কলকাতা: সর্দি বা ঠান্ডা লাগলে, গলায় ব্যথা হলে, দাঁতে ব্যথা হলে- নানা সময়ে টোটকা হিসেবে ব্যবহার হয়ে থাকে লবঙ্গ বা লবঙ্গ তেলের। ভারতের এই মশলার চাহিদা সারা বছরেই থাকে। নানা রান্নাতেও ব্য়বহার করা হয় লবঙ্গ। রয়েছে একাধিক ওষধি গুণ। দক্ষিণ ভারতের নানা জায়গায় চাষ করা হয় লবঙ্গ। এটি অত্যন্ত লাভজনক চাষ। সারা দেশে বিভিন্ন ক্ষেত্রে প্রচুর চাহিদা থাকায় এর বাজারও সবসময় ভাল। ভাল দাম পাওয়া যায়। পূর্ব ভারতেও অল্পস্বল্প লবঙ্গ চাষ করা হয়ে থাকে। কীভাবে চাষ করা যায় এটি?  


লবঙ্গ উষ্ণ জলবায়ুযুক্ত অঞ্চলে জন্মায়, এমন আবহাওয়াই লবঙ্গ তৈরির জন্য সবচেয়ে ভাল। উষ্ণ জলবায়ুতে এই গাছগুলি দ্রুত বৃদ্ধি পায়। মহারাষ্ট্রের কোঙ্কন অঞ্চলে বেশি জন্মায়। কেরলেও লবঙ্গের চাষ হয়। আপনি যদি লবঙ্গের চারা লাগাতে চান, তাহলে এর বীজ একদিন আগে জলে ভিজিয়ে রাখুন। পরে সাবধানে বীজের উপর থেকে খোসা ছাড়িয়ে নিয়ে সেই বীজ বপন করা হয়। জমিতে ১০ সেন্টিমিটার দূরে দূরে বপন করতে হবে লবঙ্গের বীজ। লবঙ্গের চাষের সময় জমিতে শুধুমাত্র জৈব সার ব্যবহার করলেই ভাল। তাতে লবঙ্গের গুণমান সবেচেয়ে ভাল থাকে। তবে এই চাষ করতে হলে বেশ কিছু বছর অপেক্ষা করতে হবে। গাছ বেড়ে ওঠার পরে ফল আসতে শুরু করবে। আঙ্গুরের মতো গুচ্ছ গুচ্ছ হয়ে জন্মায় আঙুর। এর রং লালচে-গোলাপি হয়। ফুল ফোটার আগেই গাছ থেকে নিয়ে নেওয়া হয় এটি। এক-একটি গাছ থেকে ২-৩ কেজি লবঙ্গ পাওয়া যায়। একজন যদি তাঁর জমিতে মোটামুটি ৫০টি গাছ লাগান, সেগুলো সবকটিই ঠিকমতো বেড়ে উঠলে, ওই চাষ থেকে দীর্ঘদিন ধরে ফল পেতে পারেন তিনি। 


লবঙ্গের উপকার:
শীতে লবঙ্গ খেলে ঠাণ্ডা-সর্দি এবং মাথাব্যথার মতো সমস্যা থেকে মুক্তি পাওয়া যায়। দাঁতের জন্য ভাল বলে টুথপেস্ট তৈরিতে লবঙ্গ ব্যবহার হয়। লবঙ্গ থেকে অনেক ধরনের আয়ুর্বেদিক ওষুধও তৈরি হয়। এ ছাড়া সৌন্দর্য সামগ্রী তৈরিতেও লবঙ্গ ব্যবহার হয়। ত্বকের জন্যও লবঙ্গ ভেজানো জল খুবই উপকারী। গরমে প্রায়ই রোদে ত্বক জ্বলে যায়, ট্যান পড়ে। ট্যান দূর করতে লবঙ্গের জল দারুণ উপকারী। অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট, ছত্রাকনাশক গুণে ভরপুর লবঙ্গ। যাঁরা ত্বকে নানারকম ব়্যাশের সমস্যায় ভোগেন, তাঁরা লবঙ্গের জল ব্যবহার করলে উপকার পাবেন।


আরও পড়ুন: কতবার দুধ ফোটান? পদ্ধতি কি ঠিক? পুষ্টিগুণ নষ্ট হচ্ছে না তো?