কলকাতা: টেট দুর্নীতি মামলায় নয়া মোড়। নিয়োগ-দুর্নীতি মামলায় (TET Corruption Case), সভাপতির পদ থেকে মানিক ভট্টাচার্যকে (Manik Bhattacharya) অপসারণ নিয়ে সিঙ্গল বেঞ্চের নির্দেশকে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে ডিভিশন বেঞ্চের দ্বারস্থ হল প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদ (Primary Education Board)। এই নির্দেশের ফলে পর্ষদের প্রশাসনিক কাজে অসুবিধা হবে, এই যুক্তিকে ডিভিশন বেঞ্চে আবেদন জানানো হয়েছে। মামলা দায়েরের অনুমতি দিয়েছে বিচারপতি সুব্রত তালুকদারের ডিভিশন বেঞ্চ (Division Bench)। যদিও আজ শুনানি হবে না বলে জানিয়ে দেন বিচারপতি সুব্রত তালুকদার। 


মঙ্গলে মানিককে আদালতে সশরীরে হাজিরার নির্দেশ  বিচারপতির


অন্যদিকে, মঙ্গলবার দুপুর ২টোর মধ্যে প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদের সভাপতি মানিক ভট্টাচার্যকে আদালতে সশরীরে হাজিরার নির্দেশ দিয়েছেন বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়। গতকাল বিচারপতি বলেন, আদালতের সামনে যে নথি পেশ করা হয়নি বা যেগুলি পেশ করা হয়েছে, তা নিয়ে আদালতের সন্দেহ রয়েছে। এর সম্পূর্ণ দায় সভাপতি মানিক ভট্টাচার্যর। প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদের সভাপতি ও সচিব আদালতকে বিপথে চালিত করার চেষ্টা করেছেন বলে মন্তব্য করেন বিচারপতি। এই প্রেক্ষিতেই আজ ফের প্রাথমিক-নিয়োগ মামলার শুনানি।


 সিবিআইয়ের মুখোমুখি হন মানিক ভট্টাচার্য


গত সোমবার ২০১৪ এর প্রাথমিক টেট দুর্নীতির অভিযোগ সংক্রান্ত মামলায়, হাইকোর্টের নির্দেশে সিবিআইয়ের মুখোমুখি হন মানিক ভট্টাচার্য। প্রায় সাড়ে তিন ঘণ্টা তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদ করেন গোয়েন্দারা। প্রসঙ্গত,নিয়োগ দুর্নীতি নিয়ে ইতিমধ্যেই অনেক দূর জল গড়িয়েছে। এসএসসি নিয়োগ দুর্নীতিতে রাজ্যের শাসকদলের হেভিওয়েট নেতা -মন্ত্রীদের নাম জড়িয়েছে। সেই লিস্টিতে নাম জড়িয়ে ইতিমধ্যেই সিবিআই দফতরে হাজিরা দিয়েছেন প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় থেকে শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী পরেশ অধিকারী। 


জমা করা তালিকায় গোলমাল ? 


উত্তরপত্রের পরিবর্তে ২ হাজার ৭৮৭জনের রোল নম্বর আদালতে পেশ করে প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদ। যদিও, গত শুক্রবার আদালত নির্দেশ দেয় যে, ২ হাজার ৭৮৭ জন প্রার্থী উত্তরপত্রের পুনর্মূল্যায়নের জন্য আবেদন করেছিলেন, তাঁদের প্রত্যেকের আবেদনপত্র আদালতে পেশ করতে হবে। এরপরই পর্ষদের তরফে আদালতে জানানো হয়, যে ২৭৩ জন প্রার্থীর ১ নম্বর বাড়ানো হয়েছিল, তার মধ্যে ২৬৫ জন নিযুক্ত হয়েছেন। ২৬৫ জনের তালিকার একটি প্রিন্টআউট আদালতে পেশ করে পর্ষদ। 


'প্রশ্নের ঠিক ভুল বিচার করার কোনও অধিকার এই কমিটিকে দেওয়া হয়নি'- বিচারপতি


পর্ষদের আইনজীবীর উদ্দেশ্যে বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় বলেন,এটা প্রকাশিত দ্বিতীয় প্যানেলের আসল কপি নয়। সব বোর্ড মেম্বারদের স্বাক্ষর কোথায়? প্রশ্ন তোলেন বিচারপতি। তিনি বলেন, আমি আসল কপি নিয়ে আসার নির্দেশ দিয়েছিলাম। এরপর পর্ষদের তরফে, নম্বর পুনর্মূল্যায়নের বিষয়টি খতিয়ে দেখার জন্য যে বিশেষ কমিটি গঠন করা হয়েছিল, তার সদস্যদের নামের তালিকা এবং কমিটি গঠনের তারিখ রিপোর্ট আকারে পেশ করে পর্ষদ। পাশাপাশি, নম্বর পুনর্মূল্যায়ন সংক্রান্ত বিশেষ কমিটির রিপোর্টও পেশ করা হয়। তখন পর্ষদকে উদ্দেশ্য করে বিচারপতি বলেন, এই বিশেষ কমিশন আসলে কোনও বিশেষ কমিটিই নয়। প্রশ্নের ঠিক ভুল বিচার করার কোনও অধিকার এই কমিটিকে দেওয়া হয়নি। এরপর, নম্বর বাড়ানোর বিষয়ে পর্ষদের সিদ্ধান্ত আদালতে পেশ করেন পর্ষদের আইনজীবীরা।