কলকাতা: গ্রাউন্ড জিরো ঘুরে রাজভবনে ফিরেছেন। তা নিয়ে রাজনৈতিক তরজা চলছে। রাজ্যপাল সমান্তরাল সরকার চালানোর চেষ্টা করছেন, এক্তিয়ার বহির্ভূত কাজ করছেন বলে উঠছে অভিযোগ। সেই আবহেই প্রাক নির্বাচনী হিংসা নিয়ে রাজ্য নির্বাচন কমিশনার রাজীব সিন্হাকে (Rajiv Sinha) বেনজির আক্রমণ করলেন রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস (CV Ananda Bose)। তিনি নিয়োগ করলেও, রাজ্যপাল দায়িত্বপালনে ব্য়র্থ বলে মন্তব্য করেছেন (WB Election Commission)। তা নিয়ে ফের রাজ্যপালের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে শাসকদল তৃণমূল (TMC)। (Panchayat Elections 2023)


পঞ্চায়েত নির্বাচনের ভোটগ্রহণে ৪৮ ঘণ্টারও কম সময় বাকি যখন, সেই সময়. বৃহস্পতিবার দুপুরে সাংবাদিক বৈঠক করেন রাজ্যপাল বোস। সেখান থেকেই সরাসরি নির্বাচন কমিশনার রাজীবকে ভর্ৎসনা করেন তিনি। বলেন, "রাজ্য নির্বাচন কমিশনার আপনি আপনার দায়িত্ব পালনে ব্যর্থ। আমি আপনাকে নিয়োগ করেছিলাম। কিন্তু আপনি রাজ্যবাসীকে হতাশ করেছেন। পঞ্চায়েত নির্বাচনে রাজ্যের গণতন্ত্রকে হত্যা করা হয়েছে। নির্বাচন কমিশনের উচিত নিজেদের দায়িত্ব যথাযথ ভাবে পালন করা। বাংলার মাথা এখন হেঁট হয়ে যাচ্ছে।"


তাঁর এই মন্তব্যে তীব্র প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন তৃণমূলের রাজ্য সম্পাদক কুণাল ঘোষ। তাঁর বক্তব্য, "রাজ্যপাল বিজেপি-র দালাল, বিজেপি-র এজেন্ট। রাজ্যপালের কিছু মনে হলে তিনি কমিশবকে চিঠি দিতে পারেন, রিপোর্ট পাঠাতে পারেন দিল্লিতে। তা না করে, ভোটের প্রচারের শেষ দিনে, সব দল যখন শেষ মুহূর্তের প্রচারে ব্যস্ত, উনি বিজেপি-র হয়ে প্রচার করলেন। উনি যে রাজনীতি করছেন, তা আরও একবার প্রমাণিত হল। উনি যে প্রবচন দিলেন আজ, তাতে আশারাম বাপুর মতো ওঁকে আনন্দরাম বাপু বলতে ইচ্ছে করছে। রাজনীতিই করছেন যখন, ভোটে দাঁড়ালেন না কেন? ১১ জুলাইয়ের পর উনি মুখ দেখাতে পারবেন না। বাক্স-প্যাঁটরা নিয়ে তৈরি থাকুন।"


আরও পড়ুন: CV Ananda Bose: 'আমি নিয়োগ করেছিলাম, কিন্তু আপনি দায়িত্ব পালনে ব্যর্থ', নির্বাচন কমিশনারকে তিরস্কার রাজ্যপালের


যদিও রাজ্যপাল কিছু অন্য়ায় বলেননি বলে মত সিপিএম সাংসদ বিকাশরঞ্জন ভট্টাচার্য। তাঁর কথায়, "রাজ্যপাল রাজ্যের সাংবিধানিক প্রধান। তিনি সমস্যা দেখলে বলতেই পারেন। তাতে তৃণমূলের আপত্তির কী আছে?" যদিও তৃণমূল সাংসদ শান্তনু সেনের বক্তব্য, পূর্বসূরি জগদীপ ধনকড়ের সঙ্গে প্রতিযোগিতায় নেমেছেন রাজ্যপাল। বিজেপি-র পদলেহন করছেন। আগের রেকর্ড দেখুন, দেখুন কী ছিল পরিস্থিতি, আর এখন কী। তৃণমূলের সরকার আসার পর দেড় লক্ষ মনোনয়ন দিতে পেরেছেন বিরোধীরা। আপনি বিজেপি-র ভাষায় কথা বলছেন। ধনকড়ের সঙ্গে প্রতিযোগিতা করছেন। ধনকড় উপরাষ্ট্রপতি হয়েছেন। আপনি ভাবছেন আপনিও বড় আসন পাবেন।" সব মিলিয়ে রাজ্যপালের মন্তব্যে রাজ্য-রাজভবন সংঘাত আরও বাড়ল মনে করছে রাজনৈতিক মহল।