কোচবিহার: ঠাঁটাপোড়া রোদে মানুষ এসেছিলেন প্রধানমন্ত্রীর (PM Narendra Modi Coochbehar Rally) মুখে বিরোধীদের নিয়ে তীক্ষ্ণ সমালোচনা শুনতে। কিন্তু একী! বক্তৃতার গোড়াতেই রাজ্য সরকারকে 'ধন্যবাদ' কেন জানালেন তিনি? মোদির কথায়, '২০১৯ সালে কোচবিহারের এই রাসমেলার মাঠেই সভা করেছিলাম। মঞ্চ বেঁধে মাঠ ছোট করে দিয়েছিল। বলেছিলাম, দিদি আপনি ঠিক করেননি। মমতা তার জবাব পেয়ে গিয়েছিলেন। এবারের সভায় তেমন কোনও বাধা দেননি। মাঠও খোলা রেখেছেন। সে জন্য প্রশাসনকে ধন্যবাদ।'
কী কী বললেন?
উত্তরের এই জেলায় এদিন মুখ্যমন্ত্রীও নির্বাচনী জনসভা করেন। আবাস যোজনা থেকে ১০০ দিনের কাজে 'কেন্দ্রীয় বঞ্চনা' হোক বা এনআরসি-সিএএ-র বিরোধিতা, একাধিক ইস্যুতে বিজেপিকে তীক্ষ্ণ আক্রমণ শানাতে শোনা যায় তৃণমূলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে। বাংলাকে বঞ্চনার অভিযোগ যে তৃণমূলের প্রচারের অন্যতম অস্ত্র হতে চলেছে, সে কথা অবশ্য স্পষ্ট হয়ে গিয়েছে আগেই। সে দিক থেকে দেখলে, শুরু থেকেই প্রধানমন্ত্রী যে চাঁচাছোলা পাল্টা প্রচারের পথে হাঁটবেন, সে রকমই প্রত্যাশা করেছিল রাজনৈতিক মহল। কিন্তু বক্তৃতার গোড়ায় প্রথমেই বাংলায় সম্ভাষণ ও তার পর রাজ্য সরকারের কাছে 'কৃতজ্ঞতা' জ্ঞাপন করে 'এক ঢিলে দুই পাখি' মারার চেষ্টা করলেন তিনি, এমনই ব্যাখ্যা রাজনৈতিক মহলের।
বিজেপি সরকারের বিরুদ্ধে বাংলাকে বঞ্চনা করার যে অভিযোগ তৃণমূল সরকার ক্রমাগত এনে চলেছে, প্রধানমন্ত্রী সেই অভিযোগের ধার কিছুটা হলেও ভোঁতা করে দিতে এই পথে হাঁটলেন বলে ধারণা রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের। আর ২০১৯ সালের ভোটপ্রচারের অনুষঙ্গ টেনে এনে সুকৌশলে আরও একবার তৃণমূলকে মনে করিয়ে দিতে চাইলেন, এবারও এক ইঞ্চি জমি ছাড়া হবে না। একই সঙ্গে দুর্নীতি থেকে সন্ত্রাসদমন, নানা ইস্যুতে সরব হতে শোনা যায় তাঁকে।
আর যা...
প্রধানমন্ত্রী বলেন, 'দুর্নীতিবাজদের বিরুদ্ধে কড়া পদক্ষেপ নিয়েছি। সন্ত্রাসবাদ রুখতেও কড়া পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। কংগ্রেস শুধু গরিবি হঠাও-এর স্লোগান দিয়েছে। বিজেপি ১০ কোটি মানুষকে দারিদ্রমুক্ত করেছে। উদ্দেশ্য সঠিক হলে তবেই ফল পাওয়া যায়।' 'মোদি কি গ্যারান্টি'-র কথা বার বার শোনা যায় তাঁর মুখে। 'গত ১০ বছরে দেশে যা উন্নতি হয়েছ, তার তালিকা অনেক লম্বা। ১০ বছরের এই উন্নয়ন শুধু ট্রেলার, এখনও অনেক কিছু করা বাকি। পশ্চিমবঙ্গকে এগিয়ে নিয়ে যেতে হবে।' কোচবিহারের জনসভায় তাঁর আহ্বান, 'ভোট দেওয়ার সময় মাথায় রাখবেন এটা দেশের নির্বাচন।'