হিংসার ঘটনা শুরু হয় জেলায় জেলায়। মনোনয়ন পর্ব চলাকালীনও অশান্তির ঘটনার বহর বাড়তে থাকে। ভোটের আগে ও ভোটের দিন কম রক্তাক্ত হয়নি বাংলা। যা নিয়ে সরব হয়েছেন ইতিমধ্যেই রাজ্যের একাধিক দলের নেতা-নেত্রীরা।
পঞ্চায়েত ভোটে সন্ত্রাস নিয়ে বিস্ফোরক ডেবরার তৃণমূল বিধায়ক ও প্রাক্তন মন্ত্রী হুমায়ুন কবীর (Humayun Kabir)। প্রাক্তন পুলিশকর্তা হুমায়ুন কবীর জানিয়েছেন,'বাঙালি হিসেবে লজ্জিত, মর্মাহত, মাথা হেঁট হয়ে যাচ্ছে লজ্জায়। আর কতদিন এসব চলবে, যুগের পর যুগ চলে যাচ্ছে, কিন্তু আমরা পাল্টাতে পারছি না। আমি অত্যন্ত ক্ষুব্ধ। ২০০৮ সালে বাম আমলে মুর্শিদাবাদে ভয়াবহ ঘটনা ঘটেছিল, ভয়ঙ্কর নাড়া দিয়েছিল।এই সন্ত্রাসের জন্য দায়ী সব রাজনৈতিক দলগুলি।'
আরও পড়ুন, 'ভোটের পরেও হিংসা অব্যাহত', কার দিকে অভিযোগের আঙুল সুকান্তর ?
তিনি আরও বলেন, '২০০৮ সালে দায়িত্বে থাকার সময় বর্ধমানে ব্যাপক তল্লাশি চালিয়েছিলাম। প্রচুর অস্ত্র, বোমা উদ্ধার করেছিলাম। অভিষেক বলেছিলেন বিরোধী প্রার্থীরা যেন মনোনয়ন দিতে পারে। আমি নিজে থেকেই বিরোধীদের মনোনয়ন দিয়েছিলাম। এত খুনোখুনি, মারামারি, কেন জিরো করতে পারছি না ? মৃত্যু কাম্য নয়, মৃতের পরিবারই জানেন এটা কতখানি কষ্টকর। পরিস্থিতি সামাল দিতে না পারা কমিশন, প্রশাসন, রাজনৈতিক দলগুলির ব্যর্থতা। ভয়মুক্ত, রক্তহীন নির্বাচন করতে পারলাম না।'