উজ্জ্বল মুখোপাধ্যায়, রাজা চট্টোপাধ্যায় ও রাজীব চৌধুরী: মনোনয়নপত্র জমা দেওয়া নিয়ে চরমে পৌঁছেছিল অশান্তি। মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার পরও শাসকদলের দাদাগিরি চলছে বলে অভিযোগ বিরোধীদের (Panchayat Elections 2023)। কাউকে চাপ, কাউকে আবার হুমকি, মনোনয়ন প্রত্য়াহারের জন্য় নানা ভাবে চেষ্টা করা হচ্ছে বলে অভিযোগ করলেন ডায়মন্ড হারবারের (Diamond Harbour News) সিপিএম (CPM) এবং কংগ্রেস (Congress) প্রার্থীরা। মনোনয়নের সময়সীমা শেষ হওয়া পর্যন্ত প্রার্থীদের গোপন ডেরায় রাখার কৌশল নিয়েছে বিজেপি এবং কংগ্রেস।


ডায়মন্ড হারবার তৃণমূল সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের সংসদীয় এলাকা। এই ডায়মন্ড হারবারের নেত্রা গ্রাম পঞ্চায়েতের সিপিএম প্রার্থী গৌতম হালদার এবং আবদুল্লা শেখ। তাঁদের দাবি, ক্রমাগত হুমকি-শাসানির মুখে, মনোনয়ন জমার থেকেও বেশি চ্যালেঞ্জিং ছিল, মনোয়নয় প্রত্যাহার না করা।


স্থানীয়দের দাবি, সন্ত্রাসের পরিস্থিতি এখনও অব্যাহত। বাড়ি ফিরতে পারছেন না অনেকেই। মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার পর বাড়ি ফিরতে পরেননি। ডায়মন্ড হারবারের নেত্রা গ্রাম পঞ্চয়েতের সিপিএম প্রার্থী  গৌতম বলেন, "ভয়ঙ্কর সন্ত্রাস, বাড়িতে প্রতিদিন তৃণমূলের লোক পুলিশ নিয়ে এসে ভয় দেখাচ্ছে। আমি এই বাড়ি, ওই বাড়ি পালিয়ে বেড়াচ্ছি। এলাকায় ফিরতে পারছি না।"


আরও পড়ুন: Panchayat Election : পুলিশের সামনেই কংগ্রেস নেতাদের মারধর, কেড়ে নেওয়া হল ফর্ম, বিডিও অফিসে ধর্নায় অধীর


নেত্রা গ্রাম পঞ্চায়েতে সিপিএম-এর প্রার্থী হয়েছেন আবদুল্লা শেখ। তাঁর বক্তব্য, "বাড়িতে কেউ নেই। সবাইকে পাঠিয়ে দিয়েছি।" এই নেত্রা গ্রাম পঞ্চায়েতেই কংগ্রেস প্রার্থী সরবানু গিরি বৈদ্য। নেত্রা থেকে ৪০ কিলোমিটার দূরে এক আত্মীয়ের বাড়িতে কার্যত লুকিয়ে রয়েছেন বলে জানিয়েছেন তিনি। একদিন আগেও রাতে তাণ্ডব চালানো হয়েছে বলে শাসকদলের বিরুদ্ধে অভিযোগ তাঁর।

তবে গৌতম, আবদুল্লা এবং সরবানু পারলেও, মনোনয়ন প্রত্যাহার করতে বাধ্য হয়েছেন বলে দাবি সিপিএম প্রার্থী পূজা। ডায়মন্ড হারবারে সিপিএম প্রার্থী তিনি। তাঁর বক্তব্য, "আমার এলাকার সবাই প্রত্যাহার করে নিয়েছে, ভয় দেখাচ্ছে, ফোনে থ্রেট করছে। আমি প্রথমবার প্রার্থী হয়েছিলাম কিন্তু, আমরা মনোনয়ন রাখতে পারলাম না। নির্বাচন কমিশন, পুলিশ, এসডিপিও কেউ সাহায্য করল না।"


মনোনয়ন পর্বে ব্যাপক অশান্তির পর সওকত মোল্লাকে পর্যবেক্ষক নিয়োগ করেছে তৃণমূল। বিরোধীদের মনোনয়ন প্রত্যাহার নিয়ে প্রশ্ন করলে তিনি বলেন, "এসব কিচ্ছু না, কোর্ট বলেছি সিসিটিভি সংরক্ষণ করতে, ধরুন জীবনতলা, কোনও অভিযোগ পেলে সব প্রার্থী প্রত্যাহার করে নেব।"

জলপাইগুড়িতে মঙ্গলবার ছিল মনোনয়নপত্র প্রত্যাহারের শেষ দিন। তার আগে, জলপাইগুড়ির সদর ব্লকের তিনটি গ্রাম পঞ্চায়েতের দলীয় প্রার্থীদের 'সেফ হাউসে' এনে রেখেছে বিজেপি। ভোট পর্ব না মেটা পর্যন্ত তাঁরা এখানেই থাকবেন বলে জানিয়েছেন বিজেপি প্রার্থীরা।


একই ছবি বহরমপুরে। জেলা কংগ্রেস কার্যালয়ে শতাধিক দলীয় প্রার্থীকে এনে রেখেছে কংগ্রেস। পাছে শাসকের নজর পড়ে!