প্রদ্যোৎ সরকার, নদিয়া: ভোট পরবর্তী অশান্তির (Post Poll Violence) অভিযোগ ঘিরে তপ্ত হয়ে উঠল নদিয়ার (Nadia) কালীগঞ্জের দেবগ্রাম। কংগ্রেস প্রার্থীর আত্মীয়দের উপর হামলা ও বুলডোজার দিয়ে দোকান গুঁড়িয়ে দেওয়ার অভিযোগ উঠল তৃণমূলের (TMC) বিরুদ্ধে। যদিও তা অস্বীকার করেছে শাসক দল। 


কী অশান্তি? 
রীতিমতো বিহ্বল কংগ্রেস প্রার্থী চায়না বিবির আর্তি, 'আমার বাড়ি, পাশাপাশি লোকেদের বাঁচান। নাহলে আমরা বাঁচব না। আমরা মরে যাব।' অভিযোগ, বুলডোজার চালিয়ে গুঁড়িয়ে দেওয়া হয়েছে  দোকান। মারধর থেকে সংঘর্ষ, ভোট পরবর্তী অশান্তির অভিযোগ ঘিরে তপ্ত হয়ে ওঠে নদিয়ার কালীগঞ্জের দেবগ্রাম! কংগ্রেসের আরও অভিযোগ,  ভোটের দিন বুথ দখলে বাধা দেওয়ায় দলীয় কর্মীদের ওপর চড়াও হয় তৃণমূল নেতা ও পঞ্চায়েতের বিদায়ী প্রধান মহিউদ্দিন শেখ ও তাঁর অনুগামীরা। দু দলের সংঘর্ষে আহত হন তৃণমূল নেতা। শনিবার রাত থেকে পাল্টা কংগ্রেস প্রার্থী ও তাঁর আত্মীয়দের বাড়িতে দফায় দফায় হামলা চালায় মহিউদ্দিন শেখের অনুগামীরা, এমনই অভিযোগ। কংগ্রেস প্রার্থীর আত্মীয়দের বেশ কয়েকটি দোকান বুলডোজার দিয়ে গুঁড়িয়ে দেওয়া হয় বলেও দাবি!! ভাঙচুর চালিয়ে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয় আমের আড়তে। আহত কংগ্রেস কর্মীকে হাসপাতালে নিয়ে যেতে দেওয়া হয়নি বলেও অভিযোগ উঠেছে। দেবগ্রামের এক বাসিন্দা জানাচ্ছেন, পুলিশের সামনেই মারধর করা হয়েছে। কিন্তু কিছু করেনি তারা। সব অভিযোগ অস্বীকার করেছে তৃণমূল। নদিয়া দলের মুখপাত্র দেবাশিস রায় বলেন, 'সব মিথ্যা।' যোগীরাজ্যে অপরাধী বিক্ষোভকারীদের দমন করতে বুলডোজার দিয়ে সম্পত্তি গুঁড়িয়ে দেওয়ার ঘটনা একাধিকবার ঘটেছে। যা নিয়ে তীব্র সমালোচনার মুখে পড়েছে উত্তরপ্রদেশের বিজেপি সরকার। এবার বাংলার ভোটেও সেই বুলডোজার-রাজনীতির অভিযোগ উঠল শাসক দলের বিরুদ্ধে!


রক্তাক্ত নাকাশিপাড়া...
এদিকে নির্বাচনের পর পুনর্নির্বাচনের আগের দিনও রক্তপাত, এবার ঘটনা নদিয়ার নাকাশিপাড়ায়। প্রাথমিক ভাবে খবর, তৃণমূল-সিপিএম সংঘর্ষে গুলি চলেছে। জখম এক সিপিএম কর্মী। গুরুতর জখম অবস্থায় ভর্তি শক্তিনগর জেলা হাসপাতালে। প্রাথমিক ভাবে জানা গিয়েছে, নাকাশিপাড়ার এদিনের ঘটনায় জখম সিপিএম কর্মীর নাম সাজ্জাদ মণ্ডল। এবারের পঞ্চায়েত ভোটে ১৬ জনের প্রাণ গিয়েছে রাজ্যে। ব্যাপক অশান্তি, ছাপ্পা ভোট এবং ব্যালট বাক্স নষ্টের অভিযোগও এসেছে ভুরি ভুরি। এই প্রেক্ষিতে আগামীকাল সাতশোর কাছাকাছি বুথে পুনর্নির্বাচন হতে চলেছে বলে রাজ্য় নির্বাচন কমিশন বিজ্ঞপ্তি দিয়ে জানিয়েছে। কিন্তু তার আগের দিন রাতেও হিংসার ছবিটা বদলাল না। ফের সংঘর্ষ, ফের গুলি ও ফের রক্তপাত, গত মাসখানেক ধরে রক্তরাতের যে ধারা দেখে চলেছে বাংলা, তা জারি থাকল রবিবাসরীয় সন্ধ্যাতেও।


আরও পড়ুন:নির্দল প্রার্থীর বাড়ির সামনে বন্দুক হাতে দাপাদাপি, ব্যাপক বোমাবাজি সালারে