নয়াদিল্লি: বুথফেরত সমীক্ষা সামনে আসার ঢের আগেই ভবিষ্যদ্বাণী করেছিলেন তিনি। বিজেপি গতবারের চেয়েও ভাল ফল করবে বলে দাবি করেছিলেন। লোকসভা নির্বাচনের ফলাফল বিচারে যে ভুল হয়েছে, তা এবার স্বীকার করে নিলেন ভোটকুশলী প্রশান্ত কিশোর। জানালেন, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির জনপ্রিয়তায় যে ভাঁটা পড়েছে, তা মিলে গিয়েছে যদিও। কিন্তু সংখ্যার হিসেবে মেলাতে পারেননি তিনি। কেন এমন পরিণতি হল বিজেপি-র, তার কয়েকটি কারণও তুলে ধরেছেন PK. (Prashanta Kishor)


একটি সর্বভারতীয় সংবাদমাধ্যমকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে বিজেপি-র বিজেপি-র ম্যাজিক সংখ্যা না পেরনোর কিছু কারণ তুলে ধরেছেন প্রশান্ত, যেগুলি হল-


৪০০ পার স্লোগান: প্রশান্ত কিশোরের মতে, বিজেপি-তে ৪০০ আসন পারের স্লোগান যে বা যাঁর মাথা থেকেই বেরিয়ে থাক, বাস্তব সম্পর্কে ওয়াকিবহাল ছিলেন না তিনি। মূল্যবৃদ্ধি, বেকারত্ব নিয়ে মানুষের মধ্যে যে অসন্তোষ বেড়েছে, তার পরও কেন ৪০০ পার আসন দিয়ে বিজেপি-কে ক্ষমতায় ফিরিয়ে আনা উচিত মানুষের, সে ব্যাপারে কোনও যুক্তি ছিল না। (Lok Sabha Elections 2024 Result)


দম্ভ ও অহঙ্কার: প্রশান্ত জানিয়েছেন, বিজেপি হোক বা অন্য কোনও দল, মানুষ অহং, দম্ভ কখনও বরদাস্ত করেন না। বিজেপি-র নেতারা প্রকাশ্যে বলছিলেন যে ৪০০ আসন পেলে সংবিধান পাল্টে দেবেন তাঁরা। মানুষ সেই অহঙ্কার ভেঙে দিয়েছেন। 


আরও পড়ুন: Narendra Modi Cabinet Ministers : বাংলা থেকে কারা জায়গা পেতে পারেন মোদি মন্ত্রিসভায়? রইল সম্ভাব্য তালিকা


অতিরিক্ত মোদি নির্ভরশীলতা: প্রশান্তের কথায়, নরেন্দ্র মোদির উপর অতিরিক্ত নির্ভরশীলত যে বিজেপি-র ক্ষতি করবে, তা গোড়া থেকেই বলে আসছিলেন তিনি। সাংসদরা কাজ করেননি, অথচ ভাব ছিল এমন যে, মোদি তো আছেন! ৪০০ আসন হেসেখেলেই উঠে আসবে। স্থানীয় স্তরে বিজেপি-র কার্যকর্তাদের মধ্য়েই দলের সাংসদদের নিয়ে অসন্তোষ ছিল বলে দাবি প্রশান্তর।


অতিরিক্ত আত্মবিশ্বাস: বারাণসীর উদাহরণ দিয়ে প্রশান্ত জানান, সেখানে মোদির প্রতি সমর্থন উল্লেখযোগ্য ভাবে কমেছে। তাঁর মতে, বিজেপি-র নেতাদের আত্মবিশ্বাস এতই বেড়ে গিয়েছিল যে, ভেবেছিলেন ৪০০ আসন তো এমনিতেই আসছে, আর খেটে কী লাভ! এর ফল উল্টো হয়েছে। তাঁদের কাছে কোনও উদ্দেশ্য ছিল না। কিন্তু মোদির বিরোধী যাঁরা, তাঁরা বিজেপি-কে হারানোর লক্ষ্য নিয়ে ঝাঁপিয়ে পড়েছিলেন। 


তবে লোকসভায় ৩০০ আসন ছুঁতে না পারলেও, কেন্দ্রে জোট সরকার গড়তে হলেও, প্রশান্তের মতে, জাতীয় রাজনীতিতে এখনও বিজেপি বৃহত্তম দল। মহারাষ্ট্র, রাজস্থান এবং ঝাড়খণ্ড, এই তিন রাজ্যের বিধানসভা নির্বাচনের ফলাফলই জোট সরকারের গতিপথ নির্ধারণ করে দেবে বলে মত তাঁর। প্রশান্তের মতে, বিজেপি, কংগ্রেস এবং অন্য দলগুলির কেউই এখন ঝুঁকি নিতে চাইবে না। সকলেই সাবধানী পদক্ষেপ করবে। কারণ এই তিন বিধানসভা নির্বাচনের ফলাফলের উপর অনেক কিছু নির্ভর করছে। প্রশান্ত জানিয়েছেন, মোদি সুদক্ষ রাজনীতিক, জোট সরকারের ক্ষেত্রে শরিকদের সঙ্গে বোঝাপড়া যে অত্যন্ত জরুরি, তা জানেন তিনি। তাই তিনিও আগের থেকে অনেক বেশি সাবধানী।