বিটন চক্রবর্তী, পশ্চিম মেদিনীপুর : পঞ্চায়েত নির্বাচনের আর বাকি মাত্র ৯ দিন। রাজনীতির ময়দান সরগরম। অশান্ত জেলা থেকে জেলা। গুলি, বোমা, বন্দুকের আওয়াজ। চলে যাচ্ছে একের পর এক প্রাণ। পঞ্চায়েত ভোটের আগেই চারিদিক থেকে আসছে হিংসার অভিযোগ। সেই সঙ্গে বিভিন্ন দলের নেতা-নেত্রীদের হুঙ্কার-হুঁশিয়ারি তো আছেই। কিন্তু যদি একই পরিবারের মানুষ দাঁড়ায় দুই প্রতীক নিয়ে ? যদি হয় যুযুধান দুই পক্ষ ? 



এমনটাই ঘটেছে পূর্ব মেদিনীপুরের মহিষাদলে।  লড়াইতে একই পরিবারের দুই গৃহবধূ। একজন বিজেপির প্রার্থী, অন্যজন তৃণমূলের।  লড়াইয়ের ময়দানে নতুন মুখ দুই জা-এর ভোটপ্রচারও সরগরম । 


জায়ে জায়ে যুদ্ধ 

পারিবারিক সম্পর্কে তারা দুই জা। একটা সময় তারা দুজনে মিলে সামলেছেন ঘর সংসার। ভাগাভাগি করে কেউ করতেন রান্না-বান্না, কেউ বা ধোয়ামোছা। কিন্তু বছর কয়েক আগে তাঁদের সংসার আলাদা হয়ে গেলেও দুই'জায়ের মধ্যে সম্পর্কে কখনও চিড় ধরেনি। এবার পূর্ব মেদিনীপুর জেলার মহিষাদলের এই দুই গৃহবধূ পাপিয়া দাস ও শ্রাবন্তী দাস রাজনীতির ময়দানে পরষ্পরের প্রতিপক্ষ।


মহিষাদলের সতীশ সামন্ত গ্রাম পঞ্চায়েতের কমলপুর গ্রাম সংসদের ২০ নং বুথে  বড় জা পাপিয়া লড়ছেন তৃণমূলের প্রতীকে, আর ছোট জা শ্রাবন্তী লড়ছেন বিজেপির টিকিটে। দুই জা-ই এবারে লড়াইয়ের ময়দানে নবাগত। প্রচারে বেরিয়ে একজন রাজ্য সরকারের সাফল্য তুলে ধরছেন,  অন্যজন কেন্দ্রীয়  সরকারের সাফল্য তুলে ধরছেন।  ঘর সংসার সামলে লড়াইয়ের ময়দানে নেমে জেতার ব্যাপারে দুজনেই আশাবাদী। তবে রাজনীতির প্রতিপক্ষ দুই দলের এই টানাপোড়েন তাঁদের পারিবারিক জীবনে কোনও প্রভাব ফেলবে না বলেই দাবি করেছেন দুই জা। 


শ্বশুর জামাইয়ের লড়াই 

শুধু দুই জা নয়। বাংলায় পঞ্চায়েত ভোটের ময়দানে প্রতিপক্ষ শ্বশুর - জামাইও। দক্ষিণ ২৪ পরগনার মথুরাপুর-২ ব্লকের নন্দকুমারপুর পঞ্চায়েতের ২৭৩ নম্বর বুথ। এই বুথে লড়াই শ্বশুর বনাম জামাইয়ের। তৃণমূলের প্রতীকে লড়ছেন জামাই শুষেনজিৎ মন্ডল। অন্যদিকে বিজেপির প্রার্থী হয়েছেন তাঁরই শ্বশুর পালান পাইক।

স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে,  নন্দকুমারপুরের এই বুথ বরাবরই বামেদের দখলে। কিন্তু সিপিএমের বিগত দুবারের বিজয়ী প্রার্থী পালান পাইক বিজেপিতে যোগ দিয়েছিলেন। এবারের নির্বাচনে বিজেপির প্রতীকে লড়াই করছেন তিনি। তাঁর বিরুদ্ধেই প্রচারে সুর চড়াচ্ছেন জামাই সুষেনজিৎ মন্ডল। দুই প্রার্থীই সারাদিন ভরে প্রচার চালালেও রাজনীতির বাইরে গিয়ে শ্বশুর জামাইয়ের সম্পর্কে নাকি কোনও চিড় ধরেনি।