সৌমেন চক্রবর্তী, পশ্চিম মেদিনীপুর: পঞ্চায়েতের (Panchayat Election 2023) প্রচারের মাঝেই শালবনিতে শিলাদিত্য চৌধুরীর (Shiladitya Chowdhury) সঙ্গে দেখা শুভেন্দু অধিকারীর (Suvendu Adhikari)। জেলা পরিষদে বিজেপির প্রার্থীদের নিয়ে ভীমপুর থেকে রোড শো করছিলেন বিরোধী দলনেতা। সেই সময় হঠাৎ একটি বাসে কনডাক্টরের কাজ করছিলেন শিলাদিত্য চৌধুরী। দেখতে পেয়ে দুজনই এগিয়ে আসেন। কথা বলেন কিছুক্ষণ। অনেকেরই মনে পড়েছে, ২০১২ সালের ৮ অগাস্ট বেলপাহাড়িতে মুখ্যমন্ত্রীর সভায় সারের দাম নিয়ে প্রশ্ন করার পর শিলাদিত্য চৌধুরীকে মাওবাদী তকমা দেওয়া হয়। ঘটনার দিন কিন্তু শিলাদিত্যকে গ্রেফতার করেনি পুলিশ৷ দু’দিন পর বাড়ি থেকে গ্রেফতার করা হয়৷ খাটতে হয় জেলও। আজ সেই প্রসঙ্গ টেনে শুভেন্দু অধিকারীর দাবি, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের পতন দেখতে চান শিলাদিত্য চৌধুরী। 


কী ঘটল?
বেলা তখন ১২টা। পশ্চিম মেদিনীপুরের শালবনির ভীমপুর থেকে পিরাকাটার দিকে রোড করছিলেন শুভেন্দু। তখন বাস কন্ডাক্টর হিসেবে কর্মরত শিলাদিত্য চৌধুরীর সঙ্গে দেখা হয় নন্দীগ্রামের বিধায়ক ও বিরোধী দলনেতা শুভেন্দুর। এদিনের ঘটনার সূত্র ধরে ২০১২ সালের অগাস্টের স্মৃতি মনে পড়েছে অনেকেরই। সে বার বেলপাহাড়িতে মুখ্যমন্ত্রীর সভায় সারের দাম নিয়ে প্রশ্ন করায় শিলাদিত্য চৌধুরীকে মাওবাদী তকমা দেওয়া হয়। এখনও সেই মামলার বিচার শেষ হয়নি। এর মধ্যে পঞ্চায়েত ভোটের প্রচারে বেরিয়ে শিলাদিত্যর সঙ্গে শুভেন্দুর মোলাকাত পুরো বিষয়টিতে নতুন রাজনৈতিক  মাত্রা যোগ করেছে। বাসের ভিতর থেকেই হাত বাড়িয়ে শুভেন্দুকে কিছু বলতে যান শিলাদিত্য়। হাত ধরে তাঁকে শুভেচ্ছা জানান বিরোধী দলনেতাও। পরে বলেন, 'ও মাওবাদী নয়, রাষ্ট্রবাদী।' এর পর বিরোধী দলনেতাকে প্রশ্ন করা হয়েছিল, তাঁকে ঠিক কী বললেন শিলাদিত্য। জবাবে শুভেন্দু জানান, শিলাদিত্য দাবি করেছেন উনি মাওবাদী নন, রাষ্ট্রবাদী। তবে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ওঁকে জেল খাটিয়েছেন। শিলাদিত্য় ওঁর পতন দেখতে চান। 


ফিরে দেখা...
১১ বছর আগে মামলার কারণেই, অম্বিকেশ মহাপাত্রর পাশাপাশি শিলাদিত্য চৌধুরীর নামও চর্চায় উঠে এসেছিল। পেশায় ঝাড়গ্রামের কৃষক শিলাদিত্য় সারের দাম নিয়ে প্রশ্ন করায় কপালে জুটেছিল মাওবাদী তকমা। আজও মামলার বোঝা বয়ে বেড়াতে হচ্ছে তাঁকে। শুধু কি মামলার বোঝা! সঙ্গে হাজতবাসের অপমান এবং আতঙ্ক। জীবনের সেই অধ্যায় নিয়ে কথা বলতে গেলে শিউড়ে ওঠেন শিলাদিত্য। বলেন, "দিদিকে প্রশ্ন করেছিলাম, ধানের দাম কম কেন, সারের দাম বেশি কেন! দিদি আমাকে মাওবাদী তকমা দিয়ে গ্রেফতার করান। দু'দিন পর বিনপুরে লকআপে পুরে দেয়।" এখন সংসার চালাতে মাঝে মাঝে বাসের হেল্পারের ভূমিকাতেও দেখা যায় তাঁকে। তাতে কোনও মতে দিন চলে। আর সেই জীবনেই কাঁটা হয়ে বিঁধে রয়েছে মাওবাদী তকমার মামলা। এর মধ্যে হালে অম্বিকেশের নিষ্কৃতী পাওয়ার খবর জানতে পেরে কিছুটা স্বস্তি পান শিলাদিত্য। প্রতিক্রিয়া চাইলে বলেছিলেন, "অম্বিকেশ ক্লিনচিট পেয়েছেন শুনে ভাল লাগল। আমাকেও মিথ্যা মামলায় ফাঁসানো হয়েছে। আশাকরি আমিও পাব। আমি প্রশ্ন করেছিলাম। বিচার চসছে। আমিও তো কোনও দোষ করিনি!" 


আরও পড়ুন:লক্ষ্মীলাভ করতেও ভরসা উপকারী লবঙ্গ! লাভ পাবেন চাষিরা