করুণাময় সিংহ, মালদা:  প্রতিটি ভোটে অংশ নেন ওঁরা। কিন্তু প্রার্থীদের কখনও চোখে দেখেননি। কখনও নিজেদের সুবিধা-অসুবিধার কথাও বলতে পারেননি। এদিন, কাঁটাতারের ওপারে, সেই ভারতীয় ভোটারদের কাছে গিয়ে প্রচার করলেন মালদা দক্ষিণ (Malda Dakshin Lok Sabha Constituency) লোকসভা কেন্দ্রের বিজেপি প্রার্থী শ্রীরূপা মিত্র চৌধুরী (BJP Candidate Sreerupa Mitra Chaudhury) ।


শ্রীরূপার অভিযোগ...
বিজেপি প্রার্থীর অভিযোগ, সেখানকার একাধিক বাসিন্দার এমন জীবনের জন্য দায়ী স্থানীয় কংগ্রেস সাংসদ। দীর্ঘ কয়েক দশক ধরে একই পরিবারের সদস্যরা ওই এলাকার সাংসদ। তাঁরা ভোটে জেতার পর আর এলাকার খবর রাখেন না, অভিযোগ শ্রীরূপার। তাই আজকের দিনে এমন করুণ পরিস্থিতে থাকতে হয় বসবাসকারীদের। স্বাস্থ্যকেন্দ্র নেই, নেই স্কুলও। রুজি রোজগারের তাগিদে পেরিয়ে আসতে হয় কাঁটাতার। কালিয়াচক থানার অন্তর্গত ভারত-বাংলাদেশ সীমান্ত লাগোয়া বিস্তীর্ণ এলাকা কাঁটা তারে ঘেরা। কাঁটাতারের ওপারে থাকা ভারত ভূমিতে যে কয়েকশো ভোটার রয়েছেন, তাঁদের এহেন করুণ হালের জন্য তৃণমূল কংগ্রেসকেও একই ভাবে কাঠগড়ায় তুললেন বিজেপি প্রার্থী। অভিযোগ, এলাকার সাংসদ ও রাজ্যের  মুখ্যমন্ত্রী বিষয়টি নিয়ে সরব হয়ে সমস্যা সমাধান করতে পারতেন। কিন্তু তাঁরা নীরবেই থেকেছেন। এলাকায় একটি আইসিডিএস সেন্টার নেই। ন্যূনতম কোনও পরিষেবাই মেলে না। প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনার মাধ্যমে মাথার ছাদ হয়নি। প্রধানমন্ত্রী জল জীবন মিশনের মাধ্যমে পানীয় জলের ব্যবস্থা করা যেত। কিন্তু তাও হয়নি।ফলে স্বাধীন ভারতের নাগরিক হয়েও সেখানকার বাসিন্দারা পরাধীন ভাবে রয়েছেন, বলছেন মালদা দক্ষিণের বিজেপি প্রার্থী।

ছবিটা...
  মালদা দক্ষিণ লোকসভা কেন্দ্রে বিস্তীর্ণ এলাকা জুড়ে রয়েছে ভারত-বাংলাদেশ সীমান্তের কাঁটাতার। আর কাঁটাতারের ওপারে বেশ কয়েকটি গ্রামের বাসিন্দারা যেন আজও নিজভূমে পরবাসী হয়ে রয়েছেন, অভিযোগ বিজেপির। কার্যত বন্দী জীবনযাপন করছেন সীমান্তের কাঁটাতারের ওপারে ৩০০টি পরিবার। সীমান্তরক্ষী বাহিনীর নিয়মমত খোলা হয় সীমান্তের দরজা। আর বন্ধও হয় সীমান্ত রক্ষী বাহিনীর নিয়মে। দিনের কয়েকঘন্টার মধ্যে এই এলাকার বসবাসকারীদের নিত্যদিনের প্রয়োজনীয় সামগ্রী-সহ রুজি রোজগারের ব্যবস্থা করতে হয়। সেই সময়ে বাড়িতে খাওয়ার জলটুকুও নিতে হয়। সবটার জন্য স্থানীয় কংগ্রেস সাংসদ ও রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীর দিকে আঙুল তুললেন বিজেপি প্রার্থী। পাল্টা  জেলা কংগ্রেসের সহ সভাপতি অর্জুন হালদার বলেন, 'যিনি অভিযোগ করছেন, তাঁর আগে নিজের মুখ আয়নায় দেখা উচিত। তিনি তো ইংরেজবাজারের বিধায়ক। তিন বছর পার হয়ে গিয়েছে। এই তিন বছরে তিনি কী কাজ করেছেন, সেই প্রশ্ন সবার আগে তোলা উচিত।' আর রাজ্য তৃণমূল কংগ্রেসের সহ-সভাপতি কৃষ্ণেন্দু নারায়ণ চৌধুরীর মতে, '... উনি কী করেছেন? উনি তো বিধায়ক... শহরও তো তাঁর অধীনে। কী করেছেন শহরে? গ্রামে কী করেছেন? আমরাও তো বিরোধী দলে ছিলাম। সেই সময় সিপিএম ক্ষমতায় ছিল। তাদের সঙ্গে আলোচনা করে, আবদার করে কাজ করাতাম। উনি কী করেছেন?'
ভোটের মুখে অভিযোগ-পাল্টা অভিযোগ উঠছে। মূল প্রশ্নের উত্তর এখনও অধরা। কবে বদলাবে এই মর্মান্তিক অবস্থা?


আরও পড়ুন:'বেশি লিড দিলে আবাস যোজনার টাকা', ফের পুরস্কারের 'টোপ' দিলেন পার্থ ভৌমিক