কলকাতা: দফায় দফায় দিল্লি থেকে সভা করেছেন নরেন্দ্র মোদি। যথেচ্ছ কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েন ছিল ভোটপর্বে। তার পরও লোকসভা নির্বাচনে বাংলায় আশানুরূপ ফল করতে পারেনি বিজেপি। যদিও বাংলাকে এখনও যে গুরুত্ব দিয়েই দেখছেন বিজেপি-র কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব, আবারও তার প্রমাণ মিলল। রবিবার তৃতীয় বার প্রধানমন্ত্রী হিসেবে শপথ নিতে চলেছেন নরেন্দ্র মোদি, তার আগে দিল্লিতে তাঁর বাসভবনের চা-চক্রে যোগ দিলেন রাজ্য বিজেপি-র সভাপতি সুকান্ত মজুমদার (Sukanta Majumdar) এবং শান্তনু ঠাকুর (Shantanu Thakur)। মোদির তৃতীয় মন্ত্রিসভায় সুকান্ত এবং শান্তনু, দু'জনই ঠাঁই পেতে চলেছেন বলে খবর। (Modi Cabinet 2024)


রবিবার সন্ধে সওয়া ৭টা নাগাদ প্রধানমন্ত্রী হিসেবে শপথ নেবেন মোদি। তাঁর সঙ্গে এদিন শপথ নিতে পারেন আরও ৩০ জন মন্ত্রীও। বাকিরা অন্য দিন শপথ নেবেন বলে খবর। তবে এখনও পর্যন্ত যা খবর, সেই অনুযায়ী, মোদির মন্ত্রিসভায় এবার বঙ্গ বিজেপি থেকে দু'জন জায়গা পাচ্ছেন। বালুরঘাট থেকে সম্প্রতি জয়লাভ করা সুকান্ত এবং বনগাঁর বিজয়ী সাংসদ শান্তনু কেন্দ্রের মন্ত্রী হচ্ছেন। 


এর আগে, কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্র.ক এবং জাহাজ মন্ত্রকের প্রতিমন্ত্রী ছিলেন শান্তনু। এবার তাঁকে কোন মন্ত্রকে পাঠানো হবে, এখনও তা পরিষ্কার হয়নি। সুকান্ত কোন মন্ত্রকে ঠাঁই পাচ্ছেন তাও জানা যায়নি।  তবে দু'জনকেই প্রতিমন্ত্রী করা হতে পারে বলে খবর। এর আগে, দিলীপ ঘোষ যখন রাজ্য বিজেপি-র সভাপতি ছিলেন, তাঁকেও কেন্দ্রে মন্ত্রী হওয়ার প্রস্তাব দেওয়া হয়। কিন্তু মন্ত্রী হতে রাজি হননি দিলীপ। তিনি সংগঠনের কাজ করতে চান, রাজ্যে সংগঠনের কাজ করতে চান বলে জানিয়েছিলেন। কিন্তু সুকান্ত মন্ত্রিত্বে রাজি হয়েছেন। আজই শপথ নিতে পারেন তিনি। সেক্ষেত্রে রাজ্য বিজেপি-তে নয়া সভাপতি নিয়োগ করা হতে পারে।


আরও পড়ুন: Modi Cabinet 2024: আগের সকলকে কি ধরে রাখতে পারবেন মোদি-শাহ? বিজেপি ও শরিকদের মধ্যে মন্ত্রী হওয়ার দৌড়ে এগিয়ে যাঁরা


বালুরঘাট থেকে তৃতীয় বারের সাংসদ সুকান্ত। খুব কম ব্যবধানে জয়ী হলেও, মুখরক্ষা হয়েছে বিজেপি-র। দিলীপের পর রাজ্য বিজেপি-র সভাপতি হন তিনি। তবে সুকান্তর আমলে রাজ্য রাজনীতিতে বিজেপি-র সাফল্য নিয়ে বার বার প্রশ্ন উঠেছে। নির্বাচনের ঠিক আগে দিলীপের কেন্দ্র বদল নিয়েও প্রশ্নের মুখে পড়তে হয় সুকান্তকে। যদিও কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের কোর্টেই বল ঠেলেন তিনি। এবার কেন্দ্রে মন্ত্রী হিসেবে দেখা যাবে তাঁকে, যা যথেষ্ট গুরুত্বপূর্ণ বলেই মনে করা হচ্ছে। কারণ বিভিন্ন প্রকল্পে রাজ্যের বকেয়া টাকা নিয়ে বার বার হুঁশিয়ারি দিতে শোনা গিয়েছে সুকান্তকে। তিনি চাইলে এক ফোন করে টাকা আটকে দিতে পারেন বলেও মন্তব্য করতে শোনা গিয়েছে তাঁকে। তাই সুকান্ত কেন্দ্রে মন্ত্রী হলে, রাজ্য সরকারের সঙ্গে তাঁর সমীকরণ কী হয়, সেদিকেও তাকিয়ে সকলে।


শান্তনুকে আবারও মন্ত্রী করার সিদ্ধান্তও যথেষ্ট গুরুত্বপূর্ণ। কারণ বঙ্গ রাজনীতিতে বরাবরই মতুয়া ভোটকে গুরুত্ব দিয়ে এসেছেন বিজেপি-র কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব। নির্বাচনের আগে সংশোধিত নাগরিকত্ব আইন কার্যকর করার সিদ্ধান্তের নেপথ্যেও  মতুয়া ভোটের সমীকরণ কাজ করেছে বলে মত রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের। তাই ঠাকুরবাড়ির সদস্য শান্তনু আবারও কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভায় ঠাঁই পাচ্ছেন বলে মত তাঁদের।