হিন্দোল দে, ভাঙড় : রাজনৈতিক মহলের একাংশ আগেই বলেছে, যেখানে যেখানে তৃণমূল জমি হারাতে পারে বলে আশঙ্কা রয়েছে, সেখানে সেখানে হিংসার ঘটনা বেশি দেখা গেছে। ঠিক যেমনটা দেখা গেছে- ভাঙড়ে (Bhangar)। এই তত্ত্ব কতটা ঠিক তা নয় পঞ্চায়েত ভোটের ( Panchayat Vote ) ফল বেরনোর পর বোঝা যাবে। কিন্তু, ভোটের নির্ঘণ্ট ঘোষণার পর থেকে যে অশান্তির ছবি বারবার দেখা গেছে ভাঙড়ে, ভোটের আগের দিনও সেই চেনা ছবিই ধরা পড়ল এলাকায়। এবার ভাঙড়ের ভগবানপুরে সিপিএম প্রার্থীর বাড়িতে হামলার অভিযোগ উঠল। শুধু ভগবানপুরই নয়, ভাঙড়ের বিভিন্ন জায়গায় বিরোধী প্রার্থীদের বাড়িতে হামলার অভিযোগ উঠেছে। ঘটনায় তৃণমূলকে কঠাগড়ায় তোলা হলেও, অভিযোগ অস্বীকার করেছে শাসক দল। এই পরিস্থিতিতে বিরোধীদের অভিযোগ, শাসকদলের হয়ে কাজ করছে পুলিশ।


দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলা পরিষদের বাম প্রার্থী মানসী ঘোষ বলেন, "গতকাল রাতে তৃণমূল বাহিনী তাণ্ডব চালিয়েছে। ৪৪ নম্বর বুথ এবং ভগবানপুরের সাতুলিয়া গ্রামে বাইক ভাঙচুর, গাড়ি ভাঙচুর, মানুষের বাড়িঘর ভাঙচুর, মারধর-সর্বত্র করছে। আমাদের থানা এবং কলকাতা পুলিশ তাদের কাছে আমরা আগেও ডেপুটেশন দিয়েছি। এলাকার মানুষকে যাতে ভয়মুক্ত করা যায় তার জন্য এরিয়া ডমিনেশনের দাবি জানিয়েছি। কিন্তু, কোনও রকম উদ্যোগ তারা নেয়নি। ভাঙড় কাশীপুর এবং ভাঙড় থানা যা করছে, কলকাতা পুলিশও তা করছে। কাল থেকে হাজার বার ফোন করেছি। আজ সকালেও ফোন করেছি। পুলিশ ফোন তুলছে না। তৃণমূল এবং পুলিশ যৌথভাবে সাধারণ মানুষের ওপর আক্রমণ শানাচ্ছে। যাতে মানুষ ভোট দিতে না পারে সেই অবস্থা করছে।"  


মুড়ি মুড়কির মতো বোমাবাজি, লেঠেল বাহিনীর দাপট। দফায় দফায় তৃণমূল ও ISF সংঘর্ষ! চলেছে গুলি। মনোনয়ন পর্বে একদিনে প্রাণ গেছে ২ তৃণমূল কর্মী ও ১ ISF কর্মীর ! হানাহানি থেকে খুনোখুনি। পঞ্চায়েতের দিন ঘোষণার পর থেকে কিছুই বাদ যায়নি ভয়ঙ্কর ভাঙড়ে! ভোটের দোরগোড়ায় এসে গতকাল ভাঙড়ে মেলে বোমা! ৯টি তাজা বোমা সমেত ৩ ISF কর্মীকে গ্রেফতার করে কাশীপুর থানার পুলিশ। যদিও মিথ্যা মামলায় ফাঁসানোর অভিযোগ তুলে কাশীপুর থানার সামনে বিক্ষোভ দেখান আইএসএফ নেতা-কর্মীরা। এই আবহে আগামীকাল ভাঙড়ে ভোট শান্তিপূর্ণ হয়, নাকি ফের অশান্তির চেনা ছবি ধরা পড়ে, সেটাই এখন দেখার।