কলকাতা: ভোট গণনার দিনেও এড়ানো গেল না অশান্তি। গণনার দিন কড়া নিরাপত্তা বলয় তৈরি করা হয়েছে বিভিন্ন গণনাকেন্দ্রে। দায়িত্বে রয়েছে কেন্দ্রীয় বাহিনী, রাজ্য পুলিশ, তবুও সকাল থেকেই অশান্তির ঘটনা সামনে এসেছে। মালদা থেকে বীরভূম, হাওড়া থেকে উত্তর ২৪ পরগনা- নানা জেলায় অশান্তির খবর পাওয়া গিয়েছে। 


পূর্ব বর্ধমান:
এই জেলায় গলসি ১ নম্বর ব্লকে বিরোধী কাউন্টিং এজেন্টদের মারধর করার অভিযোগ উছেথে তৃণমূলের বিরুদ্ধে। রাজ্যের শাসক দলের হামলায় সিপিএম এজেন্ট হাসপাতালে ভর্তি বলে অভিযোগ। কাটোয়াতেও অশান্তির ঘটনা ঘটেছে। কাটোয়া ১ নম্বর ব্লকের গণনাকেন্দ্রে সিপিএম, বিজেপি এজেন্টদের ঢুকতে বাধা দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। হামলা, গাড়ি ভাঙচুরের ঘটনা সামনে এসেছে। সিপিএম সমর্থকদের মারধরের অভিযোগও উঠেছে। ১ সিপিএম সমর্থক হাসপাতালে ভর্তি। 


বীরভূম:
অনুব্রতহীন বীরভূমেও অশান্তি ছবি। নানুরে গণনার আগেই ঝামেলা হয়েছে। সেখানে গণনাকেন্দ্রে সিপিএম ও কংগ্রেস এজেন্টদের ঢুকতে বাধা দেওয়া হয়েছে। কীর্ণাহারেও মারধরের অভিযোগ তুলে রাস্তা অবরোধ করা হয়েছে।  


পশ্চিম বর্ধমান:
গণনার আগেই পশ্চিম বর্ধমানের বারাবনি উত্তপ্ত হয়ে ওঠে। ভোট গণনা শুরুর আগেই গণনাকেন্দ্রের বাইরে তৃণমূল ও বিজেপির মধ্যে তুমুল বচসা বেধে যায়, হয়েছে হাতাহাতিও।


হাওড়া:
ভোটের দিনও উত্তপ্ত হয়েছিল হাওড়া জেলার বিভিন্ন এলাকা। গণনার দিনেও ছবিটা পাল্টাল না। হাওড়ার ডোমজুড়ের বালি দুর্গাপুর পল্লীমঙ্গল বিদ্যামন্দিরের গণনা কেন্দ্র থেকে সিপিএম এবং বিজেপি কাউন্টিং এজেন্টদের মারধর করে বের করে দেওয়ার অভিযোগ তৃণমূলের বিরুদ্ধে। মাথা ফাটল বিরোধী সমর্থকের। কেন্দ্রীয় বাহিনী ও রাজ্য পুলিশের উপস্থিতিতেই মারধর করা হয় বলে অভিযোগ। 


বাগনানেও অশান্তির ঘটনা ঘটেছে। বাগনান ১ নম্বর ব্লকের গণনাকেন্দ্র বাগনান আদর্শ হাইস্কুলে বিরোধী দলের কাউন্টিং এজেন্টদের ঢুকতে বাধা দেওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ। ওই ঘটনার প্রতিবাদে বাগনান থানা ঘেরাও করা হয়। রাস্তাও অবরোধ করেছে সিপিএম ও বিজেপি। পরিস্থিতি সামলাতে নেমেছে পুলিশ এবং ব়্যাফ। 


সাঁকরাইলে গণনাকেন্দ্রের গেট ভেঙে ভিতরে ঢোকার চেষ্টা করে বিভিন্ন রাজনৈতিক দল। পরিস্থিতি সামলাতে লাঠিচার্জ করে পুলিশ। পাঁচলার নয়াচকেও গণনাকেন্দ্রে ঢুকতে বাধা বিরোধী এজেন্টদের, অভিযোগ এমনটাই। প্রতিবাদে ১৬ নম্বর জাতীয় সড়ক অবরোধ করেছে বিজেপি। 


উত্তর ২৪ পরগনা:
ভোটের দিনের মতোই গণনার দিনেও অশান্ত এই জেলা। গণনা ঘিরে অশান্ত হয়েছে উত্তর ২৪ পরগনার গাইঘাটা। পলিটেকনিক কলেজে বেআইনি জমায়েত ভাঙতে লাঠি উঁচিয়ে তাড়া কেন্দ্রীয় বাহিনীর। ভোট গণনা শুরুর আগে উত্তর ২৪ পরগনায় সিপিএম প্রার্থীদের অপহরণের অভিযোগ উঠেছে। আমডাঙার চণ্ডীগড় ও বোদাই গ্রাম পঞ্চায়েতে গণনাকেন্দ্রের সামনে থেকেই ২ সিপিএম প্রার্থীকে অপহরণের অভিযোগ উঠেছে।


মালদা:
মালদার ইংরেজবাজারে মালদা জেলা স্কুলের সামনে কাউন্টিং হলের সামনে চূড়ান্ত অব্য়বস্থার অভিযোগ উঠেছে। গ্রাম পঞ্চায়েত প্রার্থীদের ঢোকার অনুমতি ঘিরে বিশৃঙ্খলার অভিযোগ উঠেছে। 


দক্ষিণ ২৪ পরগনা:
মনোনয়ন পর্ব থেকেই বারবার অশান্ত হয়েছে এই জেলা। গণনা শুরুর আগেই উত্তপ্ত হয়ে ওঠে ডায়মন্ডহারবার। সেখানে ফকির চাঁদ কলেজের সামনে উত্তেজনা ছড়ায়। গণনাকেন্দ্রের সামনে বোমাবাজির ঘটনা ঘটেছে। বিরোধী এজেন্টদের ঢুকতে বাধা দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। বিষ্ণুপুরেও তৃণমূলের বিরুদ্ধে গণনাকেন্দ্রে বিরোধী দলের এজেন্টদের ঢুকতে বাধা দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। বাম,কংগ্রেস এবং বিজেপি একসঙ্গে পথ অবরোধ করে 


মুর্শিদাবাদ: 
ভোট পর্বের গোড়া থেকে রক্তাস্নাত হয়েছে মুর্শিদাবাদ। একাধিক প্রাণহানি হয়েছে। গণনার দিনেও অশান্তির ঘটনা ঘটেছে এই জেলায়। হরিহরপাড়ায় তৃণমূল প্রার্থী ও তাঁর স্বামীকে মারধর করার, গাড়ি ভাঙচুরের অভিযোগ উঠেছে। গণনাকেন্দ্রে যাওয়ার সময় আটকানো হয়। সিপিএমের বিরুদ্ধে এজেন্ট কার্ড কেড়ে নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। ভয়ে কেঁদে ফেলেছেন তৃণমূল প্রার্থী। যদিও অভিযোগ অস্বীকার করেছে সিপিএম। উল্টোদিকে জাঙ্গিপাড়ায় সিপিএম আক্রান্ত। সিপিএমের পার্টি অফিসে ঢুকে পুলিশের লাঠিচার্জের ঘটনা ঘটেছে।


পশ্চিম মেদিনীপুর:
কেশপুর ব্লকের পরিবর্তে মেদিনীপুরে গণনাকেন্দ্রের দাবিতে জেলাশাসকের অফিসের বাইরে বিজেপি বিক্ষোভ দেখিয়েছে। গণনাকেন্দ্রে ঢুকতে দেওয়া হচ্ছে না।

আরও পড়ুন: 'রাজনৈতিক কন্ট্রোলরুম করে দুষ্কৃতীদের নিয়ন্ত্রণ করা হচ্ছে, ব্যবস্থা নেওয়া হবে' বার্তা রাজ্যপালের