নয়াদিল্লি: লোকসভা নির্বাচনে বাকি আর মাত্র দু'সপ্তাহ। এখনও পর্যন্ত সম্পূর্ণ প্রার্থিতালিকা ঘোষণা হয়নি। সেই আবহেই কংগ্রেসের হয়ে অমেঠী থেকে নির্বাচনী লড়াইয়ে নামার ইঙ্গিত দিলেন গাঁধী পরিবারের জামাতা, প্রিয়ঙ্কা গাঁধী বঢরার স্বামী রবার্ট বঢরা (Robert Vadra)। তাঁর দাবি, স্মৃতি ইরানিকে (Smriti Irani) ভোট দিয়ে ভুল করেছেন বলে বুঝতে পারছেন অমেঠীবাসী। বহু বছর ধরে অমেঠীর সেবা করেছে গাঁধী পরিবার। গাঁধী পরিবারকে আবারও ফেরত চাইছেন অমেঠীবাসী। রাজনীতিতে নামলে অমেঠী থেকেই যাত্রা শুরু করবেন তিনি। (Lok Sabha Elections 2024)


সঞ্জয় গাঁধী, রাজীব গাঁধী, সনিয়া গাঁধী এবং রাহুল গাঁধী, চারটি বছর বাদ দিলে ২০১৯ সালের আগে পর্যন্ত উত্তর প্রদেশের অমেঠী গাঁধী পরিবারের কেন্দ্র হিসেবে পরিচিত। ২০১৯ সালে সেখানে রাহুলকে পরাজিত করেন স্মৃতি। অমেঠীতে বিজেপি-র বাড়বাড়ন্ত আঁচ করে সেবার কেরলের ওয়েনাডকে বেছে নিয়েছিলেন রাহুল। এবার রাহুল আবারও অমেঠীতে নামতে পারেন বলে জল্পনা ছিল। এমনকি প্রিয়ঙ্কার প্রার্থী হওয়া নিয়েও কথা শোনা যাচ্ছিল। 


I.N.D.I.A জোটের শরিক সমাজবাদী পার্টি যে কারণে অমেঠী কেন্দ্রটি কংগ্রেসকেই ছেড়ে দেয়। কিন্ত এখনও পর্যন্ত সেখানে প্রার্থী ঘোষণা করেনি কংগ্রেস। বিজেপি যদিও আবারও স্মৃতিকেই প্রার্থী করেছে সেখানে। সেই আবহে রবার্ট নিজেই অমেঠী থেকে নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার জল্পনা উস্কে দিলেন। জানালেন, অমেঠী থেকেই নির্বাচনী রাজনীতিতে পা রাখতে আগ্রহী তিনি। 



সংবাদ সংস্থা এএনআই-কে দেওয়া সাক্ষাৎকারে এ নিয়ে মুখ খোলেন রবার্ট। তিনি বলেন, "অমেঠী, রায়বরেলী থেকে যিনিই প্রতিনিধিত্ব করুন, তিনি সেখানকার মানুষের উন্ননয়ন, মঙ্গল, নিরাপত্তা নিয়ে কথা বলবেন, এটাই কাম্য। ভেদাভেদের রাজনীতি না করা উচিত। কিন্তু বর্তমানে যিনি ওখানকার সাংসদ, তাঁকে নিয়ে অসন্তুষ্ট অমেঠীবাসী। জিতিয়ে ভুল করেছেন বলে বুঝতে পারছেন। ওখানে যান না উনি, উন্নয়নের কথা ভাবছেন না, শুধু গাঁধী পরিবারের বিরুদ্ধে ভিত্তিহীন অভিযোগ আনছেন, হাঙ্গামা করছেন, ক্ষমতার অপব্যবহার করছেন।"


আরও পড়ুন: Kangana on Rahul: ‘ভালবাসলেও বিয়ে করতে পারেননি, এগোয়নি কেরিয়ারও, সব মায়ের জন্য’, কঙ্গনার নিশানায় রাহুল-সনিয়া


রবার্টের কথায়, "অমেঠী, রায়বরেলী, সুলতানপুর, জগদীশপুরে বছরের পর বছর পরিশ্রম করেছে কংগ্রেস। অমেঠীর মানুষের এখন মনে হচ্ছি স্মৃতিজিকে জিতিয়ে ভুল হয়েছে। রাহুলকে অন্য আসন বেছে নিতে হয়েছে। এখন গাঁধী পরিবারের কেউই ফেরত আসুন বলে চাইছেন ওঁরা। বিপুল জনসমর্থনে জেতাবেন। আমার কাছেও এমন প্রত্যাশা রয়েছে ওঁদের। রাজনীতিতে যদি নামি আমি, সাংসদ হওয়ার কথা যদি বাবি, তাহলে যেন অমেঠীকেই বেছে নিই বলে চাইছেন। কারণ ১৯৯৯ সালে আমি অমেঠী থেকেই প্রিয়ঙ্কার সঙ্গে প্রচার শুরু করি। রাতবর স্পর্শকাতর এলাকায় থাকতাম, আশ্বাস জোগাতাম, সাহায্য পাঠাতাম। আজও ওঁরা আমার বাড়ি, দফতরের বাইরে আসেন। মেসেজ পাঠান। জন্মদিনে কেকও কাটেন।"


রাজনীতিতে আসার জল্পনা আগেও উস্কে দিয়েছেন রবার্ট। ২০২২ সালের এপ্রিল মাসে তিনি বলেছিলেন, "মানুষ যদি চান আমি ওঁদের হয়ে প্রতিনিধিত্ব করি, আমি যদি সত্যিই পরিবর্তন আনতে পারি, অবশ্যই এগোতে পারি।" বাড়িতে এ নিয়ে কথাও হয় বলে জানান রবার্ট। তবে আর্থিক তছরুপ মামলায় রবার্টের বিরুদ্ধে বেশ কয়েক বছর ধরে তদন্ত চালাচ্ছে এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট। তাই ক্লিনচিট না হওয়া পর্যন্ত এগোতে পারছেন না বলে জানিয়েছিলেন রবার্ট।


কিন্তু রাজনীতিতে যে আসতে আগ্রহী তিনি, তা লুকোননি রবার্ট। জানিয়েছিলেন, গাঁধী পরিবারের দৌলতে নয়, রাজনীতিতে নিজের পরিচয় গড়ে তুলতে চান তিনি। আসন্ন লোকসভা নির্বাচনের আগে আবারও রাজনীতিতে পা রাখার জল্পনা উস্কে দিলেন রবার্ট, তা-ও আবার অমেঠী থেকে। যদিও এখনও অমেঠীতে প্রার্থী ঘোষণা করেনি কংগ্রেস। রায়বরেলীও খালি রয়েছে। সনিয়া গাঁধী রাজ্যসভায় সরে যাওয়ার পর সেখানে কে প্রার্থী হবেন, তা নিয়েও জল্পনা চলছে।